‘খাশগজি-হত্যা সম্পর্কে সব তথ্য উন্মোচন করা হবে'
২২ অক্টোবর ২০১৮গত ২রা অক্টোবর বিক্ষুব্ধ সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশগজি নিখোঁজ হবার পর থেকে প্রবল চাপের মুখে সৌদি আরবের বয়ান বার বার বদলে যাচ্ছে৷ইস্তানবুলে সৌদি কনসুলেটে তাঁর মৃত্যু ঘটেছে, এমনটা মেনে নিলেও সরকারি বয়ানের মধ্যে অনেক অসঙ্গতি ও খুঁটিনাটি বিষয়ের অভাব রয়েছে৷ ফলে জার্মানি, ফ্রান্স, ব্রিটেনসহ একাধিক দেশ সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে৷ এই তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক যৌথ বিবৃতিতে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছেন৷ উল্লেখ্য, জার্মানি সৌদি আরবে অস্ত্র রপ্তানি স্থগিত রেখেছে৷
সৌদি নেতৃত্ব গোটা ঘটনাকে ঘিরে ধোঁয়াশা কাটাতে যত বিলম্ব ঘটাচ্ছে, তাদের উপর চাপ আরো বাড়ছে৷ রবিবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ান খাশগজিরকরুণ পরিণতির বিষয়ে গোটা সত্য উন্মোচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ উল্লেখ্য, তুরস্কের কর্মকর্তারা শুরু থেকেই দাবি করে আসছেন যে, দূতাবাস ভবনের মধ্যেই খাশগজিকে হত্যা করে তাঁর মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলা হয়েছিল৷ সৌদি আরব থেকে ১৫ সদস্যের ‘হত্যাকারী' দল সেই উদ্দেশ্যে ইস্তানবুলে এসেছিল৷
এর্দোয়ানের ঘোষণার ঠিক পরেই সৌদি বাদশাহ সালমান ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানখাশগজির মৃত্যু সম্পর্কে দুঃখ প্রকাশ করে তাঁরছেলে সালাহ খাশগজির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে তাঁদের সমবেদনা জানিয়েছেন৷ সৌদি প্রেস এজেন্সি আরো জানিয়েছে, সালাহ এ জন্য ‘আন্তরিক ধন্যবাদ' জানিয়েছেন৷ তবে যুবরাজ সালমানকে না জানিয়ে খাশগজিকে হত্যা করা হয়েছে, এমনটা প্রায় কেউই বিশ্বাস করতে পারছে না৷
২রা অক্টোবর ইস্তানবুলে সৌদি কনসুলেটে ঠিক কী ঘটেছিল, তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটছে না৷ তবে শনিবার সৌদি কর্তৃপক্ষ খাশগজির মৃত্যুর কারণ হিসেবে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত দূতাবাস কর্মীদের বচসা ও তার জের ধরে ‘ফিস্টফাইট' বা ঘুষোঘুষির যে দাবি করেছেন, তা যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য ছিল না৷ তারপর সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবেইর অ্যামেরিকার ফক্স নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন যে, গোটা ঘটনা আসলে মারাত্মক এক ভুল এবং তা গোপন করার প্রচেষ্টা আরো বড় ভুল হয়েছে৷ খাশগজির মৃতদেহের কী দশা হয়েছে, সেই প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তুরস্কের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে এ বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য উন্মোচনের কাজ চলছে৷ তবে যুবরাজ সালমান এই ‘অবৈধ' অভিযানের কথা জানতেন, এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন আদেল আল জুবেইর৷
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও প্রথমে সৌদি নেতৃত্বের প্রতি আস্থা দেখিয়ে চাপের মুখে পড়েছেন৷ এমনকি রিপাবলিকান দলের মধ্যেও এ বিষয়ে অসন্তোষ বাড়ছে৷ সৌদি আরবের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবার দাবিও শোনা যাচ্ছে৷ শনিবার ট্রাম্প বলেন, সৌদি আরবের ব্যাখ্যা সম্পর্কে তিনি মোটেই সন্তুষ্ট নন৷ তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৌদি আরবের সঙ্গে লাভজনক অস্ত্র ব্যবসা বন্ধ করতে প্রস্তুত নন তিনি৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ)