1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ছাত্রদের পক্ষে কথা বলায় শিক্ষক বহিষ্কার!

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৪ জানুয়ারি ২০২১

তিন শিক্ষক ও দুই ছাত্রকে বহিষ্কার করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ ছাত্ররা এক শিক্ষকের সাথে ‘অসৌজন্যমূলক আচরণ’ করেছেন বলে অভিযোগ৷ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উসকানি দেয়ার অভিযোগে৷

তিন শিক্ষক ও দুই ছাত্রকে বহিষ্কার করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ ছাত্ররা এক শিক্ষকের সাথে ‘অসৌজন্যমূলক আচরণ' করেছেন বলে অভিযোগ৷ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উসকানি দেয়ার অভিযোগে৷
ছবি: bdnews24.com

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা৷ যদিও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একে ‘কতিপয় ছাত্র ও বহিরাগতদের’ অবস্থান হিসেবে অভিহিত করেছে৷

ঘটনার শুরু ২০২০ সালের জানুয়ারিতে৷ তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা পাঁচ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামেন৷ দাবিগুলো হলো- ছাত্র বেতন কমানো, আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অবকাঠামো নির্মাণ ও ছাত্র সংশ্লিষ্ট ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা৷

এই আন্দোলন চলাকালেই তিন শিক্ষক ও দুই ছাত্রকে শোকজ বা কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়৷ তারপর করোনার কারণে আন্দোলন থেমে যায়৷ চলতি বছরের জানুয়ারিতে আবার শুরু হয় আন্দোলন৷ গত ১৩ই জানুয়ারি হঠাৎ করেই গত বছরের জানুয়ারির ঘটনায় দুই ছাত্র মোহাম্মদ মোবারক হোসেন নোমান এবং ইমামুল ইসলামকে বিভিন্ন মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ৷ এর প্রতিক্রিয়ায় ছাত্ররা ১৫ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে ২৪ ঘণ্টা সময় দেন৷ সেই সময়ের মধ্যে প্রত্যাহার না করায় ১৭ জানুয়ারি তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করে৷

আবুল ফজল

This browser does not support the audio element.

এরই মধ্যে ২২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষককেও বহিষ্কার করা হয়৷ তারা হলেন- বাংলা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক আবুল ফজল, একই বিভাগের প্রভাষক শাকিলা আলম এবং ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের শিক্ষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরী৷

সহকারী অধ্যাপক আবুল ফজল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নোটিশের জবাব দিতে আমাদের পর্যাপ্ত সময় দেয়া হয়নি৷ তদন্ত প্রতিবেদন দেখানো হয়নি৷ আসলে আমি বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য ও যৌন হয়রানির মত ঘটনা তুলে ধরায় যাওয়ার আগে প্রতিশোধ নিলেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. ফায়েকুজ্জামান৷ তার পক্ষে যারা আছেন তাদের তিনি নানা ধরনের সুবিধা ও পদোন্নতি দিয়ে আসছেন৷ আর আমি মনে করি ছাত্রদের দাবি যৌক্তিক৷ একজন শিক্ষক হিসেবে তাদের দাবির সঙ্গে সংহতি জানানো আমার কর্তব্য৷’’ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে তিনি অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরতান্ত্রিক বলে অভিহিত করেন৷

বহিস্কৃত ছাত্রদের একজন ইমামুল ইসলাম বলেন, ‘‘গত বছর জানুয়ারিতে আমাদের আন্দোলন চলাকালে একজন শিক্ষক আমাদের সমাবেশের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যেতে চাইলে আমরা বাধা দিই৷ আমরা তার সঙ্গে কোনো বেয়াদবি করিনি৷ তারপরও আমাদের বহিষ্কার করা হলো৷ এখন আমাদের আমরন অনশন চলবে দাবি পূরণ ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত৷’’

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক মো. শরিফুল হাসান লিমন দাবি করেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথ একটিই৷ আন্দোলনের সময় ছাত্ররা তখন একজন শিক্ষকক ঢুকতে না দিয়ে খারাপ ব্যবহার করনে৷ তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে৷ কিন্তু তারা তা মওকুফের আবেদন করলে আমরা তা বিবেচনা করবো৷ তাদের অনেক বোঝাচ্ছি তারা শুনছেন না৷’’

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য অধ্যাপক মো. ফায়েকুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলার জন্য বারবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি৷ মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ পাঠানো হলে তারও জবাব দেননি৷

হোসনে আরা

This browser does not support the audio element.

তবে প্রো-ভিসি অধ্যাপক হোসনে আরা দাবি করেন, ‘‘ওই শিক্ষকরা ছাত্রদের উসকানি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিলো৷ তারা নানা ধরনের গুজব ও কুৎসা ছড়িয়েছে৷ ভিসির মেয়াদ প্রায় শেষ পর্যায়ে৷ তারা সেই সুযোগ নিচ্ছিল৷ তদন্তে তাদের অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়েছ৷’’

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলায় প্রতিশোধ নেয়া হয়েছে- এই অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘তাদের অভিযোগ ঠিক নয়৷ তারা তদন্ত কমিটিওকেও নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে৷’’

চলমান আন্দোলকে তিনি ছাত্রদের আন্দোলন বলতেও নারাজ৷ তার কথা, ‘‘কতিপয় ছাত্র ও বহিরাগতরা অবস্থান করছে৷ তারা আমাদের কথা এমনকি মেয়র মহোদয়ের কথা শুনছে না৷ তারা আসলে কারোর ইন্ধনে ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে এসব কাজ করছে৷’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অনিময় ও দুর্নীতির কথা বিভিন্ন সময় ইউজিসিকেও জানানো হয়েছে লিখিতভাবে৷ এনিয়ে ইউজিসির বক্তব্য জানা যায়নি৷ তকে একজন কর্মকর্তা জানান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাপ্রবাহ তারা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ