‘গরিবের পোপ' কতটা হতে পেরেছিলেন ফ্রান্সিস?
২২ এপ্রিল ২০২৫
২০১৩ সালের মার্চ মাসে অনেক সম্ভাবনা নিয়ে পোপ-এর দায়িত্ব গ্রহণ করেন ফ্রান্সিস৷ সোমবার তার মৃত্যু হয়েছে৷ পোপ হওয়ার পর ইস্টারের আগে এক বন্দি শিবিরে দণ্ডপ্রাপ্ত তরুণদের পা ধুয়ে দিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি৷
সে বছরের জুলাইয়ে রিও ডি জানেইরোতে ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ ডে-তে অংশ নিয়েছিলেন বেশ কয়েক লাখ মানুষ৷ পোপ সেখানে গরিবের জন্য সুযোগের কথা বলেন এবং পুঁজিবাদের সমালোচনা করেন৷
ব্রাজিলের ধর্মতত্ত্ববিদ লিওনার্দো বফি সেসময় ডয়চে ভেলেকে বলেছিলেন, ‘‘এই পোপ চার্চ বদলে দেবেন৷''
ফ্রান্সিস, আগে যার নাম ছিল হর্খে মারিও ব্যার্গোগলিও, চার্চে কিছু পরিবর্তন আনতে পেরেছেন৷
‘‘বুয়েন্স আইরিসের আর্চবিশপ থাকাকালীন পোপ গরিবের জন্য অনেক কিছু করেছিলেন,'' ফ্রান্সিসকে নিয়ে বই লেখা আর্জেন্টিনার সাংবাদিক মিগায়েল হার্শ ডয়চে ভেলেকে বলেন এ কথা৷
তিনি বলেন, ‘‘তিনি দ্রুততার সঙ্গে অনেক কিছু করেছেন৷ এর মধ্যে রয়েছে চল্লিশটার মতো সফর, যার অধিকাংশই বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে৷ এবং তিনি বারংবার পুঁজিবাদী ব্যবস্থার নিন্দা করেছেন৷''
তবে এক দশকের বেশি সময় ধরে ক্যাথলিক চার্চের প্রধানের দায়িত্ব পালনকালে তিনি গ্লোবাল সাউথের অনেক প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি৷
জলবায়ু পরিবর্তনকে বিশেষভাবে অগ্রাধিকার দিয়েছেন ফ্রান্সিস৷ জার্মান ক্যাথলিক ত্রাণ সংগঠন মিসেরিওরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, পোপের অন্যতম বড় অর্জন হচ্ছে, পরিবেশের উপর মনোযোগ আকর্ষণ করাতে পারা৷
মিসেরিওর মনে করে, দারিদ্র্য এবং পরিবেশগত ক্ষতির বিষয়টি একত্রে বিবেচনা করার ব্যাপার৷ ২০১৫ সালে প্রকাশিত পোপের এক চিঠিতে এটাই ছিল মূল বার্তা৷
আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, ২০১৩ সাল অবধি কার্ডিনালদের অধিকাংশই ছিলেন ইউরোপীয়৷ তবে পোপ হওয়ার পর ফ্রান্সিস লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা এবং এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কার্ডিনাল নিয়োগ দিয়েছেন৷
তবে ক্যাথলিক চার্চে কোনো নাটকীয় পরিবর্তন আনেননি তিনি৷ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বিবাহিত পুরুষদের যাজক এবং নারীদের পুরোহিত করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি৷
ক্যাথলিক চার্চে যৌন নিগ্রহের ঘটনা নিয়ন্ত্রণেও কড়া উদ্যোগ নিতে পারেননি পোপ ফ্রান্সিস৷
তবে তিনি বিশ্বের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন৷
প্রতিবেদন: অ্যাস্ট্রিড প্রাঞ্জ জ্যলিভেরা/এআই