করোনা মোকাবিলায় নানা ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে চীন৷ এবার তারা সাংহাইয়ের একটি এলাকার সব মানুষের করোনা পরীক্ষা করাতে ১১ জুন সেখানে লকডাউন দিয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
মিনহাং নামের ওই শহরে২৭ লাখ মানুষের বাস৷ গত সপ্তাহে সেখানে করোনা বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছিল৷ কেননা মার্চ থেকে শহরের ২৫ লাখ বাসিন্দা ঘর থেকে বের হননি৷ গত দুই বছরের মধ্যে করোনার ভয়াবহ সংকটে চীন৷
মিনহাং কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১১ তারিখ সকাল থেকে সেখানকার সব অধিবাসীদের করোনা পরীক্ষা শুরু হবে৷ সবার স্যাম্পল সংগ্রহ করা হলে লকডাউন তুলে দেয়া হবে৷ তবে তার নির্দিষ্ট সময় জানায়নি তারা৷ পরীক্ষায় যাদের করোনা শনাক্ত হবে তাদের কি ব্যবস্থা নেয়া হবে সে বিষয়টিও পরিষ্কার করেনি তারা৷
দুই মাস পর সাংহাইয়ে প্রাণ ফিরলো
00:58
করোনার বিরুদ্ধে লড়তে চীন কঠোর নিয়ম চালু করেছে৷ করোনা হলে একেবারে বিচ্ছিন্ন থাকতে হবে৷ এমনকি যে বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট বা এলাকায় আক্রান্ত ব্যক্তি থাকবেন সেখানকার সব কোয়ারান্টাইনের আওতায় থাকবে৷ মিনহাং এর অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই লকডাউন নিয়ে তাদের আশংকার কথা জানিয়েছেন৷ তাদের আশংকা যদি ওই শহরে একজনেরও দেহে করোনা শনাক্ত হয়, তাহলে দীর্ঘ সময় লকডাউনে থাকতে হবে তাদের৷
তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এমন কোন আশংকার কারণ নেই৷ পরীক্ষা হওয়া মাত্র ধীরে ধীরে এলাকা ধরে লকডাউন তুলে নেয়া হবে৷
এদিকে, সাংহাই শহর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে৷ সাবওয়ে, বাস চলাচল করছে৷ মানুষ অফিসে যাওয়া শুরু করেছে৷ বেইজিংও ফিরে এসেছে স্বাভাবিক জীবনে৷
মেট্রো স্টেশন, বাস রুট বন্ধ করলো বেইজিং
চীনের বেইজিংয়ে লকডাউন এড়াতে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে৷ বুধবার সেখানে ৪০টি মেট্রো স্টেশন ও ১৫৮টি বাস রুট বন্ধ করা হয়েছে৷
ছবি: Yomiuri Shimbun/AP/picture alliance
করোনা পরীক্ষা
চীনের বেইজিংয়ে প্রায় দুই কোটি ২০ লাখ মানুষ বাস করেন৷ সেখানে করোনা ঠেকাতে গণহারে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে৷
ছবি: Yomiuri Shimbun/AP/picture alliance
স্কুল বন্ধ
সংক্রমণ বেশি থাকা এলাকায় স্কুলসহ কিছু আবাসিক ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ ছবিতে একটি আবাসিক এলাকায় ব্যারিকেড দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: CARLOS GARCIA RAWLINS/REUTERS
বন্ধ হলো মেট্রো, বাস
বুধবার বেইজিংয়ে ৪০টি মেট্রো স্টেশন ও ১৫৮টি বাস রুট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷
ছবি: Andy Wong/AP/picture alliance
লকডাউন এড়াতে
চীনের সবচেয়ে বড় শহর সাংহাইতে এক মাসের বেশি সময় ধরে লকডাউন চলছে৷ লকডাউন দেয়ার আগে কিছু ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল৷ কিন্তু সফল না হওয়ায় লকডাউন দেয়া হয়৷ বেইজিংও সাংহাইয়ের মতো লকডাউন এড়ানোর চেষ্টা করছে৷ লকডাউন হতে পারে এই আশঙ্কায় বেইজিংবাসী নিত্যপণ্য কিনে ঘরে জমা করছেন৷
ছবি: Kevin Frayer/Getty Images
সাংহাইয়ে লকডাউন
সাংহাইয়ের জনসংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি৷ লকডাউনের কারণে সেখানকার অধিকাংশ মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছেন না৷ তবে রোববার থেকে কিছু এলাকায় এক পরিবারের মাত্র একজনকে কিছুক্ষণের জন্য বাইরে বের হতে ও সুপারমার্কেটে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হচ্ছে৷
ছবি: Aly Song/REUTERS
ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি
করোনা ঠেকাতে সাংহাইয়ে লকডাউন ও বেইজিংয়ে কড়াকড়ির কারণে স্থানীয় ও বিশ্ব অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকোনমিকস জানিয়েছে, চীনের মোট রপ্তানির প্রায় ৮০ শতাংশের সঙ্গে জড়িত এলাকা করোনা বিধিনিষেধের আওতায় পড়েছে৷ ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ফিচ রেটিংস চীনের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৪.৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪.৩ শতাংশ করেছে৷ চীনের অফিসিয়াল লক্ষ্য ৫.৫ শতাংশ৷
ছবি: AFP/Getty Images
কয়েক ডজন শহরে বিধিনিষেধ
বর্তমানে চীনের কয়েক ডজন বড় শহরে পুরোপুরি বা আংশিক লকডাউন চলছে৷ অ্যাপলের আইফোন তৈরি করা চীনা কোম্পানি ফক্সকনের শহর জেংজৌতে মঙ্গলবার থেকে আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য ঘরে-বসে-অফিস ও অন্যান্য বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে৷ জেংজৌর জনসংখ্যা প্রায় এক কোটি ২৬ লাখ৷