খুব শিগগিরই ‘দায়িত্বশীল' স্বাভাবিক অবস্থা দেখা যাবে
১৩ এপ্রিল ২০২০ইস্টার সানডে উপলক্ষে এই বক্তব্য দেন লাশেট৷ রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ডাব্লিউডিআর রোববার সন্ধ্যায় এই সিডিইউ (ক্রিস্টিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন) নেতার বক্তব্য সম্প্রচার করে৷ চলমান করোনা সংকট মোকাবেলায় গেল কিছুদিনের পরিসংখ্যানকে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেন লাশেট৷
‘‘দিনকে দিন ভাইরাসের সংক্রমণের হার কমে আসছে, কারণ আপনারা দূরত্ব বজায় রেখেছেন এবং সহযোগিতা করেছেন,'' বলেন তিনি৷
তিনি ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, উদ্ধারকর্মী, পুলিশ ও বিক্রয় প্রতিনিধি সবাইকে ধন্যবাদ জানান৷
জার্মানির ১৬টি রাজ্যের আট কোটি জনসংখ্যার প্রায় ২২ ভাগ লোক থাকেন (১.৮ কোটি) শুধু এনআরডাব্লিউ রাজ্যেই৷ রোববার পর্যন্ত এখানে ২৪ হাজার ২৬৭ জন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন৷ মারা গেছেন ৪৯৫ জন৷ আর পুরো জার্মানিতে এদিন পর্যন্ত এক লাখ ২০ হাজার ৪৭৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২,৬৭৩ জন মারা গেছেন৷
অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, করোনা মোকাবেলায় যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে অর্থনীতি ও জীবনযাত্রায় তার সার্বিক প্রভাব থাকবে৷ ‘‘আমি হাজার হাজার মানুষের কথা চিন্তা করছি যাদের কর্মঘন্টা কমে গেছে, বেকার হয়ে গেছেন, যারা বিষণ্ণতা ও একাকীত্ব ভুগছেন, যাদের সার্জারি পিছিয়ে গেছে, কিংবা এ সময়ে যারা সহিংসতা বা হুমকির শিকারও হয়েছেন, বিশেষ করে শিশুদের কথা বলা যেতে পারে,'' বলেন লাশেট৷
সবকিছু আবার স্বাভাবিক হবার আশা করছেন তিনি৷ সিডিইউ নেতা বলেন, ‘‘আমাদের একটা রোডম্যাপ প্রয়োজন, যা আমাদের দায়িত্বশীল স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনবে৷ একবারে পুরোটা সম্ভব নয়৷ অনেকগুলো ছোট ছোট সতর্ক ধাপ পেরুতে হবে আমাদের৷''
এই কঠিন সময়ে সরকার একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চাইছে বলে জানান তিনি৷
১২ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কাউন্সিল
করোনা মোকাবেলায় ভবিষ্যত পদক্ষেপ বিষয়ে আগামী বুধবার জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে বসবেন৷ এনআরডাব্লিউ-র জন্য এরই মধ্যে লকডাউন থেকে বেরুনোর একটি খসড়া চিত্র তুলে ধরেছেন বারো সদস্যের বিশেষজ্ঞ কাউন্সিল৷
যেহেতু রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এখনো খুব চাপে পড়েনি, তাই জীবনযাত্রায় আস্তে আস্তে একটু শিথিলতা আনা সম্ভব বলে মত দিয়েছেন তারা৷ এর মধ্যে খুবই ‘কড়া প্রতিরোধ ব্যবস্থাসহ' শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আস্তে আস্তে খুলে দেয়া যেতে পারে মত তাদের৷ তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডিজিটাল অনলাইন কোর্স চালু করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা৷ কনসার্ট বা থিয়েটারগুলোতে সীমিত সংখ্যক লোকের উপস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে করা যেতে পারে৷
বিশেষজ্ঞরা করোনার পরীক্ষা আরো বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছেন৷ দিনে পাঁচ লাখ পরীক্ষার লক্ষ্য নির্ধারণ করতে চাইছেন তারা৷ এছাড়া যাদের মধ্যে লক্ষ্মণ দেখা গেছে, কিংবা যারা তাদের সংস্পর্শে এসেছেন তাদের নিয়মিত পরীক্ষা করার পরামর্শ তাদের৷ নার্সিং হোমের মত ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় রয়েছেন যারা, তাদেরও নিয়মিত পরীক্ষার ওপর জোর দেয়া হয়েছে৷ সপ্তাহে এখন প্রায় পাঁচ লাখ পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে৷ রোববার পর্যন্ত জার্মানিতে মোট ১৩ লাখ ১৭ হাজার ৮৮৭ জনের পরীক্ষা করা হয়েছে জানিয়েছে পরিসংখ্যান ভিত্তিক অনলাইন প্লাটফর্ম ওয়ার্ল্ডোমিটার্স৷
এদিকে, বিশ্লেষকরা এ বলেও সতর্ক করেছেন, ‘‘সংক্রমণের হার আবারো বাড়তে পারে৷''
জেডএ/কেএম (ইপিডি, জেনারেল আনসাইগার)