দিল্লিতে লোকসভা নির্বাচন ২৫ মে। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী সেসময় তাপপ্রবাহ চলবে, গরম হাওয়া বইবে। রেড অ্যালার্টের মধ্যেই ভোট হবে। এছড়া হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশেও রেড অ্যালার্টের মধ্যেই ভোট হবে। ফলে এই রাজ্যগুলিতে মানুষকে প্রবল গরম উপেক্ষা করে ভোট দিতে হবে।
এছাড়া ২৫ তারিখ বিহার, ঝাড়খন্ড, ওড়িশা, জম্মু ও কাশ্মীর ও পশ্চিমবঙ্গের কিছু কেন্দ্রে ভোট।
আবহাওয়া অফিস থেকে বলা হয়েছে, দিল্লি-সহ পাঁচ রাজ্যে আগামী পাঁচ দিন মানুষ তীব্র গরমের হাত থেকে রক্ষা পাবেন না। এই পাঁচ রাজ্যে তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রিতে পৌঁছাবে। বেলা ১১টা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত মানুষকে ঘরের ভিতরে থাকতে বলা হয়েছে। না হলে অত্যাধিক গরমে শরীর খারাপ হতে পারে।
প্রচণ্ড গরম ও বৃষ্টির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ভোট
প্রচণ্ড গরম। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। তাই বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছিল কমিশন। এর মধ্যেই শুরু বৃষ্টি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
স্বস্তি দিতে কুলার
গরমের হাত থেকে ভোটদাতাদের স্বস্তি দিতে নির্বাচন কমিশন বুথে কুলারের ব্যবস্থা করেছিল। ভোটের লাইনে যাতে একটু ঠান্ডা হাওয়া পান ভোটদাতারা, তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা। আর পশ্চিমবঙ্গের ভোটকেন্দ্রগুলিতে সকাল থেকে লম্বা লাইনও পড়েছিল।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কালো মেঘ
কিন্তু বেলা একটু বাড়তে আকাশে কালো মেঘ। তারমধ্যেই এই নিরাপত্তারক্ষীরা সজাগ দৃষ্টি রাখছিলেন পরিস্থিতির দিকে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
শুরু হলো বৃষ্টি, বুথের সামনে জল
এরপর শুরু হলো তুমুল বৃষ্টিতে বুথের সামনে জল জমে গেল। সেই জল টপকে আসার জন্য সাহায্য করছেন নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীরা।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বৃষ্টির পর
বৃষ্টির পর গুমোট বাড়লো। অনেক জায়গায় জল জমলো। ফলে ভোট দিতে আসা মানুষরা কিছুটা অসুবিধার মধ্যে পড়লেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
লম্বা লাইন
তা সত্ত্বেও বুথগুলিতে ছিল লম্বা লাইন। সকাল থেকেই মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন। গরম হোক বা বৃষ্টি, নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে তারা পিছিয়ে থাকেননি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
প্রচুর সংখ্যায় মেয়েরা
পুরুষদের মতো লাইনে নারীদের সংখ্যাও ছিল যথেষ্ট। তারাও ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিলেন না।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
রবীন্দ্রনাথ, নেতাজির ছবির সামনে
বিভিন্ন প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্কুলে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র হয়েছিল। সেখানকার দেওয়ালে আঁকা ছিল রবীন্দ্রনাথ, নেতাজির ছবি। তার সামনেই লম্বা লাইন। সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের প্রহরা। বিক্ষোভ, স্লোগান, অভিযোগ, তর্ক-বিতর্ক, বোমাবাজির বাইরে ভোটের আলাদা একটা মেজাজ ফুটে উঠেছিল এই সব বুথে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
7 ছবি1 | 7
চিকিৎসকদের পরামর্শ, এই সময়ে প্রচুর জল খেতে হবে। লেবুর সরবৎ খাওয়া ভালো। হালকা সুতির পোশাক পরা উচিত।
নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা
প্রচণ্ড গরমে ভোট দিতে যাতে মানুষের কষ্ট না হয়, তার জন্য নির্বাচন কমিশন বুথে কুলারের ব্যবস্থা করেছে। মিস্ট ফ্যান ও ঠান্ডা পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক দলগুলির আশঙ্কা
রাজনৈতিক দলগুলিও চিন্তায়। দিল্লির বিজেপি নেতা সলিল নন্দী ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''সকাল সাতটা থেকে নয়টার মধ্যেই ভোটদাতারা বেশি করে বুথে আসবেন। তারপর বিকেল পাঁচটা থেকে ছয়টায় আবার কিছু ভোট পড়বে। যা গরম পড়েছে তাতে খুব বেশি মানুষ দুপুরে ভোট দিতে বেরোবেন বলে মনে হচ্ছে না।''
তাপপ্রবাহের মধ্যে যেভাবে প্রচার করছেন প্রার্থীরা
পশ্চিমবঙ্গ-জুড়ে তাপপ্রবাহ চলছে। গরম হাওয়া বইছে। তার মধ্যেই চলছে ভোটপ্রচার।
ছবি: Subrata Goswami/DW
খেতে হচ্ছে ডাব
ভরদুপুরে প্রচার করছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাপমাত্রা তখন ৪৩ ডিগ্রি। গরম হাওয়া বইছে। সেই সময় গরমের হাত থেকে বাঁচতে প্রচারের ফাঁকে ডাবের জল খাচ্ছেন সেলিম।
ছবি: Subrata Goswami/DW
মাথায় টুপি পরতেই হচ্ছে
বহরমপুরে প্রচার করছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তখন সকাল সাড়ে নয়টা বাজে। অধীর খোলা জিপে উঠলেন। রোদের হাত থেকে বাঁচতে মাথায় টুপি ছিল। এখন টুপি ছাড়া, সকালে বা দুপুরে প্রচার করার প্রশ্নই উঠছে না।
ছবি: Goutam Hore/DW
গ্লুকোজ দেয়া জল
শুধু তো নেতা নন, কর্মীরাও এই রোদে হাঁটছেন। সাধারণ মানুষ নেতাদের দেখতে আসছেন। তাদের সকলের জন্য জলে গ্লুকন ডি গোলা হচ্ছে। শরীরে জলের পরিমাণ ঠিক রাখতে হবে। না হলেই শরীর খারাপ হয়ে যাবে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
চোখে-মুখে জলের ঝাপটা
কখনো খোলা জিপে ঘুরছেন। কখনো আবার হাঁটতে হচ্ছে। গরম হাওয়া লাগছে। তাই মাঝেমধ্যেই চোখে-মুখে জল দিতে হচ্ছে। গরমের হাত থেকে বাঁচার জন্য। মুর্শিদাবাদে মহম্মদ সেলিমের ছবি।
ছবি: Subrata Goswami/DW
ছায়ায় রচনা
হুগলিতে প্রচার করছিলেন রচনা। তার গাড়ি গিয়ে দাঁড়ালো একটা আদিবাসী গ্রামে। ছায়ায় গিয়ে দাঁড়ালেন অভিনেত্রী। তারপর চললো ছবি তোলা পর্ব।
ছবি: Goutam Hore/DW
নতুন অভিজ্ঞতা
রচনা বলছিলেন, এই গরমে এইভাবে প্রচার করাটা তার কাছে একটা নতুন অভিজ্ঞতা। এমনিতে অভিনয় করার সময় নাচ-গান বা অন্য শট দিতে হয়। কিন্তু প্রতিদিন এইভাবে এতটা গরমের মধ্যে প্রচার করার অভিজ্ঞতা তার কাছে একেবারে নতুন।
ছবি: Goutam Hore/DW
মানুষের মাথায় ছাতা
গরমে যারা বেরোচ্ছেন তাদের মাথায় থাকছে ছাতা। চোখে সানগ্লাস বা রোদচশমা থাকলে ভালো হয়। উপরের ছবিটি মালদহের চরের। সেখানে বেরোলে ছাতা চাইই।
ছবি: Goutam Hore/DW
গলায় গামছা
সেলিমের মতো অনেকেই গলায় গামছা রাখছেন। ঘাম মোছার কাজে লাগছে। চোখে-মুখে জল দেয়ার পর গামছা দিয়ে মুখ মুছে নেয়া যাচ্ছে। অনেক সময় রোদের হাত থেকেও বাঁচাচ্ছে এই গামছা।
ছবি: Goutam Hore/DW
এভাবেই প্রচার চলছে
সকাল থেকে এভাবেই প্রচার করছেন প্রার্থীরা। তাদের তো মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। তাই প্রচারে বিরাম নেই। প্রচুর জল খাচ্ছেন সবাই। কারণ, শরীরটাকে তো ঠিক রাখতে হবে। ইউসুফ পাঠানও তাই টুপি পরতে ভুলছেন না।
ছবি: Subrata Goswami/DW
9 ছবি1 | 9
দিল্লির আপ নেতা অনুপ ঠাকুর ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''এখন দুপুরের দিকে মানুষ নিতান্ত দরকার ছাড়া বেরোতে চাইছেন না। সকাল দশটার আগে বা বিকেল সাড়ে চারটের পর মানুষ বেশি করে ভোট দেবেন বলে মনে হচ্ছে। দুপুরের দিকে বুথগুলি ফাঁকা থাকবে বলেই মনে হয়।''
দুজনেই মনে করছেন, দিল্লিতে গরমের জন্য ভোটের হার কমলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।