জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভবিষ্যতে খাদ্যশস্যের সংকট দেখা দিতে পারে৷ সর্বাধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞানীরা তাই আগেভাগেই শস্যগুলিকে সেই পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত করার উদ্যোগ নিচ্ছেন৷
বিজ্ঞাপন
গাছপালা আসলে অফুরন্ত কাঁচামালের উৎস৷ গোটা বিশ্বে খাদ্যের উৎস হিসেবে তাই একে ‘সবুজ সোনা' বলা হয়৷ কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বিজ্ঞানীরা নতুন প্রজাতি ব্রিড বা প্রজনন করছেন এবং জিন প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের চরিত্রও বদলে দিচ্ছেন৷ এই পরিবর্তনের প্রভাব নিখুঁতভাবে বুঝতে জার্মান গবেষকরা একেবারে নতুন এক পদ্ধতি সৃষ্টি করছেন৷ এর সাহায্যে জীবিত গাছ না কেটে বা মাটি থেকে উপড়ে না ফেলে তার মধ্যে উঁকি মারা সম্ভব হচ্ছে৷
গাছের কতটা আলো, পানি ও পুষ্টির প্রয়োজন, কিছু স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া তা দেখিয়ে দেয়৷ এক রোবট সিস্টেম নির্দিষ্ট চারাগাছের স্থানান্তর, পরিমাপ ও এক্স-রে করে৷ কোন গাছের মধ্যে উৎপাদনশীলতার কতটা সম্ভাবনা লুকিয়ে রয়েছে, এভাবে তা চিহ্নিত করা যায়৷ সারা বিশ্ব থেকে এমন গাছের নমুনা এখানে পাঠানো হয়৷ কৃত্রিমভাবে তাদের যে সব গুণাগুণ বদলে দেওয়া হয়েছে, এখানে তা পরীক্ষা করা হয়৷ ড. আন্দ্রেয়াস ম্যুলার এ বিষয়ে বলেন, ‘‘এখানে এমন প্রযুক্তি রয়েছে, যা দিয়ে গাছপালা, তাদের ক্ষমতা পরিমাপ করা যায়৷ অর্থাৎ গোটা বিশ্বে বিজ্ঞানীরা বিশেষ কৌশল বা প্রযুক্তির সাহায্যে সেই গাছ আদর্শ করে তুলতে যে সব পদক্ষেপ নিয়েছেন, আমরা তার প্রভাব খতিয়ে দেখতে পারি৷ সেই প্রভাবই চাওয়া হয়েছিল কিনা, বুঝতে পারি৷''
কিছু গাছপালা, প্রাণী এবং মানুষেরও বিলুপ্তির আশঙ্কা!
অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এ সময় প্রাণী এবং গাছপালা বিলুপ্ত হচ্ছে দ্রুত গতিতে৷ এক গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে এই তথ্য৷ ছবিঘরে থাকছে এমন কিছু প্রাণী আর গাছপালার কথা, যেগুলো খুব তাড়াতাড়িই হয়ত পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে৷
ছবি: picture-alliance/WILDLIFE/M. Harvey
বিলুপ্তির মাত্রা ১০০ গুণ বেশি
যুক্তরাষ্ট্রের এই কালো ভালুক আর কতদিন দেখা যাবে কে জানে? এক গবেষণায় দেখা গেছে, গত শতকে জীববৈচিত্র কমেছে আগের চেয়ে প্রায় একশ’ গুণ বেশি হারে৷ বৃদ্ধির কারণ মানুষ৷ যুক্তরাষ্ট্রের কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে প্রকাশিত এক যৌথ প্রতিবেদনে বলেছে, বণাঞ্চলে মানুষের যাতায়াত বেড়ে যাওয়ার কারণেই উদ্ভিদ এবং প্রাণীর বিলুপ্তি দ্রুততর হচ্ছে৷
ছবি: picture alliance/Bildagentur-online
তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে
সম্প্রতি দ্য ওয়ার্ল্ড কনজারভেশন ইউনিয়ন (আইইউসিএন) বিশ্বের ৪১ ভাগ উভচর এবং ২৬ ভাগ স্তন্যপায়ী প্রাণীই এখন চিরবিলুপ্তির ঝুঁকির সামনে৷ ছবির এই টিটিকাকা নামের বিশাল ব্যাঙগুলো এক সময় পেরু এবং বলিভিয়ার হৃদগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা যেত৷ এখন খুব কম দেখা যায় এদের৷ কয়েক বছর পর হয়ত এই ধরণের ব্যাঙ শুধু ছবিতেই থাকবে৷
ছবি: picture alliance/WILDLIFE
মানুষই দায়ী
গত ৪০ বছর ধরে মানুষ প্রতি মিনিটে গড়ে অন্তত ২ হাজার করে গাছ কাটছে৷ তাহলে প্রতিদিন বিশ্বের বনাঞ্চল থেকে কী হারে গাছ কমছে ভেবে দেখুন! এর পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ এবং উষ্ণায়নও নানাভাবে বাড়াচ্ছে মানুষ৷ এ সব বিষয় উদ্ভিদ এবং প্রাণীর বিলুপ্তিতে বড় ভূমিকা রাখছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বিপন্ন মানবজাতি
মেক্সিকোর ন্যাশনাল অটোনমাস ইউনিভার্সিটির শিক্ষক জেরার্ডো সেবালোস মনে করেন, সতর্ক না হলে অনুমানের চেয়ে বেশ আগে মানুষও বিলুপ্ত হতে পারে৷ কিছু প্রাণীর সঙ্গে মানুষের অস্তিত্ব নির্ভরশীল – এ কথা বলে মৌমাছির উদাহরণ দিয়েছেন তিনি৷ মৌমাছি হারিয়ে গেলে অনেক রকমের খাবা তৈরি করা সম্ভব হবে না৷ ফলে একসময় দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে৷ দুর্ভিক্ষে অনেক মানুষ মারা গিয়ে মানবজাতির বিলুপ্তিকে ত্বরান্বিত করতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘দ্বিগুণ চেষ্টা করুন’
যৌথভাবে রচিত প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীরা বিলুপ্তির হাত থেকে কিছু গাছপালা, প্রাণী এবং সর্বোপরি মানুষকেও বাঁচাতে বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন৷ তাঁরা মনে করেন, এখন থেকে সতর্ক এবং সজাগ হলে বিলুপ্তি অনেকটাই বিলম্বিত করা সম্ভব৷
ছবি: picture-alliance/WILDLIFE/M. Harvey
5 ছবি1 | 5
ঠিকমতো পুষ্টি পেলে গাছপালা বেড়ে ওঠে৷ গবেষকরা হাইটেক রোবট কাজে লাগিয়ে আদর্শ পরিবেশ নির্ধারণ করতে পারেন৷ কোন গাছের ঠিক কতটা পানি, সার ও আলোর প্রয়োজন, সিস্টেম তা শিখে নিতে পারে৷ ক্যামেরার মাধ্যমে রোবট মালি গাছ পর্যবেক্ষণ করে, গাছের বৃদ্ধি নথিভুক্ত করে এবং সেই গাছের আদর্শ চাহিদা স্থির করে৷
কল্পবিজ্ঞান নয়, বাস্তবেই এমনটা ঘঠছে৷ রোবট তার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে এত কিছু শিখে ফেলেছে যে, এখন সে তার স্রষ্টাকেই টেক্কা দিতে পারে৷ সে বিশেষজ্ঞদের তুলনায় গাছের আরও ভালো দেখাশোনা করতে পারে৷ এখন সেই গবেষকরাই তার কাছে শিক্ষা নিচ্ছেন৷ কারণ তার প্রতিভার ফলে প্রায় ১২ শতাংশ উন্নত বেশি শস্য উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে৷ ড. আন্দ্রেয়াস ম্যুলার বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে জলবায়ুর যে অবস্থা হবে, পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে তা অবশ্যই এক রকম হবে না৷ কিন্তু খরা বড় এক সমস্যা হবে, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ অর্থাৎ গাছপালা কীভাবে কম পানি সত্ত্বেও টিকে থাকতে পারবে অথবা তা আরও ভালোভাবে কাজে লাগাবে, সেই চেষ্টা করতে হবে৷''
আর্দ্রতার বিভিন্ন মাত্রা গাছপালার উপর কী প্রভাব ফেলছে, জেনেটিক্স ল্যাবে গবেষকরা তা খতিয়ে দেখছেন৷ উৎপাদনশীল ও আরও শক্তিশালী প্রজাতি সৃষ্টি করাই এর লক্ষ্য৷ এক্ষেত্রে সঠিক সময় নির্ণয় করা একটা বড় বিষয়৷ কোনো গাছ যে সময়ে সবচেয়ে বেশি পানি গ্রহণ করতে পারে, ঠিক সে সময়ে সঠিক পরিমাণ পানি দিলে সবচেয়ে কম অপচয় ঘটবে৷
ঘণ্টায় একবার প্রত্যেকটি গাছের ছবি তোলা হয়৷ সেই সব ছবির সাহায্যে বিজ্ঞানীরা প্রাথমিকভাবে বুঝতে পারেন, কোন গাছ কোন পরিবেশে সবচেয়ে ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে, সেখানকার মানুষের খাদ্যের যোগান দিতে পারে৷
যে ফুল কথা বলে
প্রতিটি গাছপালারই সাধারণত একটি ল্যাটিন নাম থাকে, যদিও সেসব গাছ বা ফুলকে ভিন্ন ভিন্ন দেশে আলাদা আলাদা নামে ডাকা হয়৷ কিছু ফুলের ক্ষেত্রে জার্মানদের দেয়া মজার সব নামগুলো জেনে নিন৷
ছবি: picture alliance/blickwinkel/S. Derder
‘ম্যানারট্রয়’ বা বিশ্বস্ত পুরুষ
এই ছোট ছোট মিষ্টি নীল রঙের ফুল ফোটে শুধুমাত্র গ্রীষ্মকালে, জুন থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত৷ অর্থাৎ খুবই অল্প সময়ের জন্য ফুলপ্রেমীদের আনন্দ দেয় এই ফুল৷ আর সেই রসবোধ থেকেই হয়ত জার্মানিতে ফুলটির ল্যাটিন নাম ‘লোবেলিয়া’-কে পাল্টে রাখা হয়েছে ‘ম্যানারট্রয়’ বা বিশ্বস্ত পুরুষ৷
ছবি: picture-alliance/ CHROMORANGE/H. Schunk
‘ফেরগিসমাইননিষ্ট’ বা আমায় ভুলে যেও না
এই ফুলের গ্রিক নাম দিয়েছিলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা৷ নামটি বেশ মজার – ‘মিয়োসোটিস’, যার বাংলা অর্থ ইঁদুরের কান৷ তবে জার্মানিতে এই ফুলটির নাম ‘আমায় ভুলে যেওনা’৷ এই নামকরণের পর থেকেই ফুলগাছটিকে ভালোবাসার সম্পর্কে বিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়ে আসছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Pilick
‘ফ্লাইসিগেস লিশেন’ বা পরিশ্রমী লিশেন
এই ফুলটির উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের দেয়া ল্যাটিন নাম ‘ইমপেশেন্স’ বা অধৈর্য৷ ফুলটি ফোটে মে থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত৷ শুধু তাই নয়, কোনো রকম বিরতি ছাড়াই এক নাগাড়ে এ সময় নতুন নতুন ফুল ফুটতে থাকে৷ আর সে কারণেই হয়ত জার্মানরা এই ফুলকে ‘ফ্লাইসিগেস লিশেন’ বা পরিশ্রমী লিশেন বলে ডাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/H. Galuschka
‘স্টিফম্যুটারশেন’ বা সৎ মা
ছবিতে সৎ মা ফুলের পাপড়িগুলো দেখুন৷ নীচের ছোট ফুল বা পাপড়িগুলোকে (সৎ মেয়ে) বড় ফুলগুলো (সৎ মা) কেমন আড়াল করে ঢেকে রেখেছে৷ এ কারণেই হয়ত ‘স্টিফম্যুটারশেন’ বা সৎ মা বা সৎ মামনি নাম রাখা হয়েছে৷ এ সব নানা রঙের সুন্দর ফুলগুলোর কিন্তু খুব বেশি যত্নের প্রয়োজন হয় না৷
ছবি: picture-alliance/ZB/Ralf Hirschberger/
‘টয়ফেল্সক্রালে’ বা শয়তানের নখ
গাছটির দিকে তাকিয়ে দেখুন, যেন মনে হবে ওটাতে হাত দিলেই ধারালো নখগুলো আপনাকে আচড় দেবে৷ দেখে এরকমটা মনে হলেও, বাতের ব্যথা বা হজমে সাহায্য করার মতো বিস্ময়কর অনেক গুণ রয়েছে এই গাছের৷
ছবি: picture alliance/WILDLIFE/HPH
‘রোটার ফিঙারহুট’ বা লাল ফিঙারহ্যাট
বাঁদিকের ফুলগুলো দেখুন, কী সুন্দর! ঠিক যেন লম্বা চিকন টুপির মতো৷ মনে হয় আঙুলে পরা যাবে, তাই না? এই ভাবনা থেকেই হয়ত ‘রোটার ফিঙারহুট’ বা আঙুলের টুপি নাম পেয়েছে ফুল গাছটা৷ তবে এই সুন্দর চেহারার আকর্ষণীয় ফুলগুলো অত্যন্ত বিষাক্ত বলে একে ছোঁয়া বা মুখে দেওয়া কিন্তু একেবারেই নিষিদ্ধ৷
ছবি: picture alliance/blickwinkel/S. Derder
6 ছবি1 | 6
বিভিন্ন প্রজাতির গাছের ক্ষমতা বুঝতে বিশেষজ্ঞরা সরাসরি গাছের শিকড় খতিয়ে দেখতে চান৷ সেখান থেকেই তো গাছের বৃদ্ধি পরিচালনা করা হয়৷
মানুষের চিকিৎসার মতো গাছপালার ক্ষেত্রেও রেজোনেন্স টোমোগ্রাফি একেবারে নতুন জ্ঞান তুলে ধরছে৷ জীবন্ত গাছ কীভাবে পানি ও পুষ্টি গ্রহণ করছে, তা সরাসরি দেখা যাচ্ছে৷ গবেষকরা শুধু পাতার মধ্যে নয়, মাটির নীচে গাছের বৃদ্ধির প্রক্রিয়াও দেখতে চান৷
গোটা বিশ্বে এমন কোনো স্থাপনা নেই, যেখানে অসুস্থ মানুষের বদলে ভুট্টার গাছের এক্স-রে করা হয়৷ ৮৪০ মিলিয়ন টন পরিমাণ উৎপাদনের কারণে ভুট্টা পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শস্য৷ তার বীজে সামান্য উন্নতি ঘটালেও খাদ্যের যোগানের উপর বিশাল ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে৷
ত্রিমাত্রিক, রঙিন ছবি টাইম-ল্যাপ্স পদ্ধতিতে বিজ্ঞানীরা মাটির নীচে শিকড় গজানোর ঘটনা, পানি ও পুষ্টির বণ্টন পর্যবেক্ষণ করতে পারেন৷ ১ কোটি ৮০ লক্ষ ইউরো মূল্যের এই প্রকল্পের ফলাফল বাস্তবে কতটা কাজে লাগবে, তা দেখতে বড় পরীক্ষার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে৷
উড়ন্ত ক্যামেরার মাধ্যমে উদ্ভিদ গবেষকরা খোলা আকাশের নীচে গাছের বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করছেন৷ ল্যাবের পূর্বাভাষ স্বাভাবিক পরিবেশেও কাজ করে কিনা, তা তাঁরা দেখতে চান৷ উৎপাদন বাড়াতে সেই জ্ঞান ব্রিডিং ও চাষের কাজে দ্রুত প্রয়োগ করা যেতে পারে৷ বিশ্বের যে সব অঞ্চলে ভবিষ্যতে খাদ্যাভাবের আশঙ্কা রয়েছে, সেখানে গবেষণার এই ফলাফল কাজে লাগতে পারে৷
শিল্পীর চোখে মঙ্গোলিয়ার মরুকরণ
সবুজ ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে, ক্রমশ বিস্তীর্ণ এক মরু হয়ে যাচ্ছে মঙ্গোলিয়া৷ সরকারি তথ্যই বলছে, এমন চলতে থাকলে মধ্য এশিয়ার দেশটির পুরোপুরি মরুভূমি হতে বেশিদিন লাগবেনা৷ শিল্পী দায়েসুং লি-র চোখে দেখুন মঙ্গোলিয়ার মরুকরণ৷
ছবি: Daesung Lee
ঐতিহ্যে পরিবর্তন
মরুকরণের ছাপ মঙ্গোলিয়ার যাযাবর ঐতিহ্যেও পড়ছে৷ ছবিতে প্যারিস ভিত্তিক শিল্পী দায়েসুং লি-র আঁকা মরুভূমির বড় একটি ছবি বসানো হয়েছে বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠে৷ ঘাসের ওপর দিয়ে সেই ল্যান্ডস্কেপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে কয়েকজন মানুষ৷ মঙ্গোলিয়াও কিন্তু এভাবেই সবুজ ছেড়ে মরুর দিকে অগ্রসর হচ্ছে৷
ছবি: Daesung Lee
মরুর বুকে তৃণভোজী
মঙ্গোলিয়া সরকারের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন দশকে ব্যাপক সবুজ-নিধন হয়েছে৷ এ সময়ে রাশিয়া এবং চীনের প্রতিবেশী দেশটির প্রায় এক তৃতীয়াংশই হয়ে গেছে মরুভূমি৷ এখানে এক মরুপ্রান্তরে শিল্পীর আঁকা ছবি, ছবিতে ঘাসহীন প্রান্তরে খাদ্যের সন্ধান করছে দুটি ঘোড়া৷
ছবি: Daesung Lee
পানি চাই, পানি...
প্রত্যন্ত অঞ্চলে পানি সরবরাহ করা না গেলে মঙ্গোলিয়ার মরুকরণ রোধ করা যাবে না৷ তা বোঝাতেই সবুজ মাঠের মাঝখানে বসানো মরুভূমির এই ছবিটি এঁকেছেন দায়েসুং লি৷ ওপর থেকে ছবির মরুভূমিতেই পানি ঢালছেন একজন৷
ছবি: Daesung Lee
পানি যেখানে, সেখানেই জীবন
মরুভূমির বুকে স্বপ্ন কিংবা অতীত এঁকেছেন শিল্পী৷ এই মরুতেও এক সময় ছিল সবুজ-শ্যামলিমা৷ এখানেও ছিল ফুল, ফল, পাখির কলতান৷ এখন শুধু বালি আর বালি৷ বালির ওপর দিয়ে একজন হেঁটে যাচ্ছেন শিল্পীর আঁকা ছবির দিকে৷ ছবিতে জলরাশি আছে, সবুজ আছে, বসতি আছে, জীবনের স্পন্দন আছে৷ পানি আছে বলেই সব আছে৷
ছবি: Daesung Lee
‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’
একসময় এই মরুভূমিও মরুভূমি ছিল না৷ শিল্পী ছবি এঁকে দেখিয়েছেন, এখানেও এসে কেমন সুন্দর, রোম্যান্টিক সময় কাটিয়েছেন তরুণ-তরুণী৷ তাঁদের বিয়ে হয়েছে, সন্তান হয়েছে৷ সন্তানদের নিয়ে এসেছেন বাবা-মা৷ কিন্তু সন্তানদের জন্য এই মাঠে এখন আর কোনো হাসি নেই, আনন্দ নেই৷
ছবি: Daesung Lee
টান...
এখানেও মরুভূমিতে শিল্পীর আঁকা সবুজ প্রান্তর৷ সবুজে বিচরণ করছে সুস্থ-সবল গবাদি পশু৷ ছবির বাইরে একটি ক্ষুধার্ত গরু৷ রাখাল তাকে দূরে নিতে চাইছে, কিন্তু মন মানছে না তার, সবুজ ঘাসের আকর্ষণে ছবির দিকে ফিরে ফিরে তাকাচ্ছে গরুটি৷
ছবি: Daesung Lee
সব সুন্দরই স্বর্গীয় নয়
নীল আকাশ, নীচে ঝিকিমিকি বালু৷ অনেকেরই মন ছুঁয়ে যাবে মরুর এই সৌন্দর্য৷ কিন্তু কখনো কখনো কারো কারো জন্য এই সুন্দরই কদাকার, নিষ্ঠুর৷ ছবিতে এ বারতাই সবার কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছেন শিল্পী৷