1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খালেদা নির্বাচনের কথাই বলেছেন, তবে...

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৩ নভেম্বর ২০১৭

প্রায় ১৯ মাস পরে বিএনপি’র কোনো সমাবেশে ভাষণ দেন খালেদা জিয়া৷ আর সেখানে তিনি বলেন,‘‘শেখ হাসিনার অধীনে কোনও নির্বাচন হতে পারে না, হবেও না৷’’ তিনি আগামী নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েন করার দাবি জানান৷

ছবি: bdnews24.com

বিশ্লেষকরা মনে করেন, সমাবেশে খালেদা জিয়া আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথাই বলেছেন৷ কিন্তু নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে তাঁর সংশয় আছে৷ তিনি মনে করেন, আগামী নির্বাচনের নিরপেক্ষতা প্রমাণের দায়িত্ব সরকারের৷ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে প্রমাণ করতে হবে তাদের অধীনে নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব৷

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির রোববারের সমাবেশ ছিল ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি' দিবস উপলক্ষে৷ সমাবেশে বিএনপির নেতা-কর্মী এবং সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল বেশ ভালো৷ যদিও সকাল থেকে ঢাকায় দেশের বাইরে থেকে যানবাহন প্রবেশ করতে পারেনি৷ আর ঢাকার ভিতরে গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ ছিল৷ বিএনপি'র অভিযোগ, তাদের সমাবেশ যাতে সফল না হয়, সে জন্যই সরকার যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়৷ আর সরকারপক্ষের কথা, বিএনপি যনবাহন চলাচল বন্ধ করে সমাবেশ করেছে৷

সমাবেশের উদ্দেশ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন প্রয়োজন৷ দেশের এই অবস্থা থেকে মানুষ পরিবর্তন চায়, এদের হাত থেকে মুক্তি চায়৷ আর এই পরিবর্তন ভোটের মধ্য দিয়ে আসতে হবে৷ সেজন্য মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে৷ অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে৷’’

তিনি পুরোপুরি একটা নির্বাচনমুখী বক্তব্য দিয়েছেন: শান্তনূ মজুমদার

This browser does not support the audio element.

খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘স্থানীয় নির্বাচনগুলোয় কী পরিমাণ চুরি করা হয়েছে, তা বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে৷আওয়ামী লীগ চুরি করে জিততে চায়, তারা জনগণকে ভয় পায়৷ এমনকি ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউশনের নির্বাচনে খুলনায় আমাদের লোকদের নমিনেশন পেপার পর্যন্ত জমা দিতে দেয়নি৷ একই অবস্থা চিকিৎসক, শিক্ষকদের নির্বাচনেও৷ সব নির্বাচনে তারা চুরি করে জিততে চায়৷’’ তিনি বলেন, ‘‘এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নিতে হবে৷ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে৷ এখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য কমিশনারদের নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিষয়ে সরকারকে বোঝাতে হবে৷ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার চলবে না এবং ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের জন্য ইসিকে ভূমিকা রাখতে হবে৷’’

খালেদা জিয়া আরও বলেন, ‘‘নির্বাচনে নির্দ্বিধায় মানুষ ভোট দিতে যাবে৷ যাকে পছন্দ, তাকে ভোট দেবে- এই পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে৷ হাসিনার অধীনে কোনও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না, হবেও না৷’’

খালেদা জিয়া এর বাইরে রোহিঙ্গা শরণার্থী, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বিচার বিভাগ, দ্রব্য মূল্য, দুর্নীতি প্রভৃতি নিয়ে সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা বর্তমান সরকারকে ক্ষমা করলেও জনগণ ক্ষমা করবে না৷ তারা ভোটের মাধ্যমে জবাব দেবে৷’’

ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী

This browser does not support the audio element.

খালেদা জিয়ার এ ভাষণ সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক ড. শান্তনূ মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘খালেদা জিয়ার বক্তব্য খেয়াল করলে দেখা যাবে, তিনি পুরোপুরি একটা নির্বাচনমূখী বক্তব্য দিয়েছেন৷ তিনি তার কথায় সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তার দাবির কথা বলেছেন৷ তিনি কেমন নির্বাচন চান, তাই বলেছেন৷ শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে না- এই কথা তাঁর নির্বাচন বর্জনের কথা নয়৷ এটা তাঁর নির্বাচনের আগে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল, যাতে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়৷’’

তিনি বলেন, ‘‘একটি নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি হচ্ছে৷ তাই আমি মনে করি, এখন সব পক্ষকে কিছুটা হলেও সংযত আচরণ করতে হবে৷ নির্বাচনের ক্ষতি যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে৷’’

আর রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘খালেদা জিয়ার বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে এটা স্পষ্ট যে, বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে চায়৷ আমি মনে করি, তারা আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে৷ তবে তারা নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দিহান৷ তারা চায়, নির্বাচন সঠিক এবং নিরপেক্ষ হোক৷ কার অধীনে বা কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে এটা আর তাদের কাছে বড় ইস্যু নয়৷’’

তিনি বলেন, ‘‘এখন এই সরকারকেই প্রমাণ করতে হবে যে, তাদের অধীনে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব৷ শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব৷ সেটা করতে হলে নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করতে হবে৷ এবং তাদের ম্যাজিষ্ট্রেসি পাওয়ার না দিয়ে তাদের সঙ্গে আলাদা ম্যাজিষ্ট্রেট দিলেও হবে৷’’

ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী আরো বলেন, ‘‘দেশে সুশাসনের জন্য গণতন্ত্র এবং গণতন্ত্রের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার৷ আজকের(রবিবার) পরিস্থিতি দেখে মনে হয়েছে, বিএনপি নির্বাচনে আসুক তা সরকার চায় না৷ তা না হলে জেলা থেকে যানবাহন আসা বন্ধ করা হবে কেন? এটা সরকারের একটা ভুল সিদ্ধান্ত৷’’

ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী এবং ড. শান্তনূ মজুমদার মনে করেন, নির্বাচনে সব দলের অংশ গ্রহণ প্রয়োজন৷ আগেরবারের মতো কাউকে বাদ দিয়ে বা নির্বাচন বর্জন করে কোনো পক্ষই লাভবান হবে না৷

প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ