1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খুলনায় মঞ্জুর ‘প্রতিপক্ষ’ শেখ হাসিনা?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৪ মে ২০১৮

মঙ্গলবার খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন৷ এরইমধ্যে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা বন্ধ হয়ে গেছে৷ কিন্তু নির্বাচনের একদিন আগে বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু দাবি করেছেন, তাঁর লড়াই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে৷

ছবি: AFP/Getty Images

আর আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক মনে করছেন এই নির্বাচনে তিনিই জয়ী হবেন৷ মঞ্জু ভরাডুবি বুঝতে পেরে রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা করছে৷

সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে নজরুল ইসলাম মঞ্জু দাবি করেন, ‘‘সরকার কেসিসিতে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করছে৷ পুলিশের নেতৃত্বে রাতেই ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভরার ষড়যন্ত্র চলছে৷ এই আসনটি শেখ হাসিনা নিতে চাচ্ছেন৷ তাই আমার লড়াই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে৷’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘সরকার এবং নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারে কিনা, তা দেখতেই বিএনপি কেসিসি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে৷ একই সঙ্গে দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কারামুক্তি এবং জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলনের অংশ হিসেবেই বিএনপি মাঠে রয়েছে৷ এটা জাতীয় নির্বাচনের মতো৷’’

এই নির্বাচনী লড়াই শেখ হানিার বিরুদ্ধে কেন জানতে চাইলে মঞ্জু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা এটা উপহার নিতে চান৷ এটা নাকি তাঁর মর্যাদার লড়াই৷ এই বিজয়টা তাঁর লাগবেই৷ তা না হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই অঞ্চলে সুবিধা করতে পারবে না আওয়ামীলীগ৷ পরাজিত হলে তার ঢেউ লাগবে৷ তাই মেয়র পদে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জয় লাগবেই৷’’

শেখ হাসিনা এটা উপহার নিতে চান, এটা নাকি তাঁর মর্যাদার লড়াই: নজরুল ইসলাম মঞ্জু

This browser does not support the audio element.

তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘তাই জয় ছিনিয়ে নিতে শেখ হাসিনার নির্দেশেই এখন পুলিশ, নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে৷ গুন্ডাপান্ডা এনে জড়ো করা হয়েছে৷শেখ হাসিনার আত্মীয়-স্বজন এখানে অবস্থান করছেন৷ আমি অভিযোগ করলেও নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয় না৷ পুলিশ আওয়ামী লীগের ঠ্যাঙ্গানি বাহিনী হিসেবে কাজ করছে৷ পুলিশ দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করিয়েছে৷ মাঠছাড়া করেছে৷ এজন্যই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই৷’’

নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী মঞ্জু৷ তিনি বলেন, ‘‘ভোটাররা যদি ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে এবং ভোট দিতে পারে, তাহলে আমি জয়ের ব্যাপারে একশ' ভাগ আশাবাদী৷’’

বিএনপি প্রার্থী মঞ্জু'র এইসব অভিযোগের জবাব দিয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমার প্রশ্ন– মঞ্জুর পক্ষে যে বিএনপি নেতারা খুলনায় আছেন, তাঁরা বহিরাগত কিনা? স্বতঃস্ফূর্তভাবে বাইরে থেকে কর্মী সমর্থকরা এলেও তারা তো আর ভোট দেবে না৷ এ পর্যন্ত কোনো মারামারি বা অপ্রীতিকর ঘটনাতো ঘটে নাই৷ বরং ওনারা হুমকি দেন, জঙ্গি কাকে বলে দেখিয়ে দেবো৷  জঙ্গি তো ওনারাই পুষেছেন৷ বাংলা ভাইকে ওনারাই পুষেছিলেন৷ নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য তারা প্রোপাগান্ডা করছে৷ খুলনায় এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় নাই যা সুষ্ঠু ও অবাধ নিরপেক্ষ  নির্বাচনের পথে অন্তরায় হতে পারে৷’’

এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় নাই, যা সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে অন্তরায় হতে পারে: তালুকদার আব্দুল খালেক

This browser does not support the audio element.

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি  বলেন, ‘‘শেখ হাসিুনার আসন চাইতে হবে কেন? আমি তো ২০০৮ সালে মেয়র ছিলাম৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তারা ( বিএনপি) আমাদের প্রতীক ব্যবহার করে বুকে লাগিয়ে ষড়যন্ত্র করে আমাকে হারিয়ে দিয়েছে৷ এবার সবদিক থেকে সতর্ক আছি৷ এবার কোনোভাবে এ কাজ তারা করতে পারবে না৷ আমার নাম দিয়ে ধানের শীষে ভোট চাওয়া যাবে না৷’’

আর বিএনপি'র নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘এই অভিযোগ ঠিক না৷ কোনো নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি৷ যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা অবৈধ অস্ত্রধারী ও মামলার আসামি৷ সুন্দর নির্বাচনের জন্য তাদের আটক করা হয়েছে৷’’

তালুকদার আব্দুল খালেক মনে করেন উন্নয়নের জন্য খুলনা সিটির ভোটাররা নৌকায় ভোট দেবেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি জয়ের ব্যাপারে পুরোপুরি আশাবাদী৷’’

খুলনা সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. ইউনূস আলি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মঞ্জু সাহেবের যেব অভিযোগের কথা আপনি বললেন, আমরা ওই অভিযোগগুলো লিখিতভাবে পাইনি৷ অভিযোগ পেলে দেখবো৷ আর বরিাগতদের বের হয়ে যাওয়ার জন্য আমরা মাইকিং করছি৷ না গেলে তা পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দেখবে৷’’

বহিরাগতদের বের হয়ে যাওয়ার জন্য আমরা মাইকিং করছি: মো. ইউনূস আলি

This browser does not support the audio element.

সরকারের প্রভাবে কাজ করার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এ নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করবো না৷ নির্বাচনের প্রস্তুতি ভালো৷ আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে৷’’

খুলনা সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রাথী তালুকদার আব্দুল খালেক আর বিএনপি'র প্রার্থী নজরুল ইসলাম ছাড়াও আরো তিনজন মেয়র প্রার্থী আছেন৷ মোট ওয়ার্ড ৩১টি৷ কাউন্সিলর প্রার্থী ১৪৮ জন৷ সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ১০টি পদে প্রার্থী ৩৯ জন৷ খুলনা সিটিতে মোট ভোটার চার লাখ ৯৩ হাজার৷

খুলনায় ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ২৪৫টি ভোট কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে৷ খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. হুমায়ুন কবির  জানিয়েছেন , ‘‘প্রতিটি কেন্দ্রে ২০-২২ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে৷ পুলিশের ৭০ টি মোবাইল টিম থাকবে টহলে৷ স্ট্রাইকিং টিম থাকবে ১১টা৷ র‌্যাবের থাকবে ৩০টি টিম৷ বিজিবি থাকবে ১৬ প্লাটুন৷ ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন৷ নির্বাচনের দিন চার হাজারের মতো ফোর্স নিয়োজিত থাকবে৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ