আকস্মিকভাবে বন্ধ করে দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ওয়েবসাইটটি খুলে দেওয়া হয়েছে। ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ওয়েবসাইটে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
আকস্মিকভাবে বন্ধ করে দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ওয়েবসাইট।
এর আগে, বাংলাদেশের অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানায়, তাদের ওয়েবসাইট বন্ধের ‘নির্দেশ' দিয়েছে বিটিআরসি৷ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার৷
খবরে বলা হয়, বিটিআরসি থেকে সোমবার বিকালে মোবাইল ফোন ও আইআইজি অপারেটরগুলোকে ওয়েবসাইট বন্ধ করার এ নির্দেশ দেয়৷ বিটিআরসির জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক তৌসিফ শাহরিয়ারের পাঠানো এ সংক্রান্ত ই-মেইলের স্ক্রিনশটও ছেপেছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম৷ তবে নির্দেশ সম্বলিত ই-মেলে ওয়েবসাইট বন্ধের সিদ্ধান্তের কোনো কারণ বলা হয়নি৷
ই-মেলে https://www.bdnews24.com এবং https://m.bdnews24.com, অর্থাৎ নিউজপোর্টালটির দু'টি (ডেস্কটপ এবং মোবাইল) সংস্করণই বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়৷
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির কোনো বক্তব্য পায়নি৷ সরকারি কোনো ভাষ্যও তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি বলে নিউজ পোর্টালটির দাবি৷
রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর বার্তা সম্পাদক মুনীরুল ইসলাম এক লিখিত বিবৃতিতে জানান, ‘‘বিটিআরসির সিদ্ধান্তে আমরাও অবাক হয়েছি। বন্ধের পর আমরা বিটিআরসির বক্তব্য জানার চেষ্টা করেছি। বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেছেন, “বিটিআরসি নির্দেশনা দিয়েছে সরকারের উপর মহলের নির্দেশে।” কিন্তু তিনি কোনো কারণ বলেননি। আমরাও কারণটা জানতে চাই।’’
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশেরসভাপতি আমিনুল হাকিম ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘আমরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাধারণ এবং মোবাইল দু'টি ওয়েবলিঙ্কই বন্ধের নির্দেশ পেয়েছি৷ নির্দেশ পাওয়ার পর তা কার্যকরের কাজ শুরু করেছি৷ বিটিআরসি পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলেছে৷ নির্দেশে কোনো কারণ বলা হয়নি৷''
বিটিাআরসি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হকের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল৷ কিন্তু তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি৷
গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের নয়া কৌশল
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় দু’টি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দিয়েছে বহুজাতিক বিভিন্ন কোম্পানি৷ না, এমনিতেই নয়, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এমন সিদ্ধান্ত৷ এই কর্তৃপক্ষ চায় গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করতে, এক ভিন্ন উপায়ে৷
ছবি: DW
শীর্ষ দৈনিক প্রথম আলো
প্রথম আলো পত্রিকার প্রচার সংখ্যা পাঁচ লাখ বলে দাবি করা হয়৷ এটি বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রচারিত বাংলা দৈনিক৷ অনলাইনেও পত্রিকাটি সমান পাঠক প্রিয়৷
ছবি: DW
বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিজ্ঞাপন বন্ধ
গত ১৬ই আগষ্টের পর থেকে পত্রিকাটিতে নির্দিষ্ট কিছু বিজ্ঞাপন কমে যায়৷ বিশেষ করে মোবাইল ফোন ও কহুজাতিক কোম্পানিগুলো প্রথম আলোতে তাদের পণ্য এবং সেবার বিজ্ঞাপন দেয়া কার্যত বন্ধ রেখেছে৷
ছবি: DW
বিজ্ঞাপনের তারতম্য
জুলাই মাসে প্রথম আলো গ্রামীণ ফোন, রবি, বাংলা লিংক, এয়ারটেল, টেলিটক, প্যাসিফিক টেলিকম এবং ইউনিলিভার থেকে বিজ্ঞাপন পেয়েছে ৬ কোটি ৩২ লাখ ৩০ হাজার ৭০০ টাকার৷ আর সেপ্টেম্বর মাসে পেয়েছে মাত্র ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকার বিজ্ঞাপন৷ রায়ান্স আর্কাইভস থেকে পাওয়া গেছে এই তথ্য৷
ছবি: DW
নয় কোটি টাকার বিজ্ঞাপন কমে গেছে
গ্রামীণ ফোনের ভাষ্য অনুযায়ী, কর্তৃপক্ষে নির্দেশে বন্ধ হয়েছে প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারে বিজ্ঞাপন৷ রায়ান্স আর্কাইভসের হিসেব অনুযায়ী, গত জুলাই মাসে প্রথম আলো মোট বিজ্ঞাপন পায় ২৪ কোটি ৮৭ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার৷ সেপ্টেম্বর মাসে প্রথম আলো মোট বিজ্ঞাপন পায় ১৫ কোটি ৩০ লাখ ২৮ হাজার ৯০০ টাকার৷ জুলাই মাসের তুলনায় সেপ্টেম্বর মাসে প্রথম আলো ৯ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন কম পেয়েছে৷
ছবি: DW
ক্ষতির মুখে ডেইলি স্টারও
বিজ্ঞাপনে ধস নেমেছে প্রথম আলোর সহযোগী ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারেও৷ পত্রিকাটিতে জুলাই মাসে গ্রামীণ ফোন, রবি, বাংলা লিংক, এয়ারটেল, টেলিটক, প্যাসিফিক টেলিকম এবং ইউনিলিভার থেকে বিজ্ঞাপন পেয়েছে মাসে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ১০০ টাকার৷ আর সেপ্টেম্বর মাসে পেয়েছে মাত্র ৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকার বিজ্ঞাপন৷ ডেইলি স্টার বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক৷
ছবি: DW
কাদের নির্দেশে বন্ধ হচ্ছে বিজ্ঞাপন?
ডয়চে ভেলেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে গ্রামীণ ফোন ‘কর্তৃপক্ষ’ বলতে কাদের বুঝিয়েছে, তা পরিষ্কারভাবে জানায়নি৷ তবে আল-জাজিরা সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছে৷