একটি গরুর ফুটবল নৈপুণ্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ছড়িয়ে পড়েছে৷ শিরোনাম হয়েছে এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডেসহ বহু সংবাদমাধ্যমে৷
ভিডিওতে দেখা যায়, গোয়ার একটি কর্দমাক্ত মাঠে অনেকক্ষণ ধরে বল পায়ে আটকে রেখেছে গরুটি৷ সেখানকার অল্প বয়সি খেলোয়াড়দের কেউ এগিয়ে এলে গরুটি তাদের তাড়া করছিল৷
মাঝের সময়ে মুখ আর পা দিয়ে ড্রিবলিং করতে দেখা যায় গরুটিকে৷ এক পর্যায়ে বল থেকে তার মনোযোগ অন্যদিকে সরলে একজন যুবক বলে শট করে এবং আরেকজনকে দেয়৷
এরপরও থেমে যায়নি গরু খেলোয়াড়৷ দৌড়ে গিয়ে পুনরায় বল নিজের করে নিতে সক্ষম হয়৷ এভাবে প্রায় দেড় মিনিট নিজের কাছে রাখে সে৷
ক্রিকেটের ধারাভাষ্যকার হার্ষা ভোগলে ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, ''এখন দিনের সবচেয়ে মজার জিনিস দেখবেন আপনি৷''
গরুটির ফুটবল দখলে রাখার বর্ণনায় একজন টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘‘এমনকি মেসি ও ফুলানি হেডসম্যানরাও গরুটির কাছ থেকে বল নিয়ে যেতে পারবে না৷''
''এই গরু ফুটবল ভালোবাসে, আপনার সাহস হবে না তার কাছ থেকে বল নেওয়ার,'' মজা করে লিখেছেন আরেকজন৷
প্রতি বছর জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে গরুর দৌড় হয়৷ সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গরুর দৌড় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে৷ কিন্তু লোকজন যেভাবে গরুর দৌড় নিয়ে উৎসাহিত তাতে কি এটা আদৌ বন্ধ করা যাবে?
ছবি: DW/S. Bandopadhyayপ্রতি বছর জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে গরুর দৌড় হয়৷ বর্ষার আগমন উদযাপন করতে চালু হয়েছিল এই প্রথা, যেহেতু বর্ষা কৃষিকাজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayযদিও গ্রামের বয়স্করা বলেন, প্রখর গ্রীষ্মে শুকিয়ে যাওয়া জমির উপরিভাগ একটু ভেঙে নিলে বৃষ্টির জল ভিতরে ঢুকতে পারবে এবং পরে লাঙল দিতে সুবিধে হবে - সেই তাগিদ থেকেই শুরু হয়েছিল গরুর দৌড়৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayকিন্তু এখন চাষের কাজে যন্ত্রচালিত লাঙলই ব্যবহার হয়৷ গরুর দৌড় তাই থেকে গিয়েছে একটা ক্রীড়া এবং বিনোদন হিসেবে৷ আর গবাদি পশুর মালিকদের কাছে এটা এখন একটা সম্মানের লড়াই৷ অন্যদিকে দৌড়বাজ গরুর উপর বাজি ধরেন সাধারণ দর্শক৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayকাজেই কিছু দর্শকের নিবিষ্ট চাহনি দেখেই বোঝা যায়, দৌড়ের কোনও অংশ তাদের নজর এড়িয়ে যায় না৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayগ্রামের কিশোর, তরুণরাও সকাল থেকে ভিড় জমায় রেসের মাঠে৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayগ্রামের কিশোরী, তরুণী এবং মহিলারা আর প্রবীণরা একটু নিরাপদ দূরত্বে থেকেই মজা দেখেন৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayএই নিরাপদ দূরত্ব রাখাটা জরুরি, কারণ গরুগুলো দিগবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ছোটে৷ সম্ভবত ওরা কোনও মাদকের প্রভাবে উত্তেজিত থাকে৷ মাদকের মধ্যে সবথেকে সহজলভ্য কোল্ড ড্রিঙ্ক আর ব্যথা কমানোর ওষুধের মিশ্রন৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayযে কারণে একেকটা দৌড় যেই শেষ হয়, রাখালেরা গিয়ে একেকজন একেকটা গরুকে সামলাবার দায়িত্ব নিয়ে নেয়৷ জোর করে ওদের নিয়ে যায় সামান্য গভীর জলে, যাতে গরুগুলো একটু ঠান্ডা হয়৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayতবে পশু অধিকার সুরক্ষা সংগঠনগুলোর অভিযোগ পেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গরুর দৌড় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কারণ গরু দৌড়োবার উপযুক্ত প্রাণি নয় এবং তাদের নিয়ে প্রতিযোগিতার কারণে নানাভাবে তাদের কষ্ট দেওয়া হয়৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyayকিন্তু লোকে যেভাবে গরুর দৌড় নিয়ে উৎসাহিত, অদূর ভবিষ্যতে এই দৌড় বন্ধ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই, সে আদালত বা পশুপ্রেমীরা যা-ই বলুন না কেন!
ছবি: DW/S. Bandopadhyayএমবি/এসিবি (এনডিটিভ, ইন্ডিয়া টুডে)