খালেদার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ গত ১৯শে মার্চ খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে মামলা দু'টিতে অভিযোগ গঠন করে বিশেষ জজ আদালত-৩৷ এ দুটি মামলায় বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১২ই মে হাইকোর্টে দু'টি রিট করেন খালেদা জিয়া৷ ২৫শে মে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ এ বিষয়ে বিভক্ত আদেশ দেয়৷ ফলে নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টের একটি একক বেঞ্চে পাঠানো হয়৷ ১৯শে জুন ঐ বেঞ্চ খালেদার রিট দুটি খারিজ করে৷ এরপর খারিজ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে দুটি আবেদন করেন খালেদা জিয়া৷
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির একটি বেঞ্চ খালেদা জিয়ার আপিল শুনানি শেষে আগামী রবিবার রায়ের দিন ধার্য করে৷ আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান৷ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘‘আমরা আশাকরি খালেদা জিয়ার আপিল গ্রহণ করা হবে৷ রায় তাঁর পক্ষে যাবে৷''
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম৷ আর দুদক-এর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান৷ খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘‘এই মামলার বিচারকাজ স্থগিত হওয়ার কোনো কারণ নেই৷''
জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩রা জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক৷ মামলায় ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়৷ ২০০৯ সালের ৫ই আগস্ট খালেদা জিয়া, তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ছ'জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক৷ অন্য আসামিরা হলেন মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান৷
এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয় ২০১১ সালের ৮ই আগস্ট তেজগাঁও থানায়৷ এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডাব্লিউটি-এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান৷ হারিছ চৌধুরী শুরু থেকেই পলাতক৷ ২০১২ সালের ১৬ই জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক৷
এই দুটি মামলায়ই অভিযোগ গঠন এবং বিচার শুরু হয়েছিল৷ কিন্তু খালেদা জিয়া সুপ্রিম কোর্টে মামলা দু'টি স্থগিতের আবেদন করার পর, আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলা দু'টির বিচার স্থগিত আছে৷ রবিবার রায়ের মধ্য দিয়ে মামলা দু'টির ভবিষ্যত্ জানা যাবে৷ যদি খালেদার আবেদন খারিজ হয়, তাহলে এক বছরের মধ্যেই বিচারিক আদালত থেকে মামলা দু'টির রায় পাওয়া যাবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা৷
উল্লেখ্য, এ দু'টিসহ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি মামলা রয়েছে৷ এছাড়া তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ১৭টি ও ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের বিরুদ্ধে সাতটি মামলা রয়েছে৷ তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমানও স্বামীর সঙ্গে দুদক-এর একটি মামলার আসামি৷