1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গণমাধ্যমকর্মী আইন নিয়ে ধোঁয়াশা

৪ জানুয়ারি ২০২২

জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেই "গণমাধ্যমকর্মী আইন” পাসের জন্য বিল আকারে পেশ করা হবে। এই আইনটি পাস হলে সাংবাদিক ও সংবাদ কর্মীরা আর শ্রম আইনের অধীনে থাকবেন না।

আইনটির শিরোনাম "‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন, ২০১৮'ছবি: Picture-alliance/AA/Z. H. Chowdhury

তারা আইনগতভাবে "গণমাধ্যমকর্মী” হিসেবে পরিচিত হবেন। ১৬ জানুয়ারি সংসদের  শীতকালীন অধিবেশন ডাকা হয়েছে।

কিন্তু সাংবাদিক নেতারা বলছেন, প্রস্তাবিত আইনটিতে কী আছে তারা তারা জানেন না। তাদের খসড়াও দেয়া হয়নি। আর খসড়া চূড়ান্ত করার সময় তাদের সাথে আলোচনাও করা হয়নি। ফলে আইনটি সাংবাদিকদের জন্য ভালো না খারাপ হবে তা স্পষ্ট নয়।

২০১৮ সালের অক্টোবরে এই আইনটির খসড়া অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ জানিয়েছেন সংসদের আসন্ন অধিবেশনে তারা আইনটি বিল আকারে উত্থাপানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আইনটিতে সাংবাদিকদের বেতন, ভাতা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, ছুটিসহ আরো নানা বিষয়ে সুযোগ সুবিধার কথা বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এই আইনটি পাস হলে প্রিন্ট , ইলেকট্রনিক,রেডিও এবং অনলাইন মিডিয়ায় যারা কাজ করেন তাদের সুরক্ষা দেয়া সম্ভব হবে।”

মোহাম্মদ ওমর ফারুক

This browser does not support the audio element.

এর আগে শুধুমাত্র প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের জন্যই আইন ছিলো। দ্য নিউজ পেপার এমপ্লয়িজ কন্ডিশন সার্ভিস অ্যাক্ট-১৯৭৪-এর অধীনে তারা ছিলেন। অন্য কোনো সংবাদমাধ্যমের জন্য আইন ছিল না।  প্রস্তাবিত এই আইনে ‘গণমাধ্যমকর্মীর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে কর্মরত পূর্ণকালীন সাংবাদিক, কলাকুশল, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, কর্মচারী বা নিবন্ধিত সংবাদপত্রের মালিকাধীন ছাপাখানা এবং বিভিন্ন বিভাগে নিয়োজিতরা হলেন গণমাধ্যমকর্মী। সম্প্রচারকর্মী হলেন, সম্প্রচার কাজে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত গণমাধ্যমের কর্মী।'

প্রযোজক, পান্ডুলিপি লেখক, শিল্পী, ডিজাইনার, কার্টুনিস্ট, ক্যামেরাম্যান, অডিও ও ভিডিও এডিটর, চিত্র সম্পাদক, শব্দ ধারণকারী, ক্যামেরা সহকারী, গ্রাফিক্স ডিজাইনারসহ পেশাজীবীরা যারা এই কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের কলাকুশলী বলা হবে।

আইনটির শিরোনাম হলো, ‘‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন, ২০১৮’’। 

কিন্তু বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন,"এই আইনটি করার জন্য কোনো ধরনের কোনো কমিটিতে সাংবাদিকদের রাখা হয়নি। যেসব সুযোগ সুবিধার কথা যেমন গ্রাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ডের কথা বলা হচ্ছে এগুলো আগেও ছিলো। তবে গ্রাচ্যুইটি কমিয়ে বছরে দুইটির পরিবর্তে একটি করা হয়েছে। কিন্তু সমস্যা যেটা হবে এই আইনটির ফলে সাংবাদিকেরা ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার হারাতে পারেন। ফলে দাবি দাওয়া আদায়ের জন্য তারা আন্দোলন করতে পারবেন না। সাংবাদিকেরা শ্রম আইনের সুবিধা পাবেন না। ফলে তারা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন ।”

সাজ্জাদ আলম খান

This browser does not support the audio element.

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান মনে করেন, আইনটি সংসদে পেশ করা হলে বোঝা যাবে আইনে কী আছে। কারণ তাদের কাছে কোনো খসড়া নেই। তিনি বলেন, ’’এখন পর্যন্ত সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত কিছু তথ্য আমরা জানতে পেরেছি। তাতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা এবং অধিকার আদায়ের জন্য ট্রেড ইউনিয়ন থাকতে হবে। এটা না থাকলে সাংবাদিকদের ক্ষতি হবে। আর টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সনদের কলাকুশলী নয়, সাংবাদিকের মর্যাদা দিতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, সাংবদিকদের পেশাগত আইনি সুরক্ষাও দরকার। সেটাও আছে কী না স্পষ্ট নয়।

মনজুরুল আহসান বুলবুল

This browser does not support the audio element.

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল মনে করেন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা না করে এই আইন করা ঠিক হবে না। তিনি জানান,’’২০১৮ সালে  সাংবাদিকদের সব ইউনিয়ন থেকেই আমরা কী চাই তা লিখিতভাবে দিয়েছি। কিন্তু এরপর যখন সচিব কমিটি হয় সেখানে আমাদের কাউকে রাখা হয়নি। এখন আইনের চূড়ান্ত খসড়াটিও পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের দেয়াও হয়নি। ফলে শেষ পর্যন্ত কী হয়েছে তা আমরা জানি না। আমরা হয়তো সংসদে ওঠার পর সংসদীয় কমিটিতে গিয়ে মতামত দিতে পারব। তখন কী হবে জানি না। কারণ  সংসদীয় কমিটি নিয়ে অতীতে আমাদের ভাল খারাপ দুই ধরনের অভিজ্ঞতাই আছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আমাদের মতামত গ্রহণ করা হয়নি। কিন্তু তথ্য অধিকার আইনে আমাদের মতামত গ্রহণ করা হয়েছে।”

তবে তার মতে আগে শুধু পত্রিকার সাংবাদিকরা আইনের আওতায় ছিলেন। কিন্তু এবার সব ধরনের গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এটা একটা ভালো দিক। তিনি বলেন,’’আইন নাই এটা একটা কষ্ট। কিন্তু আইন করতে গিয়ে যেন খারাপ কিছু না করা হয়।”

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ