ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি' কর্মসূচির অনুমতি না দেয়ার সিদ্ধান্ত জানানোর দেড় ঘণ্টার মধ্যেই বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া দেশবাসীর উদ্দেশে একটি ভিডিও বার্তা দেন৷
বিজ্ঞাপন
ঐ বার্তায় তিনি না থাকলেও কর্মসূচি সফল করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান৷ খালেদা জিয়া বলেন, পুলিশ অনুমতি না দিলেও সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে রবিবার নয়া পল্টনের সমাবেশে যোগ দিতে হবে৷ তবে কি কারণে তিনি থাকতে পারবেন না, তা উল্লেখ করেনি৷
ভিডিও বার্তায় খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয় মাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আগামী ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় পতাকা হাতে আমি আপনাদের প্রতি নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে সমবেত হতে অনুরোধ করছি৷ আমি আশা করি সকল প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে আপনারা ২৯ ডিসেম্বর ঢাকায় গণতন্ত্র রক্ষার সমাবেশে শরিক হবেন৷'' নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘আমি আপনাদের পাশে আছি, থাকব সবসময়৷ যদি আমি আপনাদের পাশে থাকতে না পারি, তাহলেও আপনারা এই কর্মসূচি-আন্দোলন চালিয়ে যাবেন৷'' ''
নতুন ভোটারদের নির্বাচনি ভাবনা
যারা প্রথমবার ভোটার হয়েছেন সেরকম কয়েকজনের কাছে তাঁদের নির্বাচনি ভাবনা জানতে চাওয়া হয়েছিলো৷ ছবিঘরের মধ্য দিয়ে তাঁদের মতামত তুলে ধরা হলো৷
ছবি: DW/M. Mamun
বিভ্রান্ত দিলরুবা
দিলরুবা নোমানী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী৷ নির্বাচন না হয়েও সংখ্যাগরিষ্ঠ জনপ্রতিনিধির নির্বাচিত হওয়া একটি গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিক হিসেবে মেনে নিতে পারছেন না তিনি৷ ভোট দিবেন কিনা এখনো ঠিক করেন নি ঢাকার এই প্রথম ভোটার৷
ছবি: DW/M. Mamun
আগ্রহে ভাটা পড়লেও ভোট দেবেন
আনন্দকুমার শীল৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র৷ বাড়ি যশোরের কেশবপুরে৷ প্রথম ভোটার হিসেবে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তাঁর উৎসাহ ছিল অনেক বেশি৷ তবে বিরোধী দলবিহীন একতরফা নির্বাচনের কারণে তাঁর সে উৎসাহে ভাটা পড়েছে৷ তারপরেও একজন সুনাগরিক হিসেবে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট দিতে যাবেন তিনি৷
ছবি: DW/M. Mamun
ঈশান দ্বিধাগ্রস্ত
ঈশান ভূঁইয়া৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী৷ ঢাকার ভোটার তিনি৷ দেশের অন্য ১৫৪টি আসনের মতো হতভাগ্য ভোটার কিনা সেটাও তিনি জানেন না এখনো৷ ভোটের আমেজও চোখে পড়ছে না তাঁর৷ বিদেশি কোনো পর্যবেক্ষকও আসছেন না ৫ জানুয়ারির ভোট দেখতে৷ এধরণের একটি নির্বাচনে ভোট দেয়ার আপাতত পরিকল্পনা নেই তাঁর৷
ছবি: DW/M. Mamun
নির্বাচনে বিশ্বাস নেই, তবুও ভোট দেবে
ফাহিম হাসান৷ ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্র৷ ৫ জানুয়ারির মতো একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকার টিকবে না এই বিশ্বাস তাঁর৷ তারপরেও প্রথম ভোটার হিসেবে নিজের মত প্রকাশ করতে চান তিনি৷
ছবি: DW/M. Mamun
ক্ষুব্ধ ইশরাত রেজা
ইশরাত রেজা৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে পড়েন৷ ঢাকার ভোটার তিনি৷ ইতিমধ্যেই তাঁর এলাকার জনপ্রতিনিধি একক প্রার্থী নিসেবে নির্ধারিত হয়ে গেছে৷ প্রথম ভোটার হিসেবে অংশগ্রহণ করতে না পেরে ক্ষুব্ধ তিনি৷
ছবি: DW/M. Mamun
হতাশ, তাই ভোট দেবেন না
মোলাব্বিয়া সুলতানা৷ হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের এই ছাত্রীর বাড়ি চাঁদপুরে৷ প্রথমবারের মতো ভোটার হওয়া দেশের এই নাগরিক রাজনীতিবিদদের উপর কোনোরকম আস্থা খুঁজে পান না৷ এতো চেষ্টার পরেও রাজনীতিবিদরা কোনো সমঝোতায় আসতে না পারায় হতাশ তিনি৷ রাজনীতিবিদদের এই স্বার্থপর মনোভাব থেকে দেশের মুক্তি চান তিনি৷ ৫ জানুয়ারির মতো একটি একদলীয় নির্বাচনে ভোট দেয়া তাঁর মতে অর্থহীন৷
ছবি: DW/M. Mamun
দুই দলের কবল থেকে মুক্তি
প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সমঝোতায় বিশ্বাসী রিফাত বিন তারেক৷ পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগে৷ ঢাকার ভোটার তিনি৷ তাঁর এলাকার জনপ্রতিনিধিও ইতিমধ্যেই নির্ধারিত হয়ে গেছে৷ দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের কবল থেকে দেশের মুক্তি চান তরুণ এই ভোটার৷
ছবি: DW/M. Mamun
সহিংসতা না হলে ভোট দেবেন জাবেদ
জাবেদ ইবেনে ওয়াহেদ৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র তিনি৷ বাড়ি নোয়াখালীতে৷ প্রতিদিন যে হারে দেশে সহিংসতা হচ্ছে ভোটের দিনও হয়ত এর রেশ থাকতে পারে৷ তারপরেও নিরাপদ মনে করলে ভোট দিতে যাবেন তিনি৷
ছবি: DW/M. Mamun
সুজন তাঁর মতামত দেবে
সুজন কুমার কুণ্ডু৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র৷ জানুয়ারির নির্বাচনে তিনি অনেকটাই একনায়কতন্ত্রের ছোঁয়া দেখতে পাচ্ছেন৷ দেশের প্রধান দুই দলই ক্ষমতার লোভে পাগল৷ দেশের উন্নতি নিয়ে তাদের চিন্তা আছে বলে মনে হয় না৷ তারপরেও ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট দেয়ার ইচ্ছা আছে ঝিনাইদহের তরুণ এই ভোটারের৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভোট দিয়ে লাভ নেই
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমন দাস৷ ৫ জানুয়ারির মতো একটি নির্বাচনে ভোট দেয়ার প্রয়োজন দেখছেন না তিনি৷ প্রধান বিরোধী দল বিহীন নির্বাচন তাঁর কাছে অনেকটা সাজানো নাটকের মতো মনে হয়৷ যাকেই ভোট দিন না কেন জনপ্রতিনিধি নির্ধারিতই আছেন৷ কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগেরই এক দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তাঁর কাছে দৃষ্টিকটু লেগেছে৷ এই নির্বাচনে ভোট দিবেন না তিনি৷
ছবি: DW/M. Mamun
গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ
সৈয়দ মোহাম্মদ সাদাত৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী৷ ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট দেয়ার ইচ্ছা আছে তাঁর৷ তবে বাইরে থেকে কোনো পর্যবেক্ষক না আসায় এ ভোটের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে তাঁর মনে সন্দেহ আছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
স্থায়ী হবে না, তাই ভোট দেবেন না
খুলনার ভোটার মেহজাবিন পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগে৷ তাঁর মতে এ ধরনের একটি সরকারের স্থায়িত্ব দীর্ঘায়িত হবে না৷ বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য বারবার ব্যয়বহুল নির্বাচন খুবই ক্ষতিকর৷ ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট দেবেন না তিনি৷
ছবি: DW/M. Mamun
12 ছবি1 | 12
বর্তমান সরকারের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও উল্লেখ করেন খালেদা জিয়া৷ বিএনপি চেয়ারপার্সন সবাইকে ঢাকা যাত্রা শেষে সমাবেশে মিলিত হয়ে সরকারের ‘প্রহসনের' নির্বাচনকে ‘না' বলতে এবং গণতন্ত্র ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনকে ‘হ্যাঁ' বলার আহ্বান জানান৷ খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘এ দেশে আমরা গণতন্ত্র এনেছি, আবারো গণতন্ত্র আনব এবং ইনশাল্লাহ সেদিন বেশি দূরে নয়, বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত৷
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘জননিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে'' সমাবেশের অনুমতি না দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে৷
বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক শামিমুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ডিএমপি কমিশনারের কাছে তাঁরা দু'টি চিঠি দিয়েছেন৷ একটি চিঠিতে ২৯ ডিসেম্বর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জমায়েতে খালেদা জিয়া ও দলীয় নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা এবং অপর চিঠিতে মাইক ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হয়েছে৷ কিন্তু অনুমতি না দেয়া দুঃখজনক৷
কর্মসূচিতে যোগ দিতে সারা দেশ থেকে দল-মত, শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সক্ষম নাগরিকদের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা হাতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন খালেদা জিয়া৷ কর্মসূচিতে বাধা না দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া আগে বলেছিলেন, জনতার এই অভিযাত্রায় বাধা দেবেন না৷ যানবাহন, হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ করবেন না৷ নির্যাতন, গ্রেপ্তার, হয়রানির অপচেষ্টা করবেন না৷ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে বাধা এলে জনগণ তা মোকাবিলা করবে৷
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট থামছে না
আগামী বছরের সূচনায় জাতীয় নির্বাচন, কিন্তু দুই মুখ্য রাজনৈতিক জোটের টানাপোড়েন অব্যাহত৷ অথচ দেশে-বিদেশে অনেকেই চান সংকট নিরসনে দুই বৈরী জোটের মধ্যে আলোচনা৷ কিন্তু সেটা কি আদৌ সম্ভব হবে?
ছবি: AP
দু’দলের দ্বন্দ্ব
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নির্দিষ্ট হয়েছে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে৷ তবে মুখ্য বিরোধী দল বিএনপি এখনো নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি নয়৷ তারা চায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, শাসক আওয়ামী লীগের কাছে যা সংবিধান লঙ্ঘনের সমান৷
ছবি: Getty Images/AFP/FARJANA K. GODHULY
জাতিসংঘ চায় সংলাপ
জাতিসংঘ ইতিমধ্যেই দুই বিবাদী জোটের মধ্যে সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছে৷ মহাসচিব বান কি-মুন গত ২৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে টেলিফোনে কথাবার্তা বলেছেন৷ জাতিসংঘের মহাসচিব উভয় নেতার প্রতি চলতি রাজনৈতিক সংকটের শান্তিপূর্ণ অবসানের জন্য আলাপ-আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন৷
ছবি: Reuters
হাসিনা চান সংসদে আলোচনা
জাতিসংঘ বাংলাদেশি রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মহাসচিবের ফোনালাপের কোনো খুঁটিনাটি প্রকাশ করেনি৷ তবে বাংলাদেশের একাধিক দৈনিকে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী হাসিনা ‘‘জাতিসংঘের প্রধানকে জানিয়েছেন যে, তিনি সংবিধান অনুযায়ী সরকারের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা করছেন৷’’ বিরোধীপক্ষ যদি গোটা প্রসঙ্গটি সংসদে আলোচনা করার কোনো প্রস্তাব দেয়, তবে তিনি তাকে স্বাগত জানাবেন, এমন আভাসও দিয়েছেন হাসিনা৷
ছবি: dapd
সরকারের তত্ত্বাবধানে নির্বাচনে বিএনপির ‘না’
বান কি-মুনের সঙ্গে ফোনালাপে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াও সংকট সমাধানে সংলাপের সপক্ষে মতপ্রকাশ করেছেন, কিন্তু এ-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ‘‘বিরোধীপক্ষ আওয়ামী লীগ সরকারের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না৷’’
ছবি: Reuters
তত্ত্বাবধায়ক সরকার কি ও কেন?
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মূল কাজ হলো মুক্ত ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা৷ ১৯৯১ সালে এই পদ্ধতি চালু করা হয় কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০৯ সালে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সেই পদ্ধতি বাতিল করে৷ বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী পক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি তুলেছে৷
ছবি: AP
জার্মানি সংলাপ সমর্থন করে
সংলাপকে বাংলাদেশের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক জোটের মধ্যে অচলাবস্থা নিরসনের একমাত্র পন্থা বলে মনে করে জার্মানি৷ ‘ঢাকা কুরিয়ার’ নামক সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ঢাকায় জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. আলব্রেশট কনৎসে বলেছেন, ‘‘দু’টি মুখ্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপ হলো বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা সমাধানের একমাত্র পথ৷’’
ছবি: DW/R. Manzoor
ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ডাক দিলেন
বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস একটি ‘‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ (নির্বাচনকালীন) সরকার’’ বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতি তাঁর প্রকাশ্য সমর্থন ব্যক্ত করেছেন৷ গত ২২ আগস্ট ইউনূস একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘নির্বাচন অতি অবশ্য হওয়া উচিত এবং তা একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হওয়া উচিত৷’’
ছবি: Getty Images
আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)
হাসিনা সরকারের সৃষ্ট আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল বা আইসিটি-র উদ্দেশ্য মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার৷ কিন্তু তা শাসকদল এবং বিরোধীপক্ষের মধ্যে একটি বিতর্কিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ আইসিটি এখন পর্যন্ত ছ’জন অভিযুক্তকে শাস্তি দিয়েছে৷ বিরোধীপক্ষ এই বিচার প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত আখ্যা দিয়েছে৷ তাদের মতে এই প্রক্রিয়ার বাস্তবিক উদ্দেশ্য ন্যায়বিচার নয়, পুরাতন শত্রুতার প্রতিশোধ৷
ছবি: AP
আন্তর্জাতিক সমালোচনা
হিউম্যান রাইটস ওয়াচও আইসিটি-র সমালোচনা করেছে৷ এইচআরডাব্লিউ বিবৃতিতে বলেছে, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক প্রধান গোলাম আযমের বিচার প্রক্রিয়া ‘‘গভীরভাবে ত্রুটিপূর্ণ’’ ছিল৷ প্রতিক্রিয়া হিসেব সরকারি কৌঁসুলির তরফ থেকে এইচআরডাব্লিউ-এর বিরুদ্ধে আদালতের অবমাননার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ ইতিমধ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনা বলেছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এইচআরডাব্লিউ-এর ‘‘একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’’ রয়েছে৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
ট্র্যাক রেকর্ড
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসে৷ বিদ্যুৎ উৎপাদন কিংবা কৃষি খাতে সরকারের সাফল্যের খতিয়ান যাই হোক না কেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পের অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর হাসিনা সরকারের অন্য সব সাফল্য ঐ একটি কেলেঙ্কারির আড়ালে ধামাচাপা পড়ে গেছে৷ আগামী নির্বাচনেও পদ্মা সেতু প্রকল্প প্রসঙ্গটি প্রভাব ফেলতে পারে বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা৷
ছবি: AP
10 ছবি1 | 10
প্রসঙ্গত, পাঁচ দফা টানা অবরোধের পর খালেদা জিয়া গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি' কর্মসূচি ঘোষণা করেন৷ ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনকে ‘প্রহসনের ভোট' আখ্যায়িত করে তা প্রতিহতের জন্য সবাইকে রবিবার ঢাকায় সমবেত হতে বলেন তিনি৷ পরদিন বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল নয়া পল্টনে সমাবেশের অনুমতি ও সহযোগিতা চেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে আবেদন করে৷ সমাবেশ করতে বাধা দিলে পরিণতি ভাল হবে না বলে সরকারকে সতর্কও করেন খালেদা জিয়া৷ এদিকে টানা হরতাল অবরোধে শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ও ব্যাপক নাশকতার পর বিরোধী দলের এই নতুন কর্মসূচি নিয়ে জনমনে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়৷ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে যৌথ অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, যাতে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গণ গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ৷ বিভিন্ন স্থানে বাস-লঞ্চ বন্ধ রেখে নেতাকর্মীদের ঢাকা আসার পথে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন বিএনপি নেতারা৷
ঢাকামুখী যান চলাচল বন্ধ
শুক্রবার দুপুরের পর থেকে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে ঢাকামুখী যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে৷ কেউ যাতে কর্মসূচিতে যোগ দিতে না পারে সে কারণে সরকারের নির্দেশে ঢাকার দিকে কোনো যানবাহন যাচ্ছে না, বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা৷ এমনকি বরিশাল থেকে লঞ্চও ঢাকার দিকে যাচ্ছে না৷ তারপরও বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে সমাবেশে যোগ দিতে রওনা দিয়েছেন বলে বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন৷