‘‘একটা রাষ্ট্রে যখন গণতান্ত্রিক চর্চা বন্ধ হয়, তখন সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকুচিত হয়৷ বাধাগ্রস্ত হয় সাংবাদিকদের লেখার স্বাধীনতা৷ গণতান্ত্রিক পরিবেশ না থাকলে সবকিছু সংকুচিত হবে৷ বারবার ব্যাহত হবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা৷’’
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক নূর খান৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা যদি গত তিন দশকের দিকে তাকাই, তাহলে দেখব সংবাদপত্রের মালিকানার ধরন পাল্টে গেছে৷ দু-একটি ছাড়া অধিকাংশ মিডিয়া হাউজ ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে বা ব্যবসায়ীরাই সেগুলো পরিচালনা করছেন৷''
ডয়চে ভেলে: বাংলাদেশের সংবাদপত্রে বা গণমাধ্যমে আমরা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন খুব একটা দেখি না৷ এর কারণ কী?
নূর খান: অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বা রির্পোটিংয়ের জন্য যে বিষয়টি জরুরি বলে আমি মনে করি, সেটা হলো নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করা৷ এটা অনেকক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না৷ তাই সময়টা এখানে একটা বড় ফ্যাক্টর৷ দ্বিতীয় হলো দক্ষতা এবং তৃতীয় কারণ হলো একটা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার জন্য যে ধরনের প্রযুক্তিগত সাপোর্ট দরকার সেটা না পাওয়া৷ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য একটা ঘটনার পেছনে লেগে থাকার ব্যাপারে যেভাবে সময় দেয়া দরকার এবং অর্থনৈতিক সাপোর্ট থাকা দরকার, সে জায়গায় আমাদের দুর্বলতা রয়ে গেছে৷ এ সমস্ত কারণে আমাদের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় দুর্বলতা রয়েছে৷
Alap Interview Of Nur Khan 01.11.16 - MP3-Stereo
একটা কথা তো ঠিক যে, দু-একটি মিডিয়া হাউজ ছাড়া অধিকাংশই বর্তমানে ব্যবসায়ীদের দখলে? ফলে তাঁরা পুঁজি রক্ষায় বা পুঁজি বাড়াতে মিডিয়াকে কখনও কখনও ব্যবহার করছেন৷ এই পরিস্থিতিতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করা কি আদৌ সম্ভব?
গত তিন দশকের দিকে তাকালে, আমরা দেখবো যে সংবাদপত্রের মালিকানার ধরন পাল্টে গেছে৷ দু-একটি ছাড়া অধিকাংশ মিডিয়া হাউজই এখন ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে বা ব্যবসায়ীরাই সেগুলো পরিচালনা করেছেন৷ ফলে তাঁরাই রিপোর্টিংয়ের ধরন বা বিষয়গুলো স্থির করছেন৷ আর এটা তাঁরা করছেন নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থকে মাথায় রেখেই৷ অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এটি একটি বাধা বৈকি!
এই পরিস্থিতি বদলানোর উপায় কী?
এ পরিস্থিতি বদলাতে হলে একজন সংবাদকর্মীকে তাঁর সংবাদ সংগ্রহের জন্য স্বাধীনতা দিতে হবে৷ সেক্ষেত্রে সময় কোনো বিবেচ্য বিষয় না৷ কারণ সময় বেধে দিলে অনেকক্ষেত্রেই কাজটা ব্যর্থতায় রূপ নেয় বা রিপোর্ট দুর্বল হয়৷ তাই একজন সাংবাদিককে যদি সময় বেধে দেওয়া না হয় এবং তাঁকে নিয়ন্ত্রণ না করে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়াও হয়, তাহলে উন্নয়ন সম্ভব৷
আমরা মমতাজ ভাইয়ের পর এই ধরনের সাংবাদিকতায় একটা বড় ‘গ্যাপ' লক্ষ করেছি৷ যদিও দু-একজন সাংবাদিক আছেন, যাঁরা এখনও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করে থাকেন৷ তবে সেটা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দায়সারা গোছের হয়ে যায়৷ এক্ষেত্রে আরেকটি বড় বাধা হচ্ছে – আপনি কোন বিষয়ের ওপর অনুসন্ধান করছেন৷ অর্থাৎ বিষয়টি নিয়ে সরকারের যদি বিব্রত হওয়ার কোনো কারণ থাকে বা সরকারের স্বার্থ যদি বিঘ্নিত হয় অথবা ক্ষমতাসীন মানুষদের স্বার্থ যদি বিঘ্নিত হয় বা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তবে প্রতিপদে সংবাদ সংগ্রহের ক্ষেত্রে বাধা আসে৷
সেরা ১১ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন
পুলিৎজার পুরস্কারকে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার বলে ধারণা করা হয়৷ গত ১১ বছরে কারা পেয়েছেন এ পুরস্কার জানুন ছবিঘরে৷
ছবি: Heidi Levine
২০০৬ সাল
যুক্তরাষ্ট্রের পত্রিকা ‘ওয়াশিংটন পোস্টে’-র সাংবাদিক সুজান স্মিড, জেমস ভি গ্রিমাল্ডি এবং আর. জেফরি স্মিথ সে বছর পেয়েছিলেন এই পুরস্কার৷ সংস্কারের নামে মার্কিন কংগ্রেসে ওয়াশিংটন লবিস্ট জ্যাক আব্রামোফের দুর্নীতির বিষয়ে প্রতিবেদন করেছিলেন তারা৷
ছবি: AP
২০০৭ সাল
‘দ্য বার্মিংহ্যাম নিউজ’-এর ব্রেট ব্ল্যাকলেজ পেয়েছিলেন এই পুরস্কার৷ একটি প্রতিবেদনের মাধ্যমে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের দুর্নীতির তথ্য ফাঁস করে দেন তিনি৷ যার ফলে ঐ চ্যান্সেলরকে বরখাস্ত করা হয়েছিল এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল৷
ছবি: The Pulitzer Prizes Columbia University
২০০৮ সাল
এ বছর দু’টি পত্রিকা এ পুরস্কার পায়৷ ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকার ওয়াল্ট বোগদানিচ এবং জেক হুকার পেয়েছিলেন এ পুরস্কার৷ চীন থেকে আমদানিকৃত ওষুধ ও নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্যে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি সংক্রান্ত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেছিলেন তারা৷ এছাড়া ‘শিকাগো ট্রিবিউন’-এর এক প্রতিনিধি জিতেছিলেন এই পুরস্কার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
২০০৯ সাল
‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর ডেভিড বার্সতো পেয়েছিলেন এ পুরস্কার৷ কিছু অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা রেডিও ও টেলিভিশনে বিশ্লেষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে পেন্টাগনের সমর্থনে ইরাক যুদ্ধকে প্রভাবিত করছে৷ তাদের এসব বক্তব্যের কারণে কত কোম্পানি সুবিধাভোগ করছে তাও তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Emmert
২০১০ সাল
‘দ্য ফিলাডেলফিয়া ডেইলি নিউজ’-এর বারবারা ল্যাকার ও ওয়েনডি রুডারম্যান এবং ‘নিউইয়র্ক টাইম ম্যাগাজিন’-এর প্র-পাবলিকার শেরি ফিঙ্ক যৌথভাবে এ পুরস্কার জিতেছিলেন৷ একটি অসৎ পুলিশ দলের মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার ঘটনাটি উদঘাটন করেন ল্যাকার ও রুডারম্যান৷ ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক হৈ চৈ হয়েছিল৷ ফিঙ্ক ঘূর্ণিঝড় ক্যাটরিনা আঘাত হানার পর রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে চিকিৎসকদের মানসিক অবস্থা নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছিলেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Ngan
২০১১ সাল
‘সারাসোতা হেরাল্ড ট্রিবিউন’-এর পেইজি সেন্ট জন সে বছর পুলিৎজার পেয়েছিলেন৷ ফ্লোরিডার বাড়ি মালিকদের সম্পদের ইনস্যুরেন্সে দুর্বলতা সংক্রান্ত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তাঁকে এ পুরস্কার এনে দিয়েছিল৷
ছবি: The Pulitzer Prizes Columbia University
২০১২ সাল
‘অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস’-এর ম্যাট অ্যাপুৎসো, অ্যাডাম গোল্ডম্যান, এইলিন সুলিভান এবং ক্রিস হাওলি সে বছর এই পুরস্কার জিতেছিলেন৷ নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের ‘ক্ল্যানডেস্টাইন গুপ্তচর কর্মসূচি’র আওতায় শহরের মুসলিম সম্প্রদায়ের দৈনন্দিন জীবন যাপনের প্রতি নজর রাখা হচ্ছিল, যা প্রকাশ পায় এপি-র ঐ প্রতিবেদনে৷ প্রতিবেদন প্রকাশের পর কংগ্রেস থেকে কেন্দ্রীয় তদন্ত দাবি করা হয়৷
ছবি: The Pulitzer Prizes Columbia University
২০১৩ সাল
‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ এর ডেভিড বার্সতো এবং আলেহান্দ্রা ইয়ানিক ফন বেরত্রাব এই বছর পুরস্কারটি পান৷ মেক্সিকোতে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে কীভাবে ওয়াল-মার্ট ঘুষ দেয়, সেটা নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেছিলেন তারা৷
ছবি: AP
২০১৪ সাল
ওয়াশিংটর ডিসির ‘দ্য সেন্টার ফর পাবলিক ইনটিগ্রিটি’-র ক্রিস হামবি জেতেন এই পুরস্কার৷ কয়লা খনির শ্রমিকদের ফুসফুসের রোগ নিয়ে কয়েকজন আইনজীবী ও চিকিৎসকের প্রতারণার চিত্র তুলে ধরেছিলেন তার প্রতিবেদনে৷ যার ফলে ঐ আইনজীবী ও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল৷
ছবি: The Pulitzer Prizes Columbia University
২০১৫ সাল
এ বছর দুইজন জিতেছেন এই পুরস্কার৷ ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর এরিক লিপটন কংগ্রেস নেতা ও অ্যাটর্নি জেনারেলদের লবিস্টরা তাদের কতটা প্রভাবিত করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য এবং ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর এক প্রতিনিধির স্বাস্থ্য সেবা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনের জন্য৷
ছবি: Imago/Rüdiger Wölk
২০১৬ সাল
চলতি বছরে ‘ট্যাম্পা বে টাইমস’-এর লিওনোরা লাপিটার ও অ্যান্থনি কর্মিয়ার এবং ‘দ্য সারাসোতা হেরাল্ড ট্রিবিউন’-এর মাইকেল ব্রাগা জিতেছেন এই পুরস্কার৷ ফ্লোরিডা মানসিক হাসপাতালের অবহেলার অমানবিক চিত্র ফুটে উঠেছিল তাদের প্রতিবেদনে৷
ছবি: The Pulitzer Prizes Columbia University
11 ছবি1 | 11
এছাড়া কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধেরও ব্যাপার থেকে যায়৷ সেক্ষেত্রে প্রকাশ্যে না হলেও নানাভাবে আইনকে ব্যবহার করার একটা চেষ্টা হয়৷ যেমন ধরুন দুর্নীতির বিষয়ে কেউ যদি অনুসন্ধান করতে চান বা শেকড়ে যেতে চান, তাহলে দেখা যায় আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে থাকার ফলে ক্ষমতাধররাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে দুর্নীতি করে থাকেন৷ তা তিনি রাজনৈতিক ক্ষমতাধর ব্যক্তি হন বা আমলাদের ক্ষমতাধর ব্যক্তি হন, স্বাভাবিকভাবেই তিনি আইনকে নিজের মতো করে ব্যবহার করার চেষ্টা করেন৷ ফলত অনেকক্ষেত্রেই, বিশেষ করে মফঃস্বলের উন্নয়ন নিয়ে কোউ যদি দুর্নীতির রিপোর্ট করতে চান, তাহলে ঐ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এমন সব অভিযোগ আনা হয়, যার কোনো ভিত্তি নেই৷ এমনকি তাঁকে শারীরিকভাবে নির্যাতনও করা হয়৷
সব দেশেই দেখা যায় যে, এ সব ক্ষেত্রে সরকার একটা চাপ তৈরি করে৷ কিন্তু সেই চাপকে সামলে দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেন সাংবাদিকরা৷ এখানে আমরা সেই চাপকে সামলে কেন ভালো রিপোর্ট করতে পারছি না?
প্রথমত আমরা যেটা খেয়াল করছি, সেটা হলো অধিকাংশ মিডিয়া হাউজই ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে৷ তাঁদের ব্যবসায়ও কিন্তু সরকারের এক ধরনের চাপ দেয়ার সুযোগ রয়েছে৷ এতে করে বহুক্ষেত্রেই দায়সারা গোছের রিপোর্ট হয়৷ আবার অনেক সময় দেখা যায়, একটা শুরু করার পর আর শেষ হচ্ছে না বা শেষ হলেও শুরু আর শেষের কোনো মিল নেই৷ অথবা সেই রিপোর্টটা ওখানেই থেমে যায়৷ এর একটা বড় কারণ হলো, আমাদের দেশে সংবাদমাধ্যম অনেকক্ষেত্রেই সরকারের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়৷ কারণ ব্যবসায়ীরা তো সরকারের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে জড়িত৷ তাই সরকারের ভয়েই ব্যবসায়ীরা তাঁদের মিডিয়াতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করতে দেন না৷
আমাদের দেশে মিডিয়ার উপর অদৃশ্য নিয়ন্ত্রণ আছে না মিডিয়াগুলো স্বেচ্ছায় নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে?
আমাদের দেশে সর্বক্ষেত্রেই এক ধরনের ‘সেল্ফ সেন্সরশিপ' রয়েছে৷ কারণ গোটা রাষ্ট্রেই বিচারহীনতার সংস্কৃতি, ভয়ের সংস্কৃতি এবং সামাজিক অবক্ষয় বিরাজ করছে৷ আর এ তিনটি কারণে সমস্ত ক্ষেত্রেই এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে৷ একটা জিনিস আমরা খেয়াল করেছি যে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে খুবই পরোক্ষভাবে মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে কিছু মহল৷
যে দেশের গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা নেই
না দেশটা বাংলাদেশ নয়৷ তবে বাংলাদেশের অবস্থা যে খুব একটা সুবিধাজনক তাও নয়৷ চলুন দেখে নেই, প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স অনুযায়ী কোন দেশের গণমাধ্যম কতটা স্বাধীন৷
ছবি: DW/D. Olmos
ইরিত্রিয়া
রিপোটার্স উইদাউট বর্ডার্সের প্রকাশিত ২০১৬ প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স অনুযায়ী, যে দেশটিতে গণমাধ্যমের কোনোই স্বাধীনতা নেই, সেটি হচ্ছে ইরিত্রিয়া৷ গত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে স্বৈরশাসকের কবলে থাকে দেশটির কমপক্ষে ১৫ সাংবাদিক এই মুহূর্তে জেলে আছেন৷ প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ১৮০টি দেশের মধ্যে সবার নীচে আছে ইরিত্রিয়া৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Lopez
উত্তর কোরিয়া
ইরিত্রিয়ার পরই নীচের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে উত্তর কোরিয়া৷ কিম জুন-উনের নেতৃত্বাধীন দেশটি গত ১৫ বছর ধরেই প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সের একেবারে নীচের দিকে অবস্থান করছে৷ দেশটিতে বিদেশি সাংবাদিকদের ভিসা তেমন দেয়া হয় না, যদিও বা কেউ ভিসা পান, তাঁকে রাখা হয় কড়া নজরদারিতে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Yonhap/Kcna
তুর্কমেনিস্তান
এই দেশটিকে বলা হয় পৃথিবীর অন্যতম তথ্য কৃষ্ণ গহ্বর৷ স্বাধীনভাবে কোনো সাংবাদিক কাজ করতে চাইলে তাঁর জন্য মোটামুটি কারাভোগ এবং নির্যাতন নিশ্চিত দেশটিতে৷ ইনডেক্সে তাদের অবস্থান নীচের দিক থেকে তৃতীয়৷
ছবি: Stringer/AFP/Getty Images
ফিনল্যান্ড
এবার যাওয়া যাক, তালিকার উপরের দিকের অবস্থা৷ গত পাঁচবছর ধরেই প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সের শীর্ষে অবস্থান করছে ফিনল্যান্ড৷ দেশটির গণমাধ্যম সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতা উপভোগ করে৷ তবে সেদেশের অধিকাংশ পত্রিকা দু’টি মিডিয়া গ্রুপের মালিকানায় রয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/van Weel
নেদারল্যান্ডস
প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে গত একবছরে দু’ধাপ এগিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে এসেছে নেদারল্যান্ডস৷ দেশটির গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আইনিভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে৷
ছবি: Imago/SylviaxLederer
বাংলাদেশ
বাংলাদেশে গতবছর চারজন ব্লগার এবং প্রকাশক খুন হওয়ার পরও প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে কিঞ্চিৎ উন্নতি ঘটেছে৷ আগের বছরের তুলনায় দুই ধাপ এগিয়ে দেশটির অবস্থান এখন ১৪৪তম, তবে গ্লোবাল স্কোর কমেছে মাইনাস ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ৷
ছবি: DW/A. Islam
6 ছবি1 | 6
এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য কী করা দরকার?
একটা রাষ্ট্রে যখন গণতান্ত্রিক চর্চা বন্ধ হয়ে যায় তখন সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সংকুচিত হয়৷ একই সঙ্গে সংবাদকর্মীদের লেখার স্বাধীনতাও প্রকারন্তরে বাধাগ্রস্ত হয়৷ গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে না পারলে সবকিছুই এভাবে সংকুচিত হয়ে আসবে৷ ফলে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাও ব্যাহত হবে বারবার৷
সাংবাদিকদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী?
সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুই পাল্টে যাচ্ছে৷ আমি মনে করি, প্রত্যেকের নিজের একটা রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে৷ দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে নিজের কাজটি করে মহান পেশার মর্যদা রক্ষা করা উচিত সাংবাদিকদের৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷