গাজায় অস্ত্রবিরতির চেষ্টা
১৬ জানুয়ারি ২০০৯হামাস অস্ত্রবিরতির ব্যাপারে কোন রকম ইসরায়েলী শর্ত মানতে রাজি নয় বলে জানিয়েছে৷ ওদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, গাজায় ওষুধপত্রের সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মুখে৷
গাজায় একটা অস্ত্রবিরতি আসন্ন শুক্রবার এরকম একটা আশা জাগতে না জাগতেই আবার মিলিয়ে গেছে৷ উগ্র ইসলামী সংগঠন হামাসের পক্ষ থেকে এক বছরের এক সীমিত অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল৷ তবে তার শর্ত ছিল, ইসরায়েলকে এক সপ্তাহের মধ্যে উপকূলীয় ঐ এলাকা থেকে সরে যেতে হবে৷ এছাড়াও তার দাবি ছিল, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সীমান্ত পয়েন্টগুলো ইসরায়েলকে আবার খুলে দিতে হবে এবং খুলে রাখতে হবে৷ ইসরায়েল অস্ত্রবিরতি সীমিত রাখার শর্ত প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, প্রয়োজন হল স্থায়ী এক যুদ্ধবিরতি৷ অন্যথায় লড়াই আবার নতুন করে দেখা দিতে বাধ্য৷
যার অর্থ - গাজায় ইসরায়েলী সামরিক হামলা শুরু হবার তিন সপ্তাহ পরেও এই সংঘাত শেষ হবার কোন সুস্পষ্ট সংকেত এখনও নেই৷ মিসরের মধ্যস্থতায় সম্ভাব্য অস্ত্রবিরতি নিয়ে কায়রোয় আলোচনা করেছেন ইসরায়েলী প্রতিনিধি আমস গিলাদ৷ কোন ফল ছাড়াই আলোচনা শেষ করেছেন তিনি৷ ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দুবার তিনি মিসরের প্রতিনিধি ওমর সুলেমানের সঙ্গে আলোচনায় বসেন৷ ওয়াকেবহাল মহল থেকে বলা হয়েছে, অস্ত্রবিরতি এক বছরে সীমিত রাখার ব্যাপারে হামাসের শর্তই ইসরায়েলী প্রত্যাখ্যানের কারণ৷ মিসর ইসরায়েলী প্রতিক্রিয়া নিয়ে কথা বলার জন্য কায়রোয় হামাসকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে৷ মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করতে ওয়াশিংটন রওয়ানা হয়ে গেছেন ইসরায়েলী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিপি লিভনি৷
এর আগে জাতিসংগের মহাসচিব বান কি মুন রামাল্লায় ফিলিস্তিনী প্রধানমন্ত্রী সালাম ফায়াদ-এর সঙ্গে বৈঠকের পর অবশ্য আশাবাদী মনোভাব ব্যক্ত করেন৷ তিনি বলেন, আমি যথার্থই আশা করছি, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আমরা একটা অস্ত্রবিরতি অর্জন করতে পারব৷ জার্মন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ারও গাজায় দ্রুত অস্ত্রবিরতির ব্যাপারে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন৷ দ্বিতীয়বারের মত তিনি মধ্যপ্রাচ্য সফর করেছেন৷ তিনি বলেছেন যে,গাজায় মানুষের অবস্থা শোচনীয়৷ জীবনধারনের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর ঘাটতি রয়েছে৷ হাসপাতালগুলো মাত্রাধিক চাপের মুখে৷ সেই জন্যই দরকার অস্ত্রবিরতি৷
গাজায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউ এইচ ও-র দপ্তর প্রধান টোনি লরেন্স বলেছেন, দ্রুত অস্ত্রবিরতির ব্যাপারে ঐকমত্য না হলে ঐ অঞ্চলে ঘটবে এক মানবিক বিপর্যয়৷ ২৭ ডিসেম্বর ইসরায়েলী সামরিক হামলা শুরু হবার পর থেকে সেখানে ১৬টি স্বাস্থ্য স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে৷ তার মধ্যে রয়েছে হাসপাতাল ও ক্লিনিক৷ এছাড়া হামলায় নিহত হয়েছেন ১৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী. আহত হয়েছেন ২২ জন৷