এর ফলে দূষিত হতে পারে গাজার খাওয়ার জলের সাপ্লাই। অন্যদিকে জাতিসংঘে ঐতিহাসিক যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত পাশ।
বিজ্ঞাপন
গাজার সুড়ঙ্গে এখনো হামাসের নেতারা লুকিয়ে আছে বলে অভিযোগ ইসরায়েলের। তাদের বক্তব্য, পণবন্দিদেরও সেখানে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি হামাস যোদ্ধারা এখনো সুড়ঙ্গ থেকে লড়াই চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। ফলে লাগাতার গাজার একাধিক সুড়ঙ্গ লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়েছে ইসরায়েল। এবার সেই সুড়ঙ্গে সমুদ্রের জল পাম্প করে ঢোকানো শুরু হয়েছে। এভাবে সুড়ঙ্গে জল ঢোকাতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় লেগে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এর ফলে গাজার খাওয়ার জল সংক্রমিত হতে পারে।
অ্যামেরিকার একাধিক কাগজ এই সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করেছে। কিন্তু ইসরায়েল এখনো পর্যন্ত এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে গাজার প্রত্যক্ষদর্শীরাও জানিয়েছেন যে, বিভিন্ন জায়গায় ইসরায়েলের সেনা এই কাজ শুরু করেছে।
হামাসের সুড়ঙ্গে ইসরায়েলের আক্রমণ
ইসরায়েলের দাবি, উত্তর গাজার ভিতরে ঢুকে হামাস সুড়ঙ্গে আক্রমণ চালাচ্ছে তারা। হাজার হাজার ফিলিস্তিনি দক্ষিণে পালাচ্ছেন।
ছবি: Ammar Awad/REUTERS
পালাচ্ছে মানুষ
ইসরায়েলের সেনা দাবি করেছে, উত্তর গাজা থেকে অন্তত ৫০হাজার বেসামরিক মানুষ দক্ষিণ গাজার দিকে পালিয়েছে। ইসরায়েলের সেনা তাদের পালাতে সাহায্য করেছে। ফোন করে, লিফলেট দিয়ে তাদের শহর ছাড়তে বলা হয়েছে।
ছবি: Belal Khaled/AA/picture alliance
সুড়ঙ্গের সন্ধানে সেনা
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, উত্তর গাজায় শহরের ভিতরে ঢুকে পড়েছে ইসরায়েলের সেনা। হামাসের সুড়ঙ্গ খুঁজে বার করে আক্রমণ চালাচ্ছে তারা। তারা এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে, হামাস যা কোনোদিন কল্পনাও করতে পারেনি।
ছবি: Israeli Defense Forces/Handout via REUTERS
রকেট প্রস্তুকারকের মৃত্যু
ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসের এক গুরুত্বপূর্ণ রকেট প্রস্তুতকারক ব্যক্তি ইসরায়েলের সেনার হাতে নিহত হয়েছেন।
ছবি: Abed Khaled/AP Photo/picture alliance
উত্তর গাজায় ক্ষমতা হারিয়েছে হামাস
ইসরায়েলের দাবি, উত্তর গাজায় হামাস তার ক্ষমতা হারিয়েছে। এখনো দক্ষিণ গাজায় তারা লড়াই চালাচ্ছে। এবং সে কারণেই হাজার হাজার মানুষ উত্তর থেকে দক্ষিণের দিকে চলে যাচ্ছে। উত্তরের দখল কার্যত এখন ইসরায়েলের সেনার হাতে।
ছবি: Israel Defense Forces/Handout via REUTERS
১৩০টি সুড়ঙ্গ ধ্বংস
ইসরায়েলের সেনার দাবি, তারা উত্তর গাজায় হামাসের ১৩০টি সুড়ঙ্গ ধ্বংস করেছে। সুড়ঙ্গ অর্থাৎ, মাটির নিচে বাংকার। ইসরায়েলের দাবি, বেসামরিক বাড়ি, হাসপাতালের নিচে বাংকার বানিয়ে হামাস নিজেদের 'সন্ত্রাসী' কাজকর্ম চালাতো। সে কারণেই হামাসকে আক্রমণের সময় বহু বেসামরিক ভবনে আক্রমণ চালাতে হচ্ছে।
ছবি: Bashar Taleb/APA Images via ZUMA Press/picture alliance
বাংকারের কাঠামো
ইসরায়েলের দাবি, বাংকার গুলি ২ মিটার উঁচু এবং এক মিটার চওড়া। তার ভিতর জলের লাইন, বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা সবই করা আছে। ফলে চাইলে মানুষ সেখানে টানা কিছুদিন থাকতে পারে।
ছবি: Bashar Taleb/APA Images via ZUMA Press/picture alliance
জি-৭ এর আবেদন
জি-৭ দেশগুলি ইসরায়েলের কাছে আবেদন জানিয়েছে সংঘাত-বিরতির জন্য। অ্যামেরিকার মতো তারাও বলেছে, যুদ্ধবিরতি না হোক, কৌশলগত বিরতি দিক ইসরায়েল। যাতে ওই সময়ে বেসামরিক মানুষ অন্তত ঘর থেকে পালাতে পারেন। ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা কৌশলগত বিরতি দিচ্ছে।
ছবি: Jack Guez/AFP
ইটালির হাসপাতাল জাহাজ
ইটালি গাজার কাছে সমুদ্রে একটি হাসপাতালের পরিকাঠামো যুক্ত জাহাজ পাঠিয়েছে। আহত বেসামিরক ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য ওই জাহাজ পাঠানো হয়েছে।
ছবি: AP
8 ছবি1 | 8
এদিকে জাতিসংঘের সাধারণসভায় যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত পাশ হয়েছে। অ্যামেরিকা, ইসরায়েল-সহ ১০টি দেশ এর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। কিন্তু বাকি ১৫৩টি দেশ সিদ্ধান্ত সমর্থন করেছে। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের কূটনীতিকেরা বলেছেন, এ এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। যেখানে এতগুলি দেশ এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করলো। ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিদের বক্তব্য, গাজার লড়াই নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে সমবেদনা দেখা যাচ্ছে, তারই বহিঃপ্রকাশ এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। অ্যামেরিকাকেও এবার তা বুঝতে হবে। মানুষের স্বর শুনতে হবে। তবে ইসরায়েল ফের জানিয়েছে, এখনই লড়াই থামছে না।
চেক রিপাবলিক, অস্ট্রিয়া, প্যারাগুয়ের মতো দেশ এদিন যুদ্ধবিরতির বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। তারা ইসরায়েলকে সমর্থন করেছে। অন্যদিকে জার্মানি এবং যুক্তরাজ্য-সহ ২৩টি দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে।
এর আগে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও একইরকমের একটি ভোট হয়েছিল। অ্যামেরিকা সেখানে নিজের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করেছিল। বস্তুত, সেই ভোটের পর এদিন সাধারণ সভায় বিশেষ বৈঠকের ডাক দিয়েছিল আরব এবং মুসলিম দেশগুলি। তবে মনে রাখতে হবে, সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত সব দেশ আইনত মানতে বাধ্য নয়। কিন্তু এই সভার সিদ্ধান্ত একটি চাপ তৈরি করে। এদিনের ভোট সে কাজে সমর্থ হয়েছে বলেই বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য।