1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জমজমাট ব্যবসা

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি৬ জুলাই ২০১৪

ভারতে গর্ভস্থ ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ অবৈধ হলেও এই ব্যবসা চলছে রমরমিয়ে – পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন এবং রাজনীতিকদের যোগসাজসে৷ ফলে দেশে ছেলে ও মেয়ের লিঙ্গ অনুপাতের ফারাক ক্রমশই যাচ্ছে বেড়ে৷

Symbolbild Gewalt gegen Frauen in Indien
ছবি: imago/Xinhua

গত সপ্তাহে দিল্লির এক আদালত কন্যাভ্রূণ হত্যা সংক্রান্ত এক মামলার রায়দান প্রসঙ্গে গর্ভস্থ ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ তথা কন্যাভ্রূণ হত্যায় ‘জিরো-টলারেন্স'-এর কথা বলেন৷ অর্থাৎ একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না৷ পশ্চিম দিল্লির এক ডাক্তার দম্পতিকে ভারতের প্রি-নাটাল ডায়গনিস্টিক টেকনিক এবং মেডিক্যাল টার্মিনেশন অফ প্রেগনেন্সি আইন অনুসারে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ মামলায় অভিযুক্ত করেন৷

ভারতে ছেলে ও মেয়ের লিঙ্গ অনুপাতের ফারাক ক্রমশই যাচ্ছে বেড়েছবি: picture alliance/Dinodia Photo Library

রায়দান প্রসঙ্গে বিচারক মন্তব্য করেন, কন্যা ভ্রূণ হত্যার পরিণামে দেশে ছেলে ও মেয়ের অনুপাতে ফারাক ক্রমশই বেড়ে যাচ্ছে৷ জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের রিপোর্টে দেখানো হয়েছে, ভারতে লিঙ্গ অনুপাতের ফারাক বিশ্বে সব থেকে বেশি৷ ফলে বেড়ে যাচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে মেয়ে পাচারের হার৷ গরিব মা-বাবা টাকার লোভে কচি কচি মেয়েগুলোকে বেচে দিচ্ছে নারী পাচার চক্রের দালালদের হাতে৷ তারা হয়ে উঠছে যৌন সামগ্রী৷ সমাজে এই ধরনের মেয়ে বেচাকেনা একটা সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ পুলিশের হাতে যা ধরা পড়ছে, তা হিমসাগরে শৈল চূড়ামাত্র৷ পুলিশ সাধারণত এ সব ব্যাপারে মাথা ঘামায়না৷

পরিসংখ্যান বলছে, গত দু'দশকে এক কোটি কুড়ি লাখ কন্যা ভ্রূণের মধ্যে এক কোটি কন্যাসন্তান তাঁদের প্রথম জন্মদিন দেখতে পায় না৷ ২০১১ সালের জনসংখ্যা গণনায়, প্রতি হাজারে মেয়ের সংখ্যা নেমে আসে ৮৭৪-এ জাতীয় হারের নীচে৷ জাতীয় হার ৯১৪৷ যেটা ২০০১-এর গণনায় ছিল ৯২২৷ এর অন্যতম কারণ ভারতের বিভিন্ন শহরে দিনকে দিন বেড়ে চলেছে আল্ট্রা-সাউন্ড ও সোনোগ্রাফির নামে গর্ভস্থ ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ ক্লিনিক৷ পুলিশ প্রশাসনের নাকের ডগায় রমরমিয়ে চলছে এর অবৈধ মোটা টাকার ব্যবসা৷

এর জন্য মূলত দায়ী কে? অল্পবিস্তর সবাই৷ ডাক্তার থেকে রাজনীতিক, পুলিশ থেকে স্থানীয় প্রশাসন৷ এর সামাজিক ফল কী হচ্ছে? আগামী ২০ বছরের মধ্যে ছেলের জন্য পাত্রী পাওয়া মুশকিল হবে৷ এর সামাজিক কারণ হিসেবে পণপ্রথাকে দায়ী করেছেন এনজিও এবং সমাজবিজ্ঞানিরা৷ বিয়ের পর পণের দাবিতে নির্যাতনের ঘটনা তো রোজই ঘটছে৷ জীবন্ত জ্বালিয়ে দিচ্ছে৷ শিক্ষিত মেয়েরা পর্যন্ত পণের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে৷ ফলে কন্যাসন্তান জন্মালেই তাঁকে পরিবারের বোঝা বলে মনে করতে শুরু করেন অনেক মা-বাবা৷ এর জন্য দরকার সামাজিক মানসিকতায় বদল৷ দিল্লি আদালতের বিচারক তাঁর রায়ে বলেন, এটা একটা নির্মম সামাজিক তথা ভূমিগত জাতীয় বাস্তব৷ আদালত এই সামাজিক ব্যাধির দিকে চোখ বুজে থাকতে পারে না৷

এটা বন্ধ করার উপায় কী হতে পারে? আইন তো আছে৷ সেটাই শেষ কথা নয়৷ হাতেনাতে ধরতে হবে কোন ক্লিনিকে চলছে অবৈধ লিঙ্গ নির্ধারণ এবং কন্যাভ্রূণ হত্যা৷ সেটা করা যেতে পারে স্বয়ংসেবী সংস্থাগুলির সাহায্যে ‘স্টিং-অপারেশন' চালিয়ে৷ সেটাও সবক্ষেত্রে ধরা যায়না৷ ডাক্তার বা সোনোগ্রাফাররা অনেক সময় সাঙ্কেতিক ভাষা ব্যবহার করে গ্রাহককে বুঝিয়ে দেন৷ যেমন, আল্ট্রা-সাউন্ড করার পর ডাক্তার যদি বলেন ‘‘নীল কাপড় কিনুন'' তাহলে বুঝতে হবে ভ্রূণ ছেলে আর যদি বলেন ‘‘গোলাপি কাপড় কিনুন'' তাহলে বুঝতে হবে ভ্রূণ মেয়ে৷ কন্যাভ্রূণ হত্যা নিবারণে আরো কঠোর শাস্তির বিধান থাকা উচিত৷ চিকিৎসকদের বিবেকের ভূমিকা আছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ