1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খালেদা জিয়ার নির্বাচনের পথ কি বন্ধ?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৭ নভেম্বর ২০১৮

মঙ্গলবার হাইকোর্টের এক রায়ের কারণে কারাগারে আটক বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নির্বাচনে দাঁড়ানোর পথ বন্ধ হয়ে গেছে বলে মনে করছেন রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাটর্নিরা৷ তবে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এখনও হাল ছাড়তে নারাজ৷

Khaleda Zia Bangladesch
ছবি: Bdnews24.com

বিএনপির পাঁচ নেতা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসক নেতা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূঁইয়া, ঝিনাইদহ ২-এর সাবেক সংসদ সদস্য ও ঝিনাইদহ বিএনপির সভাপতি মো. মশিউর রহমান এবং ঝিনাইদহ-১ আসনের সাবেক সাংসদ ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আব্দুল ওহাব হাইকোর্টে বিভিন্ন মামলায় পাওয়া তাঁদের দণ্ড স্থগিত ও নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য হাইকোর্টে রিট করেন৷

দুই দিন শুনানির পর মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তাঁদের আবেদন খারিজ করে দেন৷ আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, আপিল এবং দণ্ড স্থগিত এক নয়৷ দণ্ড স্থগিত না হলে নির্বাচনে অংশ নেয়া যাবেনা৷ নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে কেউ কমপক্ষে দুই বছর দণ্ডিত হলে ওই দণ্ডভোগের পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হলে তিনি নির্বাচনের অযোগ্য হবেন৷

এই মামলার ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক ডয়চে ভেলেকে জানান,‘‘নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য আপিল এবং জামিন যথেষ্ট নয়৷ দণ্ড স্থগিত বা আপিলে তাঁকে খালাস পেতে হবে৷ যাঁরা আবেদন করেছেন তাঁরা আপিল করে জামিনে থাকলেও তাঁদের দণ্ড স্থগিত বা তাঁরা খালাস পাননি৷ তাই তাঁরা নির্বাচন করতে পারবেন না বলে আদালত রায়ে বলেছেন৷ সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের ২(ঘ)-এ বলা হয়েছে, ফৌজদারি অপরাধে কমপক্ষে দুই বছর সাজা হলে সেই সাজা ভোগের আরো পাঁচ বছর পার হতে হবে নির্বাচনে দাঁড়ানোর যোগ্য হতে৷ আর বিচারিক আদালতের রায়কেই ভিত্তি ধরতে হবে বলে আদালত জানিয়েছেন৷''

‘নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য আপিল এবং জামিন যথেষ্ট নয়’

This browser does not support the audio element.

এই রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ডয়চে ভেলেকে জানান, খালেদা জিয়া নির্বাচনে দাড়াতে পারবেন না৷, ‘‘নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য আপিল এবং জামিন যথেষ্ট নয়৷ দণ্ড স্থগিত বা আপিলে তাঁকে খালাস পেতে হবে৷ ‘‘নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য আপিল এবং জামিন যথেষ্ট নয়৷ দণ্ড স্থগিত বা আপিলে তাঁকে খালাস পেতে হবে৷  এখানে শর্ত ২টি৷ তা হলো- তিনি যদি কমপক্ষে দুই বছর দণ্ডিত হন তাহলে পারবেন না৷ আর মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছরের আগে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না৷ কাজেই খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে দুইটি প্রতিবন্ধকতাই আছে৷ কোনো আদালত তার রায় দিয়ে এই সাংবিধানিক প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করতে পারেন না৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘আদালতে আমি শুনানিতে বলেছিলাম, ফৌজদারি আদালত বিশেষ করে ফৌজদারি আপিল আদালত অবশ্যই তাঁদের সাজা স্থগিত করতে পারেন৷ কিন্তু কনভিকশন বা তাঁকে যে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, সেটির স্থগিত নেই৷''

খালেদা জিয়া গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন৷ জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট মামলায় তাঁর প্রথমে পাঁচ বছর এবং রাষ্ট্রপক্ষের আপিলে তা ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়৷ এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তাঁর সাত বছরের কারাদণ্ড হয়৷ দু'টি মামলার রায়ের বিরুদ্ধেই আপিল করা হয়েছে৷

বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে কাঁরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না, তা বলা আছে এবং সেখানে নানা ধরণের অযোগ্যতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে৷ খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে ধারা ২ বিবেচ্য৷ আরো সুনির্দিষ্ট করে বললে ধারা ২-এর উপধারা ঘ নিয়েই বেশি কথা হচ্ছে৷ তাতে বলা হয়েছে, ‘(ঘ) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে৷''

‘আইন যদি নিজস্ব গতিতে চলে, খালেদা জিয়াও নির্বাচন করতে পারবেন’

This browser does not support the audio element.

খালেদা জিয়ার পক্ষে মোট তিনটি সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র কেনা হয়েছে৷ জানা গেছে, বুধবারের মধ্যে তা রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দেয়া হবে৷

খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘অ্যাটর্নি জেনারেল আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়ে পাননি৷ তিনি রাজনৈতিক লোক৷ তাই রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন৷ খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কিনা সে সিদ্ধান্ত দেবে নির্বাচন কমিশন, রিটার্নিং অফিসার৷ তাঁর দুটি মামলাই আপিলে আছে৷ মামলা আপিলে থাকা মানে হলো মামলাটি চলমান৷ রায় চূড়ান্ত বলে ধরে নেয়া যাবেনা৷ যদি দেশে আইনের শাসন থাকে তাহলে খালেদা জিয়া নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন৷''

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে আদালত বলতে সর্বোচ্চ আদালতকে বোঝানো হয়েছে৷ আর সর্বোচ্চ আদালত হলো সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ৷ আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ের পরই কাউকে দণ্ডিত বলা যাবে, তার আগে নয়৷ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায় আপিল বিভাগ দেয়নি৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর এবং মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া দণ্ডিত হওয়ার পরও তাঁরা মন্ত্রিত্ব করেছেন এবং নির্বাচনও করেছেন৷ আমরা মনে করি, আইন যদি নিজস্ব গতিতে চলে তাহলে খালেদা জিয়াও নির্বাচন করতে পারবেন৷''

ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর ও মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া নিম্ন আদালতের দণ্ড উচ্চ আদালতের স্থগিত আদেশের মাধ্যমে মন্ত্রিত্বে বহাল ছিলেন এবং নির্বাচন করে সংসদ সদস্য হয়েছেন৷

২৮ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ সময়৷ ২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই৷ ৯ ডিসেম্বর প্রত্যাহারের শেষ সময়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ