1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খালেদা জিয়া কি ‘মানবিক বিবেচনায়’ মুক্তি পাবেন?

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দেয়ার বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে৷ তবে এ বিষয়ে দল বা পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোন আবেদন পাননি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷  

Khaleda Zia Bangladesch
ছবি: Bdnews24.com

হঠাৎ করেই আবার আলোচনায় খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গ৷ গত মঙ্গলবার পরিবারের সদস্যরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ পাঠাতে চিকিৎসকদের কাছে আবেদন করেছেন৷ যদিও দলের নেতারা এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না৷ এরপরই নতুন করে শুরু হয় আলোচনা৷ শুক্রবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে টেলিফোন করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷ খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দেয়ার বিষয়টিকে মানবিক বিবেচনায় দেখার আহবান জানিয়েছেন তিনি৷

বিষয়টি সরকার কিভাবে দেখছে? জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তারা চিকিৎসকদের কাছে আবেদন করেছেন৷ কিন্তু এ বিষয়ে চিকিৎসকরা কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না৷ তারা যদি প্যারোলে চায়, তাহলে আদালতে আবেদন করতে হবে৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও আবেদন করতে পারেন৷ কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার টেবিলে এমন কোন আবেদন নেই৷ এখন আবেদন না করলে অগ্রগতি তো বলা যাবে না৷’’

আসাদুজ্জামান খান কামাল

This browser does not support the audio element.

যদিও টেলিফোন সংলাপের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শনিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি আজই আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানাব৷'' সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভার আগে অথবা পরে বিষয়টি নিয়ে তিনি আলোচনা করবেন৷ এর আগে শুক্রবার ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাকে অনুরোধ করেছেন, তিনি যেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মানবিক বিবেচনায় খালেদা জিয়ার প্যারোল নিয়ে আলোচনা করেন৷ তবে তিনি জানান, এটা আদালতের বিষয়৷ বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দি৷ এখানে সরকারের কিছু করার নেই৷ তবে রাজনৈতিক মামলা হলে বিষয়টি বিবেচনা করা যেত৷

বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাধীন রয়েছেন খালেদা জিয়া৷ সেখানকার মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. জিলন মিয়া সরকার পাঁচ সদস্যের এই বোর্ডের সদস্য৷ মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি মেডিকেল বোর্ড সুপারিশ করতে পারে না৷ যদিও আবেদনের পর আমরা একসঙ্গে বসিনি৷ আমরা মনে করছি, তার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল রয়েছে৷’’

তবে খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন তার স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে৷ যে কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন৷ প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে পরিবারের আবেদন সম্পর্কে শামীম ইস্কান্দার সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘তার দ্রুত অবনতিশীল স্বাস্থ্যের পরিপ্রেক্ষিতে যেকোনো অপূরণীয় ক্ষতি এড়াতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত বিদেশি হাসপাতালে চিকিৎসা প্রয়োজন৷ পরিবারের পক্ষ থেকে ব্যয়বহনসহ তাদের দায়িত্বে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে আবেদনে৷’’

খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, ‘‘মেডিকেল বোর্ড যেন বিদেশে চিকিৎসার ব্যাপারে সরকারকে সুপারিশ করে সেজন্য তাদের এ আবেদন৷ আবেদনে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চেয়েছি৷’’

এদিকে প্যারোলে মুক্তি নিয়ে বিএনপির মধ্যে আগে থেকেই মতবিরোধ রয়েছে৷ বিভিন্ন সময়েআন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্তকরার কথাও বলে আসা হচ্ছিল দলটির পক্ষ থেকে৷ কিন্তু গত দুই বছরে তেমন কোনো জোরালো পরিস্থিতিও দলটি তৈরি করতে পারেনি৷ খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির অন্যতম নীতিনির্ধারক অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি শুরু থেকেই বলে আসছি আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্তি পেতে সময় লাগবে৷ তার যে স্বাস্থ্যের অবস্থা তাতে দ্রুত তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন৷ যদিও আমাদের দলের নেতারা শুরু থেকে প্যারোলের বিরোধিতা করে আসছেন৷ তারা মনে করছেন, প্যারোলে চাইলে আমাদের পরাজয় হবে৷’’

খন্দকার মাহবুব হোসেন

This browser does not support the audio element.

তিনি বলেন, ‘‘আমরা শিগগিরই আবার জামিন চাইব৷ কিন্তু দেশে গণতন্ত্র না থাকলে ন্যায় বিচার পাওয়াও অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়৷ তাই প্যারোল বা জামিন দু'টোই সরকারের হাতে৷ তারা চাইলে যেকোন ভাবে তাকে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিতে পারেন৷ বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও ওয়ান ইলেভেনের সময় প্যারোলে নিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়েছিলেন৷ পাকিস্তানেও নওয়াজ শরীফ প্যারোলে নিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেছেন৷ বিশ্বে এমন অনেক নজির আছে৷’’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফও শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘‘খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য দু'টি পথ খোলা আছে৷ একটি হলো তাকে আইনি প্রক্রিয়ায় লড়াই করে জামিন নিতে হবে৷ অন্যটি হলো প্যারোলে মুক্তির জন্য সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে৷ ওনারা সেটা করেননি৷ উল্টো তারা খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে নোংরা রাজনীতি করে যাচ্ছেন৷’’

এদিকে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে শনিবার দুপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন দলটির নেতাকর্মীরা৷ বিএনপি মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা ওই সমাবেশে অংশ নেন৷ বক্তারা দ্রুত খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন৷ এর আগে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে৷

২০১৮ সালের আট ফেব্রুয়ারির ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ