বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া দেশের সবাই এখন আওয়ামী লীগে বলে মনে করেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা-৬ আসনের সাংসদ কাজী ফিরোজ রশিদ৷
বিজ্ঞাপন
‘‘দেশের বর্তমান যে অবস্থা, সেখানে আমাদের কথা বলার কিছু নেই৷ আমরা মনে করি, এই দেশে এখন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া আর কেউ আওমী লীগের বাইরে নেই৷ বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষ এখন... সব প্রো-আওয়ামী লীগার হয়ে গেছি৷''
দেশের সবাই আওয়ামী লীগে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘ধরে নেওয়া যায় যে, আমরা আওয়ামী লীগের সাথে না থাকলেও আওয়ামী লীগ যে কাজকর্ম করতেছে আমরা তাতে সন্তুষ্ট আছি, অসুবিধা কোথায়৷’’
ইউটিউবে ‘খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়' টকশো-তে এমন মন্তব্য করেন এ সাংসদ৷ আলোচনায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স৷
ভিন্নমত দমনে সরকার মামলা-মোকদ্দমাকে ব্যবহার করে কিনা এমন প্রশ্ন নিয়েও আলোচনা হয় অনুষ্ঠানে৷
সাংসদ ফিরোজ রশিদের ‘খালেদা-তারেক ছাড়া সবাই এখন আওয়ামী লীগে' মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বিএনপির কেউ আওয়ামী লীগের ভিতরে নয়৷ বিএনপি পুরোপুরি ঐক্যবদ্ধ দাবি করে তিনি বলেন ‘‘এই সরকার দেশের গণতন্ত্র ধংস করে দিয়েছে, দেশের মানুষের অধিকার হরণ করে নিয়েছে, ভোটের অধিকার হরণ করে নিয়েছে৷ এইসব হরণ করে তারা দমন-নিপীড়ন চালিয়েছে৷ লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করে তারা দেশকে কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে৷’’
বিএনপি সাংগঠনিকভাবে সক্ষম নয়- এমন মত দিয়ে ফিরোজ রশিদ আরো বলেন, বিএনপি মিছিল করে খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে এসেছে৷
কাজী ফিরোজ রশিদের মতে, দমনপীড়ন করে কোনো দলকে দমিয়ে রাখা যায় না৷ খালেদা জিয়াকে মিছিল করে কারাগারে রেখে এসে তারা কী করলো, এমন প্রশ্ন তুলে ফিরোজ রশিদ বলেন, ‘‘আমরা মনে করেছিলাম তার পরের দিন বিএনপি এই দেশে বিশাল আন্দোলন, বিপ্লব, সংগ্রাম করবে৷''
তাদের প্রয়াত নেতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ জেলে যাওয়ার পর জাতীয় পার্টি এক দিনের জন্যও থেমে থাকেনি বলেও দাবি করেন কাজী ফিরোজ রশিদ৷
অন্যদিকে সরকার বিএনপিকে ধংস করার চেষ্টা করছে দাবি করে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বিএনপি ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর উদারতা দেখিয়েছ৷ কিন্তু সরকার এ উদারতাকে দুর্বলতা হিসেবে নিয়েছে৷
বিএনপি ক্রমান্বয়ে অন্য দলের উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তার দলে প্রতিনিয়তই আলোচনা হচ্ছে এবং বিভিন্ন ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করছে৷
উল্লেখ্য, ‘ভিন্নমত দমনে সরকার কি মামলা-মোকদ্দমাকে ব্যবহার করে?' এমন প্রশ্ন রেখে ইউটিউবে একটি জরিপ পরিচালনা করে ডয়চে ভেলে৷ জরিপে অংশগ্রহণকারীদের শতকরা ৯৪ ভাগ ভিন্নমত দমনে সরকার মামলা-মোকদ্দমাকে ব্যবহার করে বলে মত দেন৷ জরিপটিতে মোট অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল ৭৯ হাজার৷
আরআর/এসিবি
খালেদার বিরুদ্ধে হাসিনার যত কথা
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিভিন্ন সময় তীর্ষক মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা৷ চরম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিয়ে কী কী বলেছেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, দেখুন গ্যালারিতে৷
ছবি: Getty Images/AFP/FARJANA K. GODHULY
পাগল-ছাগল
পদ্মা সেতু নিয়ে খালেদা জিয়ার বক্তব্য প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘সেতু তো বিভিন্ন পার্ট (অংশ) তৈরি করে করে নির্মাণ হয়৷ এক্ষেত্রে তো জোড়া দিয়েই সেতু করা হয়৷ জোড়া না দিলে তো সেতু হয় না৷ কিন্তু উনি জোড়াতালি দিয়ে কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা আমার বোধগম্য নয়৷ বাংলাদেশে তো একটা প্রচলিত কথা রয়েছে পাগলে কি না কয়, ছাগলে কি না খায়৷’’
ছবি: AP/DW
ছোটলোক
এক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়াকে নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আর যাই হোক আমি প্রধানমন্ত্রী৷ তার ছেলে যখন মারা গেল, আমি তার বাড়িতে গেলাম৷ কিন্তু আমাকে ঢুকতে দেওয়া হল না৷ এই ধরনের ছোটলোকিপনা যারা করে; তাদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন কোন মুখে?” বিস্তারিত জানতে প্লাস চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Mustafiz Mamun
ঘিলু নেই
পদ্মা সেতু নিয়ে খালেদা জিয়ার মন্তব্যের জের ধরে হাসিনা বলেন, একটা জিনিস তৈরি করতে হলে কিভাবে কোন পদ্ধতিতে করা হয়, যার মাখায় ওইটুকু ঘিলু নেই, তিনি কি করে এটি বুঝবেন? তার মাথায় শুধু ঘিলু আছে চুরি করার, টাকা বানানোর আর এতিমের টাকা মেরে খাওয়ার, মানুষ পোড়ানোর, মানুষ হত্যার৷
ছবি: Bdnews24.com
জঘন্য মনোবৃত্তি
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, উনি (খালেদা) বলেছেন, ওখানে (ভোটকেন্দ্রে) নাকি পুলিশ ছিল আর কুকুর ছিল৷... এটা কোন ধরনের কথা যে ভোটারদের উনি কুকুর বললেন৷ এই যে ৪৩ ভাগ মানুষ ভোট দিল৷ ওনার দৃষ্টিতে সবাই কুকুর?... কত বড় জঘন্য মনোবৃত্তি৷ মানবসন্তান ও ভোটারদের উনি কুকুর হিসেবে ডাকলেন৷ এই জাতীয় নোংরা কথা, এই জাতীয় গালি এটা তাঁর মুখে সাজে৷
ছবি: PID
দুপুর পর্যন্ত ঘুম!
বিএনপির সাংসদ রুমিন ফারহানার এক প্রশ্নের জবাবে সংসদে শেখ হাসিনা পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, তার নেত্রী খালেদা জিয়ার মতো বেলা ১২টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটালেই তিনি খুশি হতেন কি না? রাত ১০টার পর শুরু হওয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের খবর জানতে মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় গণমাধ্যমকর্মীদের৷ বিস্তারিত জানতে প্লাস চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Mustafiz Mamun
বরণডালা নয়
২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপিকে আনতে খালদো জিয়াকে বরণডালা পাঠাতে হবে কি না সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন শেখ হাসিনা৷ তিনি বলেছিলেন, কার সঙ্গে আলোচনা? কিসের প্রস্তাব! একবার প্রস্তাব দিয়ে যে ঝাড়িটা খেলাম… তাকে আর প্রস্তাব দেওয়ার দরকার আছে বলে মনে করি না৷ বিস্তারিত জানতে প্লাস চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: government's press department
শোক বার্তাও তৈরি ছিল
২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় মৃত্যু হলে শোক জানানোর জন্য খালেদা জিয়া বার্তাও তৈরি করে রেখেছিলেন বলে ভয়াবহ ওই হামলার ১৫ বছর পূর্তিতে গত ২১ আগস্ট এক আলোচনা সভায় দাবি করেন শেখ হাসিনা৷ বিস্তারিত জানতে প্লাস চিহ্নে ক্লিক করুন৷