1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খালেদার চার মাসের জামিন

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১২ মার্চ ২০১৮

কারাগারে আটক সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট৷ খালেদা জিয়ার বয়স বিবেচনাসহ চারটি কারণে আদালত সোমবার এই জমিনের আদেশ দেয়৷

Bangladesch Prozess gegen Ex-Regierungschefin Khaleda Zia
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A.M. Ahad

জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ২ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমান করা হয়৷ রায় ঘোষণার দিনই দিনই কারাগারে পাঠানো হয় তাঁকে৷ ২২ ফেব্রুয়ারি এই রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাইকোর্ট৷ সেইদিন একই সঙ্গে হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন করা হয়৷ জামিন আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুর করে৷ এর আগে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণের দিন খালেদা জিয়ার দণ্ড এবং জরিমানা স্থগিত করা হয়৷

খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের আদেশ রোববারই হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু ঐ দিন মামলার নথি হাইকোর্টে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় সোমবার আদেশ দেয়া হলো৷

হাইকোর্টে এই আদেশের সময় উপস্থিত আইন বিষয়ক সাংবাদিক বাহাউদ্দীন ইমরান ডয়চে ভেলেকে জানান, খালেদা জিয়াকে চারটি বিষয় বিবেচনা করে আদালত জামিন দিয়েছেন৷

বাহাউদ্দীন ইমরান

This browser does not support the audio element.

তিনি জানান আদেশের সময় আদালত বলেছে, ‘‘আমরা উভয়পক্ষকে শুনেছি৷ চারটি বিষয় বিবেচনা করে এই আদেশ দেয়া হচ্ছে৷ এক. সাজার পরিমাণ বিবেচনা (অর্থাৎ বিচারিক আদালতে তাঁর যে স্বল্প মেয়াদের সাজা দেয়া হয়েছে, তা বিবেচনা)৷ দুই. মামলাটির বিচারিক আদালতের নথি এসেছে এবং এটি আপিল শুনানির জন্য পেপার বুক তৈরি হয়নি৷ তিন. বিচারিক আদালতে মামলা চলাকালে তিনি নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিয়েছেন, তিনি জামিনে ছিলেন এবং জামিনের অপব্যবহার করেননি এবং চার. তাঁর বয়স এবং শারীরিক অসুস্থতার বিষয় বিবেচনা করা হলো৷''

একইসঙ্গে আগামী চার মাসের মধ্যে মামলারআপিল শুনানির জন্য পেপার বুক প্রস্তুত করতে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখাকে নির্দেশও দিয়েছে আদালত৷ এই পেপার বুক প্রস্তুত হলে উভয়পক্ষের আইনজীবীরা আপিল শুনানির জন্য আসতে পারবেন বলেও জানিয়ে রেখেছে আদালত৷

খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রক্রিয়া নিয়ে আইনজীবীদের উদ্ধৃত করে বাহাউদ্দীন ইমরান জানান, ‘‘আদালতের জামিন আদেশের পর খালেদা জিয়ার জামিনে কারামুক্তির প্রক্রিয়া হলো, হাইকোর্টের এই জামিন আদেশটি লিখিতভাবে রায় প্রদানকারী আদালতে যাবে৷ এরপর রায় প্রদানকারী আদালতে একটি বেইল বন্ড (জামিননামা) দাখিল করতে হবে৷ ঐ বেইল বন্ড জমার পর বিচারিক আদালত কারাগার বরাবর একটি রিলিজ অর্ডার পাঠাবে৷ সেই অর্ডার হাতে পাওয়ার পর খালেদা জিয়া জামিনে কারামুক্ত হবেন৷ তবে সেটা আজ (সেমাবার ) সম্ভব হবে না৷ তাই আজ খালেদা জিয়ার মুক্তির সম্ভাবনা নাই বললেই চলে৷ তবে মঙ্গলাবার তিনি মুক্তি পেতে পারেন, যদি অন্য কোনো মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো না হয়৷''

খালেদা জিয়ার জামিন আদেশের পর তাঁর আইনজীবী এবং বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টের আদেশের পর এখন খালেদা জিয়ার মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই৷ কতগুলো নিয়ম আছে, সেগুলো মেনে আদেশ কারাগারে পৌঁছালেই খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন৷ শিগগিরই তিনি আমাদের মধ্যে ফিরে আসবেন৷

খালেদা জিয়ার আরেকজন আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আদালতে আমরা আবেদন করেছি৷ আবেদনটি শুনানি শেষে আদেশের জন্য অপেক্ষমাণ ছিল৷ আদালতে আমরা কারেন্ট দু'টি পিটিশন প্লেস করেছি৷ সেখানে আছে ১০ বছর বা সাত বছর জেল হলেও বয়স্ক মানুষকে বেইল (জামিন) দিয়ে থাকে আদালত৷ আদালত সেই ক্ষমতা ব্যবহার করে আজ তাঁকে চার মাসের বেইল দিয়েছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘বেগম জিয়া এখন বেইলপ্রাপ্ত৷ সরকার যদি আর কোনো মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার না দেখায়, তাহলে তাঁর জামিন পেতে আর কোনো বাধা নেই৷ সর্বোচ্চ আদালতের ওপর আমাদের আস্থা আছে৷ খালেদা জিয়ারও আস্থা আছে বলেই তিনি আপিল করেছেন৷ সেই আপিলের পর জামিন আবেদনের শুনানির পরে খালেদা জিয়া আজ জামিন পেয়েছেন৷''

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘খালেদা জিয়ার জামিন আদেশ প্রমাণ করে বিচার বিভাগ বা আদালতের ওপর সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই৷ আর কোনো মামলায় সাজা হয়ে না থাকলে এখন জেল থেকে তাঁর বের হতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না৷''

সচিবালয়ে সাংবাদিকদের আইনমন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘এই মামলা দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) করেছে, সরকার করেনি৷ কাজেই এই জামিনাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি হবে না তা দুদকের বিষয়৷ তবে তারা সরকারকে অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত করতে পারে৷ তবে জামিন আদেশের সার্টিফায়েড কপি আদালত গেটে না যাওয়া পর্যন্ত হয়ত খালেদা জিয়াকে অপেক্ষা করতে হবে৷''

তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহহবুবে আলম বলেন, ‘‘আমরা আপিল ফাইলের কাজ শুরু করেছি৷ আশা করছি আগামীকাল আমরা জামিনের বিরুদ্ধে আপিলে যাব৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ