লাগাতার তিনদিন ধরে তাপপ্রবাহ চলছে জাপানের রাজধানীতে। হাসপাতালে ভর্তি বহু। দুইজনের মৃত্যু।
বিজ্ঞাপন
তাপপ্রবাহে ভয়াবহ পরিস্থিতি জাপানের রাজধানী টোকিওতে। মঙ্গলবার তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার করে যায়। তার সঙ্গে প্রায় গোটা দিন ধরেই চলতে থাকে তাপপ্রবাহ। এরই মধ্যে জাপানের প্রশাসন জানিয়েছে, গরমের জন্য মানুষ অত্যধিক মাত্রায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র ব্যবহার করছেন। যার জেরে বিদ্যুৎঘাটতি শুরু হয়েছে। এমন চলতে থাকলে গোটা টোকিও শহর অন্ধকার করে দিতে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
৫০ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই দিল্লি, কলকাতাও গরমে কাহিল
প্রবল গরমে বিপর্যস্ত ভারত। রোববার দিল্লিতে দুই জায়গায় তাপমাত্রা ছিল ৪৯ ডিগ্রি। পুরো উত্তর ভারতে তাপপ্রবাহ চলছে। কলকাতাও ৪০ ডিগ্রি গরমে হাঁসফাঁস করছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
গরমের হাত থেকে বাঁচতে
উত্তর ভারত ভয়াবহ তাপপ্রবাহের কবলে। রাজধানী জ্বলছে। দিল্লির নজফগড়ে তাপমাত্রা ছিল ৪৯ দশমিক এক এবং উত্তরপশ্চিম দিল্লিতে ৪৯ দশমিক দুই ডিগ্রি। রাজধানীর বাকি জায়গায় তাপমাত্রা ছিল ৪৭ থেকে ৪৮ দশমিক চার ডিগ্রি। রোববারই এই বছরের সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল দিল্লিতে। আবহাওয়া অফিস বলছে, তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে। এই তাপপ্রবাহের হাত থেকে বাঁচতে একটাই উপায়। ঠান্ডা জলধারায় স্নান।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
আবহাওয়া অফিসের সাবধানবাণী
আবহাওয়া অফিস উত্তর-পশ্চিম দিল্লির জন্য কমলা সতর্কতা ও রাজস্থানের জন্য সর্বোচ্চ লাল সতর্কতা জারি করেছে। উত্তর-পশ্চিম ভারতের মধ্যে দিল্লি ছাড়াও পাঞ্জাব, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ পড়ছে। উত্তরপ্রদেশেও তাপপ্রবাহ চলছে। এই গরমে সমানে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। শরীর ঠিক রাখতে প্রচুর পরিমাণ জল খেতে হচ্ছে। রাস্তায় বেরোলেই সমানে জল খাচ্ছেন মানুষজন।
যখন তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি হয় এবং তা স্বাভাবিকের থেকে চার-পাঁচ ডিগ্রি বেশি থাকে, তখন তাপপ্রবাহ ঘোষণা করা হয়। উত্তর ভারতে এখন তাপপ্রবাহ চলছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বাড়ির বাইরে ফ্রিজ রেখে
কলকাতার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের ছবি। বাড়ির বাইরে একমাসের জন্য ফ্রিজ রেখে দিয়েছিলেন তৌসিফ রহমান। স্থানীয় মানুষ সেখানে বোতলে জল রেখে দিচ্ছেন। প্রবল গরমে ঠান্ডা জল খেয়ে তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
সরবতের চাহিদা
তৃষ্ণা মেটাতে সরবতের জুড়ি নেই। সরবতে ব্যবহার করা হচ্ছে প্রচুর পরিমাণ বরফ। তাপপ্রবাহে সরবত, কুলফি, ডাব, ঠান্ডা পানীয়ের চাহিদা তুঙ্গে। দিল্লিতে একটি ডাব কিনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দিয়ে। কলকাতাতেও ৬০ টাকার কমে ডাব পাওয়া যাচ্ছে না।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
এসি-র চাহিদা
গরমের হাত থেকে বাঁচতে এয়ারকন্ডিশনার বা এসি-র চাহিদা তুঙ্গে। এসি যারা সারাই করেন, তারাও এখন খুবই ব্যস্ত। বিভিন্ন বাড়ি থেকে তাদের কাছে ডাক আসছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
ছাতা ভরসা
এই গরমে রোদের হাত থেকে ভরসা সেই আদি ও অকৃত্রিম ছাতা।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
ছায়া খুঁজে ঘুম
গরম মানেই অলস দুপুরে একটু ঘুমিয়ে নেয়া। বন্ধ দোকানের সামনে ছায়া পেয়ে এই মানুষটি ঠিক সেই কাজটাই করছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কলকাতার গঙ্গায়
এই সময় দুপুরের তাপ থেকে শান্তি দিতে ভরসা গঙ্গা। কলকাতার গঙ্গায় গরমের দুপুরের পরিচিত দৃশ্য ধরা পড়েছে এই ছবিতে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
9 ছবি1 | 9
এবছর রেকর্ড তাপপ্রবাহ হচ্ছে টোকিওতে। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। এখনো পর্যন্ত ৭৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এত গরম দেখার অভ্যাস নেই টোকিওর। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্রের ব্যবহারও আগে এত ছিল না। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে গরম ক্রমশ বাড়তে শুরু করে। ২০১৮ সালে প্রথম তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেছিল। তারপর থেকেই ঘরে ঘরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র কেনা শুরু হয়।
জাপানে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়, তাতে এত শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র সাপোর্ট করা সম্ভব নয়। সে কারণেই সকলকে বিদ্যুতের কথা মাথায় রাখার আবেদন জানিয়েছে প্রশাসন। বলা হয়েছে, বয়স্ক মানুষদের আরাম প্রয়োজন। তারা সারাদিন শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু বাকিদের একটু সতর্ক থাকতে হবে। বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে না পারলে গোটা টোকিও অন্ধকার করে দিতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।