করোনা সংকটে বিপর্যস্ত বিশ্ব অর্থনীতি৷ কোটি কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে নেমে গেছে৷ বেড়েছে রোগশোক ও দুর্ভিক্ষ৷ দরিদ্র দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাই সহায়তা বাড়ানোর চিন্তা করছে জার্মানি৷
বিজ্ঞাপন
গত কয়েকদিন ধরে জার্মানির সংসদে এ নিয়ে আলোচনা ও বিতর্ক চলছে৷ জার্মান সরকার এরইমধ্যে আগামী দুই বছরের জন্য ৩৩৫ কোটি মার্কিন ডলার আর্থিক সহায়তা তহবিল অনুমোদন দিয়েছে৷ বুধবার ওই অনুমোদন দেওয়া হয়৷
জার্মান উন্নয়নমন্ত্রী গ্যার্ড ম্যুলার বলেন, ‘‘অর্থনৈতিক বিপর্যয় এবং খাদ্যাভাবের বিরুদ্ধে উন্নয়নশীল দেশগুলোর লড়াইয়ে আমরা সহায়তা করছি৷ জার্মানি বিশ্বের প্রতি নিজেদের দায়িত্ব পালন করছে৷’’
বেশিরভাগ সদস্য উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোর প্রতি সরকারের আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধির পক্ষে এবং তারা চাইছেন সাহায্য তহবিল আরো বাড়ানো হোক৷ এ বিষয়ে বিভিন্ন দল থেকে সংসদে পাঁচটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এবং শুক্রবার মূলত সেগুলো নিয়েই আলোচনা হওয়ার কথা৷
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের দল সিডিইউ-র সংসদ সদস্য গেওর্গ কিপেলস ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘করোনা সংকটে ইউরোপে অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে তা সারিয়ে তুলতে সরকার থেকে প্রচুর আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে৷ কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোর পক্ষে সেটা সম্ভব না৷
‘‘সেসব দেশে অনেক মানুষ বেকার হয়ে পড়ায় তাদের জীবনমান বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়ে গেছে,’’ বলেন গেওর্গ কিপেলস৷
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী করোনা সংকটে আফ্রিকার প্রায় তিন কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে৷ অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, আইএমএফ এপ্রিলে দেওয়া এক পূর্বাভাসে বলেছিল, করোনা সংকটের কারণে গত ৬০ বছরের মধ্যে প্রথমবার এশিয়ার অর্থনীতিতে কোনো প্রবৃদ্ধি হবে না৷
ডানিয়েল পেৎজ/এসএনএল
জার্মানিতে বাংলাদেশিদের পরিসংখ্যান
জার্মানির পরিসংখ্যান অফিস ‘ডেস্টাটিস’ বলছে, ২০১৯ সালে ২২৫ জন বাংলাদেশি জার্মানির নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন৷ জার্মানিতে বাংলাদেশিদের বসবাসের সংখ্যাও জানিয়েছে তারা৷
ছবি: DW/A. Mita
রেকর্ড সংখ্যক বাংলাদেশি
জার্মানির পরিসংখ্যান অফিস ‘ডেস্টাটিস’ বলছে, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী ১৫ হাজার ৭১০ জন জার্মানিতে ছিলেন, যা যে-কোনো সময়ের চেয়ে বেশি৷ ছবিতে কেমনিৎস প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Privat
২০১৫ থেকে দুই অংকে
ডেস্টাটিসের কাছে ১৯৮১ সাল থেকে বাংলাদেশিদের হিসাব রয়েছে৷ এতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো জার্মানিতে থাকা বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীর সংখ্যা ১০ হাজারের মাত্রা অতিক্রম করে৷ ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর সংখ্যাটি ছিল ১১ হাজার ৪৮৯ জন৷ এরপর প্রতিবছর সংখ্যাটি বেড়েছে৷ ছবিতে গ্যোটিঙ্গেন শহরে বাংলাদেশিদের আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের দৃশ্য দেখতে পাচ্ছেন৷
ছবি: Azizur Rahman
দক্ষিণ এশিয়ার হিসাব
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর জার্মানিতে বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৭১০৷ ঐদিন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ দুই লাখ ৬৩ হাজার ৪২০ জন জার্মানিতে ছিলেন৷ এছাড়া ভারতের ছিলেন এক লাখ ৪৩ হাজার ৭২৫ জন, পাকিস্তানের ৭৫ হাজার ৪৯৫ ও নেপালের আট হাজার ১২০ জন৷
ছবি: DW/Ravi Ranjan
নাগরিকত্বের হিসাব
২০১৯ সালে ২২৫ জন বাংলাদেশি জার্মানির নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন৷ নাগরিকত্ব বিষয়ে ডেস্টাটিসের কাছে ২০০০ সাল থেকে হিসাব পাওয়া যায়৷ এতে দেখা যাচ্ছে, ২০০৮ সালে ১০১ জন বাংলাদেশি জার্মানির নাগরিকত্ব নিয়েছিলেন, যা সর্বনিম্ন৷ আর সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি জার্মানির নাগরিক হয়েছেন ২০০১ সালে (২৭০ জন)৷
ছবি: DW/A. Mita
দক্ষিণ এশীয়দের নাগরিকত্ব গ্রহণ
২০১৯ সালে আফগানিস্তানের দুই হাজার ৬৭৫ জন জার্মানির নাগরিকত্ব নেন, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ৷ এরপরে আছে ভারত, দুই হাজার ১৩০ জন৷ এছাড়া পাকিস্তানের এক হাজার ৭৯০, শ্রীলঙ্কার ৬৬০ ও নেপালের ১০৫ জন জার্মানির নাগরিকত্ব নিয়েছেন৷ ছবিতে স্টুটগার্টে অনুষ্ঠিত ভারতীয় চলচ্চিত্র উৎসবের একটি দৃশ্য দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: DW/V. Kumar
বিশ্বের হিসাব
২০১৯ সালে ১৮৩ দেশের এক লাখ ২৮ হাজার ৯০৫ জন জার্মানির নাগরিকত্ব নেন, যা ২০০৩ সালের পর সর্বোচ্চ৷ ঐ বছর এক লাখ ৪০ হাজার ৭০০ জন জার্মানির নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন৷
ছবি: Imago/STPP
সবচেয়ে বেশি তুরস্কের
২০১৯ সালে তুরস্কের ১৬ হাজার ২০০ জন জার্মানির নাগরিক হয়েছেন, যা সর্বোচ্চ৷ এরপরেই আছে ব্রিটেন (১৪ হাজার ৬০০), পোল্যান্ড (ছয় হাজার) ও রোমানিয়া (পাঁচ হাজার ৮০০)৷