গাজা স্ট্রিপে আরো বেশি মানবিক সাহায্য পাঠানো প্রয়োজন। তার জন্য খুলে দিতে হবে সীমান্ত। দাবি করলেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিজ্ঞাপন
গাজা স্ট্রিপে আরো বেশি মানবিক সাহায্য পাঠানো প্রয়োজন। তার জন্য খুলে দিতে হবে সীমান্ত। দাবি করলেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক মধ্যপ্রাচ্যে সফর করছেন। মঙ্গলবার তিনি গেছিলেন ইসরায়েল-গাজা সীমান্ত কেরেম শালোমে। সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ''গাজার পরিস্থিতি নারকীয়।'' দ্রুত সীমান্ত খুলে দিতে হবে এবং আরো অনেক বেশি পরিমাণে মানবিক সাহায্য পাঠাতে হবে সেখানে। সেখানে দাঁড়িয়েই বেয়ারবক জানিয়েছেন, ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামে জার্মানি বরাদ্দ বাড়িয়েছে। অতিরিক্ত এক কোটি ইউরো দেওয়া হয়েছে গাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য, কোথায় সমস্যা এখনো জট পাকিয়ে আছে, তা নিয়ে আলোচনা করার সময় আর নেই। রাফা সীমান্ত দিয়ে যে ট্রাকগুলি গাজায় মানবিক সাহায্য নিয়ে ঢোকে সেগুলিতে তিনবার তল্লাশি চালানো হয়। সমস্ত জিনিস নামিয়ে দেখা হয়। যেভাবেই হোক এই প্রক্রিয়ার গতি বাড়াতে হবে। এর ফলে গাজায় যত দ্রুত মানবিক সাহায্য পৌঁছানো দরকার, তা পৌঁছাচ্ছে না।
দক্ষিণ গাজায় উদ্বাস্তু শিবিরে ইসরায়েলের আক্রমণ
খান ইউনিসের ইউএনআরডাব্লিউএ-এর একটি শিবিরে ইসরায়েল আক্রমণ চালিয়েছে। অন্তত ১২ জন নিহত। মৃতের সংখ্যা বাড়ছে।
ছবি: Ohad Zwigenberg/AP/picture alliance
খান ইউনিসের আশ্রয়শিবির
দক্ষিণ গাজার সবচেয়ে বড় শহর খান ইউনিস। ইসরায়েল গাজা স্ট্রিপে অভিযান চালানোর পর থেকে বহু মানুষ ঘর-বাড়ি ছেড়ে দক্ষিণ গাজার এই শহরে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। এখানেই ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্ক এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইনের (ইউএনআরডাব্লিউএ) সবচেয়ে বড় আশ্রয়শিবিরটি আছে।
ছবি: Ramez Habboub/AP Photo/picture alliance
ইসরায়েলের হামলা
এই আশ্রয় শিবিরে প্রায় ৪৩ হাজার উদ্বাস্তু বসবাস করছেন। শুধু তা-ই নয়, আশ্রয়শিবিরের বাইরে আরো অন্তত ৩০ হাজার মানুষ খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার এই আশ্রয় শিবির লক্ষ্য করে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে।
ছবি: Adel Hana/AP Photo/picture alliance
মৃতের সংখ্যা বাড়ছে
ইউএনআরডাব্লিউএ জানিয়েছে, এখনো পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। বহু মানুষকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।
ছবি: Ohad Zwigenberg/AP/picture alliance
ইসরায়েলের মাইকিং
ওই আশ্রয় শিবিরটি কার্যত ঘিরে রেখেছে ইসরায়েলের সেনা। মাইকিং করে তারা বলছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সকলকে ওই আশ্রয় শিবির ছেড়ে চলে যেতে হবে।
ছবি: Ohad Zwigenberg/AP/picture alliance
জাতিসংঘের প্রশ্ন
জাতিসংঘের বক্তব্য, হাজার হাজার মানুষের পক্ষে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আশ্রয়শিবির ছেড়ে চলে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। আশ্রয়শিবিরের বাইরে লড়াই চলছে। ফলে এই সময় শিবির ছেড়ে বাইরে যাওয়া মোটেই নিরাপদ নয়। তাছাড়া ৭০ হাজার মানুষের পক্ষে নতুন জায়গা খুঁজে বার করাও প্রায় অসম্ভব।
ছবি: Ohad Zwigenberg/AP/picture alliance
ইসরায়েল ও হামাসকে জানানো হয়েছিল
জাতিসংঘের সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা আশ্রয় শিবিরের সমস্ত তথ্য ইসরায়েল এবং হামাসকে দিয়ে রেখেছিল, যাতে সেখানে কোনোভাবেই লড়াই না হয়। তারপরেও ওই শিবিরে আক্রমণ চালানো হলো।
ছবি: Ohad Zwigenberg/AP/picture alliance
আন্তর্জাতিক আদালতে গাজা মামলা
আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ করেছিল সাউথ আফ্রিকা। আন্তর্জাতিক আদালত সেই মামলার প্রাথমিক রায় শুক্রবার দিতে পারে। জাতিসংঘ অবশ্য আন্তর্জাতিক আদালতকে মামলাটি গ্রহণ না করার আর্জি জানিয়েছিল। কিন্তু আদালত মামলাটি শুনেছে।
ছবি: Nicolas Economou/NurPhoto/picture alliance
অভিযান বন্ধের আবেদন
সাউথ আফ্রিকা নয়টি পয়েন্ট আদালতের সামনে রেখেছে। গাজায় বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা, তাদের জন্য আরো ত্রাণের ব্যবস্থা এবং যত দ্রুত সম্ভব ইসরায়েলের অভিযান বন্ধের আবেদন ওই পয়েন্টগুলির মধ্যে আছে। শুক্রবার আদালত ওই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ছবি: THILO SCHMUELGEN/REUTERS
চার হুতি নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য চার হুতি নেতার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ওই নেতাদের নির্দেশেই লোহিত সাগরে হুতি বিদ্রোহীরা একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।
ছবি: Mohammed Hamoud/Anadolu/picture alliance
9 ছবি1 | 9
বেয়ারবক জানিয়েছেন, মিশর এবং ইসরায়েল দুই তরফই তাকে ট্রাক কীভাবে গাজায় ঢোকে সে বিষয়ে তথ্য দিয়েছে। বস্তুত, তিনিই প্রথম বিদেশি মন্ত্রী যাকে ইসরায়েল কেরেম শালোম পর্যন্ত যাওয়ার অনুমতি দিলো। তাকে দেখানো হয়েছে, কীভাবে প্রতিদিন ১২০টি ট্রাকে মানবিক সাহায্য বোঝাই করে গাজায় পাঠানো হয়।
৭ অক্টোবরের ঘটনার আগে গাজায় প্রতিদিন ৫০০ ট্রাক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে যেত। তার মধ্যে ৩০০ ট্রাক যেত কেরেম শালোমের সীমান্ত দিয়ে। তা কমে এখন ১২০ টি ট্রাকে এসে দাঁড়িয়েছে।
ইসরায়েল জানিয়েছে, প্রতি ঘণ্টায় ১২টি ট্রাক সীমান্ত পার করে। ইসরায়েল সীমান্তে দুইটি স্ক্যানারে এই ট্রাকগুলিকে পরীক্ষা করা হয়। দেখা হয়, জিনিসের সঙ্গে বন্দুক, গুলি ইত্যাদি জিনিস পাঠানো হচ্ছে কি না।
সংবাদসংস্থা ডিপিএ জানিয়েছে, ইসরায়েলের প্রতিনিধিরা তাদের জানিয়েছেন, আরো ট্রাক পারাপার করা সম্ভব। কিন্তু ট্রাক চালানোর জন্য যথেষ্ট ফিলিস্তিনি চালক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
বেয়ারবক এদিন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সেখানে দুই-রাষ্ট্র বিষয়ক রাজনৈতিক সমাধান নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বর্তমান যুদ্ধ-পরিস্থিতি নিয়েও দুই মন্ত্রীর আলোচনা হয়েছে।