তরমুজসহ গ্রীষ্মের ফলগুলো বাজারে আসতে শুরু করেছে৷ এ সব ফলে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ৷ কিন্তু অনেকেরই অভিযোগ প্রশাসন বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলি থেকে কিছু প্রতিক্রিয়া৷
বিজ্ঞাপন
রানা সোহেল সামহয়্যার ইন ব্লগে লিখেছেন,‘‘রবিবার অনলাইনে দেখছিলাম ‘তরমুজ খেয়ে ২ শিশু নিহত, ২০ জন হাসপাতালে'৷ আজ কিন্তু কোনো সংবাদপত্রে খবরটা চোখে পড়লো না৷ গরিবের ছেলে-মেয়ে, তারা ভালো গান গায় না, ভালো ছবি তোলে না, ভালো লেখে না৷ আবার মারা গেছে কিনা তরমুজ খেয়ে! তরমুজে বিষাক্ত কিছু মেশানো, এটা নিয়ে লেখার কি আছে? এটাই তো স্বাভাবিক!''
তিনি লিখেছেন, ‘‘আমরা তো সারাদিনই বিষ মেশানো খাবার খাই৷ খাবারে ভেজাল নিয়ে লেখার কিছু নেই, গরিব মানুষ মারা গেলেও লেখার কিছু নেই৷ সব কিছু নিয়ে কথা বললে, আমাদের পরে থাকা মুখোশটা বড় নোংরা হয়ে যায়!''
খাবার গ্রহণে অ্যালার্জি
লোভনীয় সব খাবার দেখলে কারই বা খেতে ইচ্ছে না করে? তবে সেসব খাবার খেতে মন চাইলেও অনেকের শরীর তা গ্রহণ করে না বা সেসব খাবারে তাদের অ্যালার্জি হয়৷ এ নিয়েই আজকের ছবিঘর৷
ছবি: picture-alliance/dpa
খাওয়া কি শুধু জীবন ধারণের জন্য?
খাওয়া ছাড়া যেমন কোনোভাবেই মানুষের বেঁচে থাকা সম্ভব নয়, ঠিক তেমনি মানুষ যে শুধু বেঁচে থাকার জন্য খায় সেটাও নয়৷ জীবন ধারণ করা ছাড়াও নানারকম মজার মজার খাবার মানুষ উপভোগ করতে চায়৷ কিন্তু সেটা যে সবার পক্ষে সম্ভব নয়৷ কারণ অনেক মানুষেরই রয়েছে বিভিন্ন খাবারে অ্যালার্জি৷
ছবি: imago
বাদাম, ফল এবং ল্যাকটোজ
চকলেট, আপেল কিংবা দই, যাই হোক না কেন শতকরা ১৭ জন জার্মান এসব খাবার উপভোগ করতে পারে না৷ অর্থাৎ এসব খাবারের অন্তত একটিতে হলেও তাদের অ্যালার্জি আছে৷ এক সমীক্ষায় বেরিয়ে এসেছে এই তথ্য৷ জার্মানির স্বাস্থ্য বিমা কোম্পানি টেকনিকার জানিয়েছে, যাদের খাবারে অ্যালার্জি রয়েছে তাদের মধ্যে শতকরা ২০ জন বাদাম, ২৯ জন বিভিন্ন ফল এবং ২৫ জন ল্যাকটোজ সহ্য করতে পারে না৷
ছবি: Fotolia/ChristArt
শিক্ষিতদেরই বেশি অ্যালার্জি
একটি ব্যাপার লক্ষ্যণীয় যে, শিক্ষার হার যত বেশি, অ্যালার্জি রোগীর সংখ্যাও তত বেশি! না, অবাক হবেন না৷ কথাটার মানে হলো, শিক্ষিত ও সচেতন মানুষরাই ডাক্তারের কাছে যেয়ে বুঝিয়ে বলতে পারেন এবং এসব বিষয়ে পরীক্ষা করিয়ে জানতে পারেন তাদের অ্যালার্জি থাকার কথা, বলেন জার্মানির পুষ্টি বিশেষজ্ঞ নিকল বাটেনফেল্ড৷ কম শিক্ষিত মানুষ বিষয়টাকে তেমন গুরুত্ব দেয় না বা ডাক্তারের কাছে যায় না৷
ছবি: Fotolia/W. Heiber Fotostudio
অ্যালার্জি টেস্ট
কোন খাবারে কার কতটুকু অ্যালার্জি আছে সেসব পরীক্ষা করারও রয়েছে নানা নিয়মকানুন৷ কোন খাবারে কতটা অ্যালার্জি সেটার ওপর নির্ভর করে রোগীর শারীরিক সুস্থতা৷ অনেকের বেলায় দেখা যায় শারীরিকভাবে একজন মানুষ যতটা অসুস্থ, সে পছন্দের খাবার না খেতে পেয়ে মানসিকভাবে তার চেয়ে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
দুধের অ্যালার্জি
ফলমূল বা দুধে ছোটবড় অনেকেরই অ্যালার্জি দেখা দেয়৷ কেউ হয়ত শুধু দুধ খেতে পারে না, কিন্তু দুধে তৈরি বা রান্না করা খাবার ঠিকই খেতে পারে৷ নিকল বাটেনফেল্ড বলেন, যাদের অ্যালার্জি আছে তাদের অবশ্যই বুঝেশুনে স্বাস্থ্য সম্মত খাবার খাওয়া উচিত৷ তাছাড়া ল্যাকটোজ ফ্রি খাবারও পাওয়া যায়৷
ছবি: Colourbox/E. Atamanenko
ফল বা সবজি
ফল বা সবজির ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য, কারণ কেউ হয়তো কাঁচা ফল খেলে অসুস্থ বোধ করেন৷ কিন্তু একই ফল সেদ্ধ বা অন্য কিছুর সাথে মিশিয়ে খেলে হয়ত অসুবিধা হয় না৷
ছবি: picture alliance/chromorange
ডাক্তারের পরামর্শ
কারো অ্যালার্জি আছে কিনা সবসময়ই তা অ্যালার্জি টেস্টে ধরা পড়বে তেমন নয়, বিশেষ করে খাবারের ব্যাপারে৷ খাওয়ার পর অনেকের শরীরে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, আবার কারো বেলায় ওপর দিয়ে কিছুই বোঝা যায় না৷ আর সেটাই ভয়ের কারণ৷ তাই, যদি কেউ কিছু খাওয়ার পর ভালো বোধ না করে বা একেবারে সহ্য না হয় তাহলে তার সেটা না খাওয়াই উচিত৷ কারণ সেক্ষেত্রে ফলাফল ভয়াবহ হতে পারে৷ বিষয়টাকে মোটেই হালকাভবে নেওয়া ঠিক নয়৷
ছবি: Fotolia/ lassedesignen
তৈরি বা রেডিমেড খাবার
তৈরি খাবার বা ফাস্টফুড-এ ব্যবহার করা হয় প্রিজারভেটিভ বা সংরক্ষক, যা অনেকের শরীরেই সহ্য হয় না বা অ্যালার্জি হয়৷ ফাস্টফুড খেতে তরুণ প্রজন্ম খুবই আগ্রহী৷ তাই এদিকেও নজর দেওয়া উচিত৷ তৈরি খাবার শুধু ওজনই বাড়ায় না শরীরে অন্যান্য সমস্যাও দেখা দেয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
8 ছবি1 | 8
ফেসবুকে আশরাফ-উল-আলম লিখেছেন,‘‘ফর্মালিন, কার্বাইড, ইউরিয়া সার, হাইড্রোজসহ নানা ক্ষতিকর ও রাসায়নিক পদার্থ খাদ্যে ব্যবহার বন্ধ করা যাচ্ছে না৷ বছরের পর বছর ধরে খাদ্যে ভেজাল দেওয়াসহ বিষ মেশানো চলছে৷ এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর আসে৷ কালেভদ্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানও চলে৷ কিন্তু অপরাধীরা শেষ পর্যন্ত ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়৷''
এর কারণ হিসেবে আইন প্রয়োগে উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন তিনি৷ আশরাফ লিখেছেন, ‘‘খাদ্যে ভেজাল মেশানোর অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে দেশের প্রচলিত আইনেই৷ অথচ অজ্ঞাত কারণে ওই আইনটি প্রয়োগ করা হচ্ছে না৷ খাদ্যে ভেজালকারীদের আইনে নির্ধারিত সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার কোনো নজির এ দেশে নেই৷ অথচ উন্নত বিশ্বে বা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে খাদ্যে ভেজাল মেশানোর অপরাধে যথোপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হচ্ছে৷ ওই সব দেশে খাদ্যে ভেজাল মেশানোর হার কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে৷ খাদ্যে ভেজাল মেশানোর অপরাধের শাস্তি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে যাবজ্জীবন, চীনে মৃত্যুদণ্ড, যুক্তরাষ্ট্রে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড৷ এ সব দেশে বর্তমানে কঠোর আইনেই ভেজাল মেশানোর অপরাধের বিচার হচ্ছে৷''
এ.আর দিপু হাসান লিখেছেন, ‘‘ঢাকা শহরের বাজারে গেলে দেখা যায় কত টাটকা সবজি! মনে হয় এই মাত্র তুলে নিয়ে আসছে৷
আসলে কি তাই? কখনোই না, এই কাঁচা-বাজারের সবজি কমপক্ষে ২-৩ দিন আগে তোলা৷ আর এইগুলাই বিভিন্ন জেলা থেকে এসে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে৷ গ্রামে দেখেছি সবজি একদিন রেখে দিলেই কি অবস্থা হয়৷ আর ঢাকাতে ৩-৪ দিন পর কাঁচামাল বিক্রি হচ্ছে, তাও একদম টাটকা৷ তাছাড়া ঢাকা শহরের মাছের কথা আর কি বলবো, সব মাছেই আজকাল ফরমালিন দেয়া হয়৷''