ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কে বন্দুক হাতে বেরোন রেঞ্জাররা৷ ওদিকে সান ফ্রানসিস্কোয় তরুণ গবেষকরা কৃত্রিম গণ্ডারের শিং তৈরিতে ব্যস্ত৷ সকলেরই উদ্দেশ্য চোরাশিকারিদের হাত থেকে গণ্ডারদের বাঁচানো৷
বিজ্ঞাপন
গবেষকরা কৃত্রিম গণ্ডারের শিং তৈরিতে ব্যস্ত৷
05:21
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রুগার ন্যাশনাল পার্ক – বিশ্বের কোথাও আর এতো বেশি গণ্ডার নেই; তাছাড়া বিশ্বের কোথাও আর এতো বেশি গণ্ডার চোরাশিকারিদের হাতে মারা পড়ে না৷ পার্কের তদন্ত গোষ্ঠী একটি ‘হত্যাকাণ্ডের’ অকুস্থলের দিকে চলেছে৷
একটি হেলিকপ্টার আকাশ থেকে একটি গণ্ডারের লাশ দেখতে পেয়েছে ও তার জিপিএস তথ্য পাঠিয়েছে৷ ঊর্ধ্বতন পরিবেশ তদন্তকারী ফ্রিক রসুভ বললেন, ‘‘আমি ক্রুগারে ২৮ বছর ধরে রয়েছি৷ ২০০৫-২০০৬ সাল থেকে এটা বাড়তে থাকে৷ অনেক কিছু গা সওয়া হয়ে যায়, কিন্তু এই জীবগুলোর এমন হত্যার ঘটনায় অভ্যস্ত হওয়া যায় না৷’’
হাতে বন্দুক নিয়ে, পায়ে হেঁটে তারা রওনা হন৷ এদিকে অনেক হিংস্র বন্য জন্তু থাকতে পারে৷ তারপর হঠাৎই তারা দেখলেন, ঘাসের মধ্যে সুবিশাল প্রাণীটা পড়ে আছে৷ ফ্রিক এবং তাঁর সহকর্মীরা – যারা নিরাপত্তার কারণে অজ্ঞাতই থাকতে চান – সকলে মিলে স্থানটি খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে দেখলেন, গণ্ডারটিকে ঠিক কীভাবে মারা হয়েছে, তা জানার জন্য৷ এ থেকে চোরাশিকারিদের ধরা সহজ হতে পারে৷
কয়েকটি সেরা উদ্ভিদ ও প্রাণী
প্রতিবছর বিভিন্ন সংগঠন কিছু উদ্ভিদ ও প্রাণীকে সেরা নির্বাচিত করে, যেগুলো হুমকির মুখে রয়েছে এবং যাদের রক্ষা করা দরকার৷ ‘ফ্লোরা অ্যান্ড ফোনা ২০১৫’ তে কোন গাছ, ফুল ও পতঙ্গ সেরা খেতাব জিতল জানুন ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Hummel
তিতলি
তিতলি বা প্রজাপতি প্রাণিজগতের অন্যতম সুন্দর পতঙ্গ হিসেবে পরিচিত৷ এই প্রজাপতিটিকে নির্বাচন করার পেছনে অবশ্য অন্য কারণ রয়েছে৷ এরা খাদ্যের জন্য পিপড়ার উপর নির্ভরশীল৷ পিপড়া মথে খাবার লুকিয়ে রাখে, যা খেয়ে বেঁচে থাকে এই প্রজাপতিরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Schmitt
কচ্ছপ
২০১৫ সালের সেরা সরীসৃপ নির্বাচিত হয়েছে এই ইউরোপীয় কচ্ছপটি৷ জার্মানির ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যে এই হলুদ ছোপ ছোপ কচ্ছপের দেখা পাওয়া যায়৷ এরা কেবল স্থির পানিতে থাকতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Robert Schlesinger
ম্যাপেল গাছ
এই গাছটি ম্যাপেল প্রজাতির৷ এ ধরনের গাছ শহরের বাইরে বা জঙ্গলে বেশি দেখা যায়৷ এই গাছের কাঠ খুব ভালো৷ তাই বলা হয় এটি কখনো প্রতারণা করে না৷ আর এজন্যই ২০১৫ সালের সেরা গাছ হিসেবে উঠে এসেছে এর নাম৷
ছবি: A. Roloff
প্রবাল
যদিও প্রবাল বা শৈলশিরা সমুদ্রের সাথে সম্পর্কিত৷ কিন্তু ‘মাশরুম ২০১৫’তে এদের নামই উঠে এসেছে৷ এখানে যে মাশরুমটিকে দেখা যাচ্ছে, সেটা অনেকটা মৃত গাছ থেকে জন্ম নেয়া ছত্রাকের মত৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Theiß
বাজপাখি
রাজাওয়ালি প্রজাতির এই বাজ ২০১৫ সালের পাখি নির্বাচিত হয়েছে৷ এটি বিরল প্রজাতির এবং এ ধরনের পাখি শিকার ৭০ এর দশকে নিষিদ্ধ করা হলেও এখনো তা চলছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Jens Wolf
কাঁচামরিচ
২০১৫/১৬ বছরের সেরা সবজি নির্বাচিত হয়েছে কাঁচামরিচ৷ এটা বিভিন্ন রঙ ও বিভিন্ন ধরনের হয়৷ স্বাদের দিক থেকেও ভিন্নতা রয়েছে৷
ছবি: Getty Images
পেঁয়াজ
পেঁয়াজ কাটতে হয়ত কেউ ভালোবাসেন না৷ কিন্তু পেঁয়াজের রোগ সারানোর ক্ষমতা আছে৷ তাই আরোগ্য উদ্ভিদের তালিকায় সেরা হয়েছে পেঁয়াজ৷ পেঁয়াজ যে-কোনো ধরনের ফ্লু প্রতিরোধে সাহায্য করে৷
ছবি: Fotolia/xalanx
ঔষধি উদ্ভিদ
হাইপেরিকাম পারফরেটুম এমন একটা উদ্ভিদ, যা মানুষের ভয় ও উত্তেজনা হ্রাস করে৷ এছাড়া হতাশা কমাতেও এর জুরি নেই৷ এছাড়া ক্যান্সার ও আলৎসহাইমার প্রতিরোধে ওষুধ হিসেবে এই উদ্ভিদটি নিয়ে গবেষণা হচ্ছে৷ এ কারণে ‘ওষধি উদ্ভিদ ২০১৫’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে এটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Hummel
ছোট্ট শামুক, দুর্দান্ত পারফর্মেন্স
এ ধরনের শামুক এখন প্রায় বিরল৷ এরা সাধারণত গুহা, খনিতে লুকিয়ে থাকে৷ তাই একে ‘অ্যানিমেল কেভ ২০১৫’ এর খেতাব দেয়া হয়েছে৷
ছবি: K. Bogon
লম্বা দৈর্ঘ্যের গোলাকার ফুল
এই ফুলের প্রধান দুটি রঙ বেগুনি ও নীল৷ কখনো কখনো গোলাপী রঙেরও হয়ে থাকে৷ তাই সাকসিসা নামের এই ফুলটিকে ২০১৫ সালের সেরা ফুলের খেতাব দেয়া হয়েছে৷ ইউরোপের জলাবনে এদের দেখতে পাওয়া যায়৷ চা হিসেবে এই ফুলের দারুণ কদর রয়েছে৷ এটি রক্ত বিশুদ্ধকরণ এবং কাশি কমাতে সাহায্য করে৷
রসুভ বললেন, ‘‘অপরাধীর সম্পর্কে জানা যায়, এমন সব কিছু খুঁজছি আমরা – তার পায়ের ছাপ থেকে শুরু করে তার ডিএনএ, তার আঙুলের ছাপ, তার বন্দুকের গুলি অথবা তার ফাঁকা কেস – অপরাধীর সঙ্গে যার কোনো সংযোগ থাকতে পারে৷’’
ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কে চোরাশিকারিদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম প্রায় একটা যুদ্ধের মতো৷ কম্যান্ড সেন্টার থেকে চোরাশিকার প্রতিরোধী সব পদক্ষেপের সমন্বয় করা হয়৷ একটি বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনা কোথায় ঘটেছে, তা ক্রুগারের মানচিত্রে নির্দিষ্ট করা হয়৷
২০১৫ সালে চোরাশিকারিরা দক্ষিণ আফ্রিকায় মোট ১,২০০ গণ্ডার মেরেছে৷ গণ্ডারের শিং নিয়ে বেআইনি ব্যবসায় কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়৷
ড্রিমব়্যাঞ্চ
ক্রুগার থেকে কয়েকশ’ কিলোমিটার দূরে, জোহানেসবার্গের পশ্চিমে বাফেলো ড্রিম ব়্যাঞ্চ৷ এখানেও গণ্ডারের শিং নিয়ে বেআইনি ব্যবসার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চলেছে৷
পশুচিকিৎসক মিশেল অটো সাতসকালে উঠেছেন শিকারে যাবেন বলে – তবে শুধু ট্র্যানকুইলাইজার বা ঘুম পাড়ানোর ওষুধের বন্দুক হাতে নিয়ে৷ কেননা এই খামারের গণ্ডারদের এখানেই জন্ম; তাদের শিং নিয়মিতভাবে ছেঁটে দেওয়া হয়৷ পরিকল্পনা হল. গণ্ডারের শিং নিয়ে ব্যবসাকে বৈধ করে গণ্ডারের চোরাশিকার থেকে মুনাফা কমিয়ে দেওয়া৷
মিশেল অটো বলেন, ‘‘শিং-এর যে অংশটা আমরা ছেঁটে ফেলছি, সেটা অনেকটা হাতের নখের মতো৷ এটাও কেরাটিন থেকে তৈরি, যেমন ঘোড়ার খুর৷ গণ্ডারের শিং ছাঁটা আসলে আমাদের চুল কাটার মতো৷ আমরা যে অংশটা কাটছি, সেখানে কোনো রক্ত বইছে না অথবা কোনো স্নায়ু অবশিষ্ট নেই৷ কাজেই এটা সেলুনে যাওয়ার মতো৷’’
পশুজগতে ঘুমের অভ্যাস
মানুষ হিসেবে দিনে আমাদের ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর প্রয়োজন পড়ে৷ হাতি, তিমিসহ নানা প্রাণীর ঘুমের সময় ও কায়দা কিন্তু বেশ বিস্ময়কর৷
ছবি: picture-alliance/OKAPIA KG, Germany
হাতি ঘুমায় বড় কম
নতুন এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আফ্রিকার দুই মাদী হাতি দিনে মাত্র ২ ঘণ্টা ঘুমায়৷ কয়েকদিন তো তাদের একেবারেই ঘুমই হয়নি৷ ফলে স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে কম ঘুমানোর ক্ষেত্রে তারাই রেকর্ড করেছে৷ গবেষকদের মতে, পরিবারের সুরক্ষার চিন্তায় হাতিদের ঘুম কম হয়৷
ছবি: AFP/Getty Images/T. Karumba
মাটিতে শুয়ে ছোট্ট ঘুম
হাতির মতো জিরাফও দিনেই ঝিমাতে ভালবাসে৷ দিনে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা ঘুমায় জিরাফরা৷ তবে মাটিতে শুয়ে মাত্র আধ ঘণ্টা ঘুম হয়৷ গবেষকদের মতে, মানুষের মতো তাদেরও ঘুমের মধ্যে ‘ব়্যাপিড আই মুভমেন্ট’ পর্যায় রয়েছে৷
ছবি: Florian Sicks
দাঁড়িয়ে ঘুমাতে ওস্তাদ
ঘোড়াদের দিনে সর্বোচ্চ ৫ ঘণ্টা ঘুমালেই চলে৷ তারাও দাঁড়িয়ে ঘুমাতে ভালোবাসে৷ তবে তার জন্য বেশি শক্তিক্ষয় হয় না৷ পায়ে শিরা ও ধমনীর এক জটিল কাঠামোর দৌলতে এভাবে ঘুমানোর সময় তাদের পেশি কাজে লাগাতে হয় না৷
ছবি: DPA
অন্য ধরনের আধা-ঘুম
ডলফিন বা শুশুক মস্তিষ্কের একটা অংশ ‘সুইচ অফ’ করে দেয়৷ এটা না করলে তাদের ডুবে মরতে হতো, কারণ, প্রতি ৫ মিনিট অন্তর তাদের তাজা বাতাস নিতে সমুদ্রপৃষ্ঠে যেতে হয়৷ ফুসফুসে জল যাতে না ঢোকে, সেই খেয়ালও রাখতে হয়৷ দু’ঘণ্টা পর মস্তিষ্কের অন্য অংশের ঘুমানোর পালা৷
ছবি: Pascal Kobeh
জলের নীচে আড়াআড়ি ঘুম
স্পার্ম হোয়েল গোত্রের তিমির ঘুমানোর ভঙ্গিকে গবেষকরা ‘ড্রিফট ডাইভিং’ নাম দিয়েছেন৷ ৩০ মিনিট পর্যন্ত তিমির দেহ নিথর হয়ে যায়৷ এখনো পর্যন্ত দিনে ৩ ঘণ্টা ঘুমের প্রমাণ পাওয়া গেছে৷ বাড়তি ঘুমের জন্য এই গোত্রের তিমিরা ডলফিনদের কায়দা কাজে লাগায়৷
ছবি: picture-alliance/Wildlife
ঘুম যখন মৃত্যুর ফাঁদ
ব্লু শার্ক গোত্রের হাঙরকে মৃত্যু এড়াতে সর্বক্ষণ গতিশীল থাকতে হয়৷ কানকোর মধ্য দিয়ে জল না বয়ে গেলে তারা অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে না৷ অর্থাৎ জলের মধ্যে স্থির হলেই মৃত্যু অনিবার্য৷ তাই সমুদ্রপৃষ্ঠে সাঁতার কাটতে কাটতে ঘুমের সময় তারা নীচে ডুব দেয়৷ এমনটা চলতেই থাকে৷ সমুদ্র-গবেষকরা এই প্রক্রিয়াকে ‘ইয়ো-ইয়ো ডাইভিং’ বলে থাকেন৷
ছবি: gemeinfrei
ঘুমকাতুরে বাদুড়
দিনে মাত্র ৪ ঘণ্টা জেগে থাকে বাদুড় – তাও দিনের বেলা নয়, শুধু রাতে শিকারের সময়৷ শরীরে রক্ত সঞ্চালনের বিশেষ কাঠামোর দৌলতে তারা মাথা নীচু করে ঝুলতে পারে৷
বন্দিদশায় আলস্য
মানুষের জিম্মায় থাকার সময় স্লথ নামের বানরের মতো দেখতে স্তন্যপায়ী প্রাণী দিনে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমায়৷ পরিবেশভেদে তাদের ঘুমের প্রবণতা বদলে যায়৷ জঙ্গলে থাকলে হামলা প্রতিহত করতে আর খাদ্য সংগ্রহে তাদের ব্যস্ত থাকতে হয়৷ তাই ঘুমের সময় কমে যায়৷
ছবি: Imago/imagebroker
ইউক্যালিপটাস ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়
কোয়ালা ভালুক দিনে প্রায় ৪০০ গ্রাম পাতা খায়৷ সেই পাতায় পুষ্টি বড় কম, সেইসঙ্গে রয়েছে টক্সিন৷ ফলে হজম করতে সময় লাগে৷ সেই সময়ে শক্তিক্ষয় কমাতে তারা দিনে প্রায় ২০ ঘণ্টা ঘুমায়৷
ছবি: AP
9 ছবি1 | 9
এখানে ১,৩০০ জীবের বাস: বিশ্বের বৃহত্তম গণ্ডারের খামার৷ গণ্ডারের শিং নখের মতোই আবার গজায়, কাজেই তা বেশ কয়েকবার কাটা যায়৷ প্রতিটি শিং ওজন করে, তার খুঁটিনাটি লিখে নিয়ে তারপর তালাবন্ধ করা হয় – কেননা কেরাটিন সোনা কিংবা কোকেনের চেয়েও বেশি মূল্যবান৷ এশিয়ায় গণ্ডারের শিং-কে আশ্চর্য ঔষধি বলে গণ্য করা হয়৷
কৃত্রিম শিং
বিশ্বের অপর প্রান্তে সান ফ্রানসিস্কোতে গণ্ডারদের দুই পরম বান্ধব আছেন৷ জর্জ বোনাচি হলেন রসায়নবিদ৷ তাঁর নতুন কোম্পানিতে তিনি পরীক্ষাগারে গণ্ডারের শিং তৈরি করেন৷
কৃত্রিম গণ্ডারের শিং একদিন এইরকম দেখতে হবে - কোম্পানির অন্য মালিক ম্যাথিউ মার্কাস সগর্বে প্রথম প্রোটোটাইপগুলোকে দেখালেন৷ জিন গবেষক ও পেমবিয়েন্টের সিইও ম্যাথিউ মার্কাস বললেন, ‘‘কালোবাজারে গণ্ডারের শিংয়ের দাম আপাতত কিলো প্রতি ত্রিশ হাজার থেকে এক লক্ষ ডলার৷ আমরা চাই কিলো প্রতি সাত হাজার ডলার দাম রাখতে৷ এই দামের ফলে চোরাশিকারি আর তাদের সিন্ডিকেটগুলোর উপর চাপ বাড়বে, কেননা তাদের মুনাফা কমে যাবে, সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুসের টাকা যোগাড় করা শক্ত হবে৷’’
গণ্ডারের শিং প্রধানত প্রকৃতিদত্ত কেরাটিন দিয়ে তৈরি৷ জর্জ বোনাচি তা অন্যান্য পদার্থের সঙ্গে মেশান – ফর্মুলাটা তাঁর নিজের সিক্রেট৷
তরল মিক্সচারটি পরে চুল্লিতে শুকিয়ে শেষমেষ গুঁড়ো গণ্ডারের শিং তৈরি করা হয় – বায়োটেক স্টার্ট-আপটি যা বিক্রি করতে চায়৷ ক্রেতারা প্রধানত চীন আর ভিয়েতনাম থেকে আসবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে, কেননা সেখানে আজও গণ্ডারের শিংয়ের চাহিদা অসীম৷
শুধু গণ্ডারের শিং নয়
রসায়নবিদ ও ‘পেমবিয়েন্ট’-এর যুগ্ম-প্রতিষ্ঠাতা জর্জ বোনাচি বলেন, ‘‘শার্ক ফিন বা হাঙরের পাখনা, যা চীনে খুবই জনপ্রিয়; প্যাঙ্গোলিনের আঁশ, যা কিনা কেরাটিন দিয়ে তৈরি; বাঘের হাড়, যা কিনা চীনে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়; হাতির দাঁত, যার পশ্চিমে বহুযুগ ধরে চল – আমরা এ সব কিছুই বিবেচনা করব৷ প্রথাগতভাবে যেখানেই জীবজন্তু থেকে কোনো পণ্য উৎপাদন করা হয়, আমরা সেই পণ্য সৃষ্টির প্রক্রিয়া থেকে জীবজন্তুদের বাদ দেওয়া চেষ্টা করব৷’’
গণ্ডারদের চোরাশিকার রোধের নানা পন্থা নিয়োগ করা হচ্ছে৷ ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কের অনেক গণ্ডারের তাতে কোনো লাভ হবে না৷ ফ্রিক রুসোভ আর তাঁর দলকে এ ধরনের নানা হত্যাকাণ্ডের অকুস্থলে যেতে হবে৷ এক্ষেত্রে ব্যাপারটা আরো মর্মান্তিক কেননা নিহত স্ত্রী গণ্ডারটির পেটে একটি বাচ্চা ছিল৷
ক্র্যোগার/হোফমান/এসি
প্রাণীর শরীরের বিভিন্ন অংশের অদ্ভুত ব্যবহার
হাতির দাঁত ও গণ্ডারের শিং-এর যে মূল্যবান ব্যবহার আছে তা আমরা অনেকেই জানি৷ এর বাইরেও অদ্ভুত ও অনেকটা অপ্রয়োজনীয় কারণে প্রাণীর শরীরের বিভিন্ন অংশ কাজে লাগায় মানুষ৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Gacad
ভল্লুকের থাবা
ভল্লুকের পিত্ত ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগে৷ এছাড়া তাদের থাবা খাবার হিসেবে খেয়ে থাকেন এশিয়ার কয়েকটি দেশের মানুষ৷
ছবি: picture-alliance/ChinaFotoPress
কচ্ছপের খোলস
কয়েক শতাব্দী আগে কচ্ছপের খোলস দিয়ে অলংকার, শিল্পকর্ম, চুলের অ্যাকসেসরিজ ইত্যাদি তৈরি করা হতো৷ এ কাজে সাধারণত ‘হকসবিল’ কচ্ছপের খোলস ব্যবহৃত হতো৷ ফলে ধীরে ধীরে ঐ কচ্ছপের বিলুপ্তি ঘটছিল৷ তাদের বাঁচাতে ১৯৭৩ সালে কচ্ছপের খোলসের ব্যবসার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও বিশ্বের অনেক অঞ্চলে এখনও তা চলছে৷
ছবি: Robert Harding
নপুংসকতার চিকিৎসায় বাঘের হাড়
চীনে আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে বাঘের চামড়ার কদর আছে৷ এর বাইরে বাঘের হাড় দিয়ে ওয়াইন তৈরি করা হয়৷ নপুংসকতা ও বাতের চিকিৎসায়ও বাঘের হাড় ব্যবহৃত হয়৷
ছবি: EIA
হাঙরের ডানা
স্যুপ হিসেবে খাওয়ার জন্য হাঙরের ডানা কেটে নেয়া হয়৷ কিন্তু হাঙরের মাংসের যেহেতু কোনো কদর নেই, তাই ডানা কাটা অবস্থাতেই হাঙরগুলোকে সাগরে ছেড়ে দেয়া হয়৷ কিন্তু ডানা না থাকায় হাঙরের পক্ষে সাঁতার কাটা সম্ভব হয় না৷ ফলে সাগরে নামিয়ে দেয়ার কয়েকদিনের মধ্যে কষ্ট পেয়ে প্রাণ হারায় সে৷
ছবি: Gerhard Wegner/Sharkproject
চিতার ত্বক
মধ্য এশিয়া, পূর্ব ইউরোপ আর রাশিয়ায় পোশাক তৈরিতে চিতার চামড়ার ব্যবহার আছে৷ এছাড়া বাঘের মতো চিতার হাড়ও এশিয়ায় ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
হরিণের লালাগ্রন্থি
সুন্দর গন্ধের জন্য পারফিউম তৈরিতে হরিণের লালাগ্রন্থি ব্যবহৃত হয়৷ লালাগ্রন্থি সংগ্রহ করতে হরিণকে মারার প্রয়োজন না হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেটিই করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/Mary Evans Picture Library
ধনেশ পাখির শিং, পালক
ছবিটি রাইনোসেরোস গোত্রের ধনেশ পাখির৷ পোষা প্রাণী হিসেবে তাদের ব্যবহার আছে৷ এছাড়া তাদের পালকও অনেক কাজে লাগে৷ হেলমেটেড ধনেশের শিং হাতির দাঁতের মতোই মূল্যবান৷