1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খামারই বিদ্যুতের উৎস

১৭ মে ২০১৩

খামার, পোলট্রি বা কসাইখানা মানেই গরু, ছাগল আর মুরগি৷ তারা কাজে লাগে বটে, কিন্তু দুর্গন্ধও কম হয় না৷ অথচ তাদের বর্জ্য কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করাও কিন্তু সম্ভব!

ছবি: picture-alliance/dpa

ইলিয়া মেইলাখ রাশিয়ার ‘লুচকি' বায়োগ্যাস কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী৷ দিনের মধ্যে কয়েকবার সিঁড়ি বেয়ে এখানে উঠতে হয় তাঁকে৷ এই বড় বড় সিলিন্ডারগুলিতে সবকিছু গাজিয়ে তোলা হচ্ছে কিনা, সেটা তাকে দেখতে হয়৷ কেন না, একমাত্র তারপরেই তৈরি হবে বায়ো-গ্যাস৷ আর শুধুমাত্র তবেই এই ‘লুচকি' কেন্দ্রে সম্ভব হবে বিদ্যুৎ উৎপাদন৷ গত বছরই এই প্রক্রিয়ায় বায়ো-গ্যাস উৎপাদন শুরু হয়েছে এখানে৷ যার জন্য প্রযুক্তি এসেছে জার্মানি থেকে৷ প্রথমে কিন্তু এই প্রকল্পটি নানা কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল৷ মেইলাখ বলেন, ‘‘প্রশ্ন উঠেছিল, রাশিয়াতে এমন একটি প্রযুক্তির ব্যবহার আদৌ সম্ভব কিনা৷ জার্মানির জলবায়ু এখানকার জলবায়ু থেকে ভিন্ন৷ তবে না৷ এই বায়ো-গ্যাস প্রকল্প আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে যে, এটা এখানেও সম্ভব৷ তাই এবার আমাদের এমন আরো কয়েকটি প্রকল্পে হাত দেয়া উচিত৷''

এই প্রক্রিয়ায় বায়ো-গ্যাস তৈরি করতে জৈব-উপকরণ আসে কৃষি খামারগুলো থেকে৷ বছরে প্রায় ৭০ হাজার টন মাল-মশলার প্রয়োজন হয়৷ যার বেশিরভাগটাই আশেপাশের অঞ্চল থেকে আসা পশু জবাই করার পর ফেলে দেয়া আবর্জনা ও তরল সার৷

রাশিয়ায়ও আবর্জনা আলাদা করার উদ্যোগ বাড়ছেছবি: DW/E. Winogradow

এর সঙ্গে দেয়া হয় কিছুটা ভুট্টার খোসা, যাতে ব্যাকটেরিয়া এই মিশ্রণ ভালো করে ‘হজম' করতে পারে এবং মিথেন গ্যাস সৃষ্টি করতে পারে৷ ঐ মিথেন গ্যাস থেকেই বিদ্যুৎ তৈরি হয়৷ আশেপাশের এলাকার প্রায় ৩০ হাজার বাসিন্দা ‘লুচকি'-র বায়ো-গ্যাস প্রকল্পটিতে কাঁচামাল সরবরাহ করে থাকে৷ এতে একই সঙ্গে এ অঞ্চলের শুকরের খামারগুলির আবর্জনারও একটা হিল্লে হয়ে যায়৷

এখানকার খামারে প্রায় ১০ হাজার শুকরের প্রজনন করা হয়৷ যা থেকে বেশ ভালো পরিমাণ তরল, জৈব সার তৈরি হয়৷ এমনই এক খামারের মালিক আনাতোলি নেক্রাসভ৷ তিনি বললেন, ‘‘এই বায়ো-গ্যাস প্রকল্পটি যদি নাও থাকতো, তাহলেও আমাদের তেমন সমস্যা হতো না৷ আমাদের এখানে প্রায় ১৪ হাজার কিউবিক মিটার জৈব বর্জ্য ও সার জমা করে রাখার দুটি আধার রয়েছে৷ বসন্ত ও হেমন্তকালে সেখান থেকে জৈব সার আশেপাশের জমিগুলোতে পৌঁছে দেওয়া হয়৷ আমাদের হাতে সবসময় কিছু সার থাকে৷''

দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে আরও বেশি বায়োগ্যাস প্রকল্প তরল সারের সমস্যার সমাধান করতে পারে৷ ‘লুচকি'-র এই বায়ো-গ্যাস প্রকল্পটি তৈরি করতে প্রায় ৫০ কোটি রুবেল খরচ হয়েছে, যা কিনা প্রায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ ইউরোর সমান৷

রাশিয়ার প্রচণ্ড শীতেও জার্মান এই প্রযুক্তি কাজ করে থাকে বলে ইলিয়া মেইলাখ খুব খুশি৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রথমদিকে অনেকে ভেবেছিল যে, এ ধরণের বায়ো-গ্যাস প্রকল্পের ফলে চারিদিকে দুর্গন্ধ ছড়াবে৷ কিন্তু যেদিন থেকে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছে, সবাই বুঝতে পেরেছে যে এ ধরণের প্রকল্প আমাদের আরো বেশি সংখ্যায় প্রয়োজন৷ আর এখন তো প্রত্যেকটি শুকর খামারই চাইছে এমন একটা বায়ো-গ্যাস প্রকল্প তৈরি করতে৷ এর ফলে আখেরে দুর্গন্ধ কমছে বৈকি, মোটেই বাড়ছে না৷''

বলা বাহুল্য, লুচকি'র এই প্রকল্প একটা দিকনির্দেশনা দিয়েছে৷ তাই ইলিয়া মেইলাখ'এর আশা, শীঘ্রই রাশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলেও এ ধরনের বায়ো-গ্যাস প্রকল্প শুরু করা যেতে পারে৷

বিশেষ করে কৃষি খামারের উপকার হবে৷ মালিকরা স্বল্প খরচে বিদ্যুৎ পাবেন. আবর্জনা বিনাশের খরচও কমবে৷

ডিজি/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ