ইন্টারনেটের শত্রু
১৬ মার্চ ২০১৪![](https://static.dw.com/image/16559266_800.webp)
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ সম্পর্কে কথা বলার অধিকার যুক্তরাষ্ট্র বা ব্রিটেনেরও কি আছে?
ডয়চে ভেলের সেরা অনলাইন অ্যাক্টিভিজম অ্যাওয়ার্ড ‘দ্য বব্স'-এর বিচারক আরাশ আবাদপুর মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র আর ব্রিটেন নৈতিকভাবে সেই অধিকার হারিয়েছে৷ টোরন্টোতে বসবাসরত এই ইরানি ব্লগার, গবেষক ও প্রকৌশলী ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এডওয়ার্ড স্নোডেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট নজরদারি এবং টেলিফোনে আড়ি পাতার তথ্য ফাঁস করে দেয়ার পর সবাই জেনে গেছে যে, গণতন্ত্রের দেশ হলেও দেশ দুটিতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই৷ বুধবার ছিল ‘ডে অ্যাগেইনস্ট সাইবার-সেন্সরশিপ' বা ‘সাইবার সেন্সরশিপবিরোধী দিবস'৷ দিবসটি উপলক্ষ্যে ‘এনিমিজ অফ ইন্টারনেট', অর্থাৎ ইন্টারনেটের শত্রুদের একটা তালিকা প্রকাশ করেছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স৷ সে তালিকায় ইরান এবং চীনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র আর ব্রিটেনের নামও রয়েছে৷
সাক্ষাৎকারে ইরানে ইন্টারনেটে সরকারি নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিয়েও কথা বলেছেন আরাশ আবাদপুর৷ তিনি জানান, ইরানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানি সম্প্রতি টুইটার ব্যবহার করে ইন্টারনেট দুনিয়া সম্পর্কে কিছুটা উদারতা দেখালেও সেন্সরশিপ প্রশ্নে সরকারের অবস্থান একটুও বদলায়নি৷ ‘হালাল ইন্টারনেট' চালু করে ব্লগার এবং অন্যান্য ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারি ও সেন্সরশিপ কঠোরভাবে চলছে বলেও জানান তিনি৷ এ পরিস্থিতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র আর ব্রিটেনকেও দায়ি মনে করেন আরাশ৷ তাঁর মতে, এডওয়ার্ড স্নোডেন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের বিরুদ্ধে যে বোমা ফাটিয়েছেন ইরান, চীন, তুর্কমেনিস্তান, সৌদি আরব এবং বাহরাইনের মতো দেশগুলোর কর্তৃত্ববাদী সরকার এখন তার সুবিধা ভোগ করছে৷ তিনি মনে করেন, উল্লেখিত দেশগুলোর সরকার যুক্তরাষ্ট্র আর ব্রিটেনের দৃষ্টান্ত সামনে আছে বলেই নিজের দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ওপর নজরদারি আরো কঠোর করতে পারছে৷ এ প্রসঙ্গে আরাশ আবাদপুর বলেন, ‘‘কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলোর যেসব আচরণের সমালোচনা তথাকথিত গণতান্ত্রিক দেশগুলো করে থাকে একই আচরণ নিজেরাও করার পর সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি নিয়ে তারা কিভাবে কথা বলবে?''
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রশ্নে চীন সরকারও তীব্র সমালোচিত৷ সে দেশে ব্লগার এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সক্রিয়দের অবস্থা সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ৷ রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স-এর তথ্য অনুযায়ী, ইন্টারনেটে সরকারের ঠিক করে দেয়া ‘বিপদরেখা' অতিক্রম করে মত প্রকাশ করায় এ মুহূর্তে অন্তত ৭০ জন কারাগারে রয়েছেন৷ ‘দ্য বব্স'-এর চীনা ভাষার বিচারক হু ইয়ং জানান, সরকারের কঠোর নজরদারির কারণে ইন্টারনেট সেবাদানকারীরাও পড়েছে বিপদে৷ সরকারি নিষেধাজ্ঞায় ব্যবসা যাতে বন্ধ হয়ে না যায় তা নিশ্চিত করতে গিয়ে অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করতে হচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠানকে৷