উহানের গবেষণাগার থেকে করোনার ভাইরাস ছড়ায়নি। তবে করোনার উৎস এখনো জানতে পারেনি ডাব্লিউএইচও-র প্রতিনিধি দল।
বিজ্ঞাপন
করোনা ভাইরাসের উৎস নিয়ে অ্যামেরিকার দাবিকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে জানালো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)। তাদের দাবি, উহানের যে গবেষণাগার থেকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে বলে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার দাবি করেছেন, তা মিথ্যা।
প্রশ্ন-উত্তরে করোনার টিকা
করোনার টিকা কি হালাল, শিশু ও গর্ভবতীরা কি টিকা নিতে পারবে, টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি, কতদিন স্বাস্থ্য়বিধি মানতে হবে- এমন সব প্রশ্নের উত্তর থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: Leon Neal/Getty Images
কতগুলো টিকা অনুমোদন পেয়েছে
ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন বায়োনটেক-ফাইজার, মডার্না ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, এই তিন টিকার অনুমোদন দিয়েছে৷ এর বাইরে রাশিয়া স্পুটনিক ৫ ও চীন সিনোভ্যাক টিকার অনুমোদন দিয়েছে৷
ছবি: Sven Hoppe/dpa/picture alliance
পার্থক্য
বায়োনটেক-ফাইজার ও মডার্নার টিকা হচ্ছে এমআরএনএ টিকা৷ মডার্নার টিকা ঘরের রেফ্রিজারেটরে সর্বোচ্চ ৩০ দিন পর্যন্ত রাখা যায়৷ বায়োনটেক-ফাইজারের টিকার মতো মডার্নার টিকাকে পরিবহনের সময় মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে হয় না৷ আর অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটি ভেক্টর ভাইরাস টিকা, যা সাধারণ রেফ্রিজারেটরে রাখা যায়৷
ছবি: ULMER Pressebildagentur/picture alliance
দ্বিতীয় ডোজে অন্য টিকা?
তিনটি টিকার ক্ষেত্রেই দুটো করে ডোজ দিতে হয় এবং ডোজ দুটো একই টিকার হতে হবে৷ কারণ দুই ডোজে দুই ধরনের টিকা নিলে কী হতে পারে সে বিষয়ে এখনও কোনো তথ্য নেই৷
ছবি: TASR/dpa/picture alliance
করোনা হলেও টিকা নিতে হবে?
হ্যাঁ, নেয়া ভালো৷ কারণ একবার সংক্রমিত হলে পরে আর হবে না, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই৷
ছবি: Abdesslam Mirdass/Hans Lucas/imago images
কী অবস্থায় টিকা নেয়া যাবেনা?
করোনায় আক্রান্ত অবস্থায় এবং সাধারণ সর্দি, কাশি ও জ্বর থাকলে সেই সময় টিকা নেয়া যাবে না৷ কোয়ারান্টিনে থাকার সময়ও টিকা নেয়া যাবে না৷ যাদের কোনো বিষয়ে অ্যালার্জি আছে তাদের বেশিরভাগই টিকা নিতে পারবেন৷
ছবি: Markus Schreiber/AP Photo/picture alliance
শিশুদের টিকা?
টিকাগুলো ১৬ বছর বা তার বেশি বয়সিদের দেয়ার জন্য অনুমোদন পেয়েছে৷ শিশুদের টিকা দেয়ার বিষয়ে গবেষণা চলছে বলে জানিয়েছে জার্মানির রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট৷
ছবি: Getty Images/S. Gallup
গর্ভবতীরা টিকা নিতে পারবেন?
‘জার্মান স্ট্যান্ডিং কমিশন অন ভ্য়াকসিনেশন’ বা স্টিকো গর্ভবতীদের টিকা নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেনা৷ আবার না-ও করছেনা৷ তবে গর্ভবতী মায়েদের মধ্যে যাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে তারা ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে ঝুঁকি-লাভ বিবেচনা করে টিকা নিতে পারেন বলে জানিয়েছে স্টিকো৷ এদিকে, এমআরএনএ টিকা গর্ভবতী মা ও গর্ভের শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিশ্বাস করেননা বিশেষজ্ঞরা৷ তবে এ বিষয়ে এখন প্রাণীর উপর গবেষণা চলছে৷
টিকা নেয়ার পর তিনদিনের মধ্যে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে৷ যেমন টিকার স্থান ফুলে যাওয়া, মাথাব্য়াথা, জ্বর, দুর্বল লাগা ইত্যাদি৷ তবে দুদিনের মধ্যে এগুলো সেরে যাবার কথা৷
ছবি: Imago Images/M. Eichhammer
অন্য টিকা নিতে কতদিন অপেক্ষা?
ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাম, রুবেলা কিংবা টিটেনাসের টিকা নিতে চাইলে করোনার টিকা নেয়ার আগে বা পরে ১৪ দিন অপেক্ষা করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা৷
ছবি: imago/blickwinkel
টিকা হালাল?
ফাইজার, মডার্না ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার মুখপাত্ররা টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে নিশ্চিত করেছেন তাদের টিকায় শূকরের কিছু নেই৷
ছবি: Dominic Lipinski/picture-alliance
টিকা নেয়ার পরও হাত ধোঁয়া, মাস্ক পরতে হবে?
টিকা আপনাকে কতদিন রক্ষা করতে পারে সে বিষয়ে এখনও কোনো গবেষণা নেই৷ তাই টিকা নিলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা চালিয়ে যেতে হবে৷
ছবি: Michel Kappeler/REUTERS
11 ছবি1 | 11
বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে চীনে করোনা ভাইরাসের উৎসের সন্ধানে অভিযান চালিয়েছে ডাব্লিউএইচও-র কর্মকর্তারা। উহান সহ দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে তাঁরা গেছেন। উহানের গবেষণাগার, পশুপাখির বাজার সর্বত্রই তাঁরা গেছেন। পরীক্ষা করেছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত করোনার উৎসের সন্ধান তাঁরা পাননি। ডাব্লিউএইচও কর্মকর্তাদের ধারণা, পশুর শরীর থেকে বাঁদুরের শরীর ঘুরে ভাইরাসটি মানুষের শরীরে পৌঁছেছে। কিন্তু ঠিক কোন জায়গায় কী ভাবে তা হয়েছে, কী ভাবে তা ছড়িয়ে পড়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে উহানের গবেষণাগার থেকে যে ভাইরাস ছড়ায়নি, তা কার্যত প্রমাণিত বলেই দাবি করেছেন তাঁরা।
ডাব্লিউএইচও-র দলে ছিলেন প্রাণীবিজ্ঞানী পিটার ডাসজাক। বুধবার এক টুইটে তিনি লেখেন, 'চীনের প্রতি জো বাইডেনও শক্ত হওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু মার্কিন গোয়েন্দারা করোনা নিয়ে যা বলছেন, তাতে কান দেওয়ার অর্থ নেই।'
ডাব্লিউএইচও-র দাবি, করোনা নিয়ে চীন বেশ কিছু সূত্র দিয়েছে। আপাতত সেই সূত্র ধরেই ভাইরাসটির উৎসের সন্ধান চলছে। অ্যামেরিকার অবশ্য বক্তব্য, ডাব্লিউএইচও-র গবেষণায় অতিরিক্ত নাক গলাচ্ছে চীন। যা অভিপ্রেত নয়। বস্তুত, এর আগে ডাব্লিউএইচও-র দুই কর্মকর্তাকে চীনে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। যে দলটি চীনে গিয়ে কাজ করছে, তাদেরও কার্যত ঘিরে রাখা হচ্ছে সারাক্ষণ। সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাদের কথাও বলতে দেওয়া হচ্ছে না। ডাব্লিউএইচ-র প্রকাশিত ছবি থেকেই বিষয়টি স্পষ্ট।