‘খুবই দুঃখজনক এবং অনভিপ্রেত’
২ মার্চ ২০১৩![Jamaat-e-Islami activists march with sticks and set fires in the street during a clash with police in Rajshahi north-west from Dhaka on February 28, 2013. At least 30 people were killed in Bangladesh in a wave of violence today as Islamists reacted furiously to a ruling that one of their leaders must hang for war crimes during the 1971 independence conflict. At least 22 of them were shot in clashes between police and protesters that erupted after Delwar Hossain Sayedee, the Jamaat-e-Islami party's vice president, was found guilty of war crimes, including murder, arson and rape. AFP PHOTO/Stringer (Photo credit should read -/AFP/Getty Images)](https://static.dw.com/image/16638759_800.webp)
জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির শাস্তির প্রতিবাদে দেশজুড়ে যে সহিংসতা চলছে, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া শুক্রবার তার দায় চাপিয়েছেন সরকারের ওপর৷ তাঁর ভাষায় এই ‘গণহত্যার' প্রতিবাদে বিএনপি হরতাল ডেকেছে মঙ্গলবার৷
মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল এই সহিংসতাকে ‘গণহত্যা' বলায় খালেদা জিয়ার সমালোচনা করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা পরিষ্কারভাবে দেখেছি, যে কয়টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তার অধিকাংশই ঘটিয়েছে জামায়াত-শিবিরের সমর্থকরা, তাদের সদস্যরা৷ অতএব, ‘গণহত্যা' আখ্যা দিয়ে তিনি (খালেদা জিয়া) যে কথাটা বলেছেন, সেটা বিভ্রান্তিকর৷''
স্বাধীনতার পর তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন খালেদা জিয়া৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে এই বিষয়টি তুলে এনে সুলতানা কামাল বলেন, ‘‘তিনি তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, দু'বার বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন৷ তার কাছ থেকে এই ধরনের কোন মন্তব্য আসাটা খুবই দুঃখজনক এবং অনভিপ্রেত৷ তিনি কিন্তু তার শরিক দলের এই সদস্যদেরকে বলতে পারতেন, এই সহিংস কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে৷''
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এখন পর্যন্ত তিনজনের বিরুদ্ধে রায় প্রদান করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল৷ এদের মধ্যে দু'জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছেন বিচারকরা৷ কিন্তু এই মৃত্যুদণ্ড নিয়ে আপত্তি রয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো৷
মানবাধিকার কর্মী হিসেবে সুলতানা কামালও মৃত্যুদণ্ডের বিপক্ষে৷ তবে তিনি মনে করেন, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত৷ বাংলাদেশে যেহেতু সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড রয়েছে, তাই সেটাই যুদ্ধাপরাধীদের জন্য উপযুক্ত শাস্তি৷
যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির প্রেক্ষাপট হিসেবে অতীতের দিকেও ফিরে তাকান সুলতানা কামাল৷ স্মরণ করেন নিজের মা সুফিয়া কামালের কথা, যিনি আশির দশকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি করেছিলেন৷ স্মরণ করেন নব্বইয়ের দশকে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের আন্দোলনের কথা৷ সে সব আন্দোলনের পরিণতি আজকের প্রজন্ম চত্বর৷ যেখানে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে, জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ করার দাবিতে জেগে আছে অগুনতি মানুষ৷
উল্লেখ্য, যুদ্ধাপরাধের দায়ে গত পাঁচ ফেব্রুয়ারি কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে ট্রাইব্যুনাল৷ এরপর কাদের মোল্লা বিজয় সূচক ভি-চিহ্ন দেখিয়েছিলেন সবাইকে৷ সুলতানা কামাল বলেন, চিহ্নিত এসব যুদ্ধাপরাধীরা গত ৪২ বছরে একবারও একাত্তরের অপরাধের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেনি৷ আজও তারা শাস্তি কম হওয়াকে বিজয় হিসেবে দেখছে৷ অথচ বিচারক রায় প্রদান করেন, অপরাধীকে অনুতপ্ত করতে৷ কিন্তু কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে সেটা কি হয়েছে? তাই এরকম যুদ্ধাপরাধীদের জন্য রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শাস্তিই সবচেয়ে উপযুক্ত, বলেন সুলতানা কামাল৷