ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে প্রকৃত শান্তি ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কয়েকজন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী৷ তাঁদের মধ্যে বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসও রয়েছেন৷
বিজ্ঞাপন
গত ১৮ জুলাই ‘অ্যামেরিকান ফ্রেন্ডস সার্ভিস কমিটির' ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘‘ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানি অনতিবিলম্বে বন্ধে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি৷''
গাজার শিশুদের কী অপরাধ?
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য মানুষ৷ পরিসংখ্যান বলছে, নিহতদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশই শিশু ও নারী৷ বোমার আঘাতে প্রাণ হারানো শিশুরা হয়ত যুদ্ধ কি তাই জানে না৷ গাজার শিশুদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: Reuters
ধ্বংসের মাঝে বেঁচে থাকা
ইসরায়েলি বিমান হামলায় বিধ্বস্ত একটি গাড়ি পরীক্ষা করে দেখছে এক ফিলিস্তিনি শিশু৷ ছবিটি গত ১৪ জুলাই তোলা৷ বিমান হামলায় গাজায় নিহতদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশই নারী ও শিশু৷
ছবি: Mohammed Abed/AFP/Getty Images
পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা
ইসরায়েলের বিমান হামলা থেকে বাঁচতে পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটছেন ফিলিস্তিনিরা৷ তবে গাজায় তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নেই বললেই চলে৷ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা মনে করেন, ইসরায়েলের হামলা সহসা বন্ধের কোনো লক্ষণ নেই৷
ছবি: Reuters
অপেক্ষা
ইসরায়েলি হামলায় আহত ফিলিস্তিনি এই ছেলেটি গাজার দক্ষিণাঞ্চলে মিশর সীমান্তে অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে মিশরে ঢোকার জন্য অপেক্ষা করছে৷ আহতদের চিকিৎসার সুবিধার্থে মিশর রাফা সীমান্ত খুলে দেয় ১০ জুলাই৷
ছবি: Said Khatib/AFP/Getty Images
স্কুলে রাতযাপন
বাড়িতে যে-কোনো মুহূর্তে পড়তে পারে ইসরায়েলের বোমা৷ তাই ঘরবাড়ি ছেড়ে এই শিশুরা আশ্রয় নিয়েছে গাজায় অবস্থিত জাতিসংঘের স্কুলে৷ এখানে যে বোমা পড়বে না, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই৷ তবে আশঙ্কা কম৷
ছবি: Mahmud Hams/AFP/Getty Images
আতঙ্ক
বাড়ির উপরে উড়ছে ইসরায়েলি ড্রোন৷ আর সেটাই দেখছে এই শিশুটি৷
ছবি: Thomas Coex/AFP/Getty Images
ইয়াসমিনের জানাজা
গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলের বিমান হামলায় প্রাণ হারায় চার বছরের শিশু ইয়াসমিন৷ ছবিটি ১০ জুলাই তার জানাজার সময় তোলা৷
ছবি: Reuters
বিনা অপরাধে শাস্তি
গাজার শিশুরা জানে না তাদের অপরাধ কি? কেনই বা বোমা হামলার নির্মম শিকার তারা? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটারেও এমন প্রশ্ন করেছেন অনেকে৷ গত ১৪ জুলাই তোলা ছবিতে চাচার মৃত্যুতে কাঁদছে দুই শিশু৷
ছবি: Mahmud Hams/AFP/Getty Images
প্রতিবন্ধীদের আশ্রয়
ছবিটি ২০১২ সালের এপ্রিলে তোলা৷ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এক শিশুকে জাতিসংঘের স্কুলে নিয়ে যাচ্ছে তার এক সহপাঠী৷ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আহতও হচ্ছে অসংখ্য শিশু৷ পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে তাদের৷ তবে এই শিশুটি ইসরায়েলি হামলায় দৃষ্টি হারিয়েছে কিনা জানা যায়নি৷
ছবি: Reuters
নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান
ইসরায়েলের বিমান হামলা থেকে বাঁচতে অনেক ফিলিস্তিনি তাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান করছেন৷ তবে গাজার দু’দিকে ইসরায়েল, একদিনে মিশর এবং অপর পাশে সমুদ্র৷ এই অবস্থায় নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাওয়া দুষ্কর৷ তবুও প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
হামলা নতুন নয়
গাজায় ইসরায়েলের হামলা নতুন নয়৷ হামাসের রকেট ছোড়ার জবাব সেদেশ দেয় বিমান হামলার মাধ্যমে৷ আর তাতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রাণ হারায় নারী, শিশু এবং হামাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন মানুষ৷
ছবি: Reuters
10 ছবি1 | 10
বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারির তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে৷ এতে লেখা হয়েছে, ‘‘এর আগেও গাজায় হামলা চালানো হয়েছে৷ এর আগেও যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে৷ কিন্তু তারপরও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব অব্যাহত রয়েছে৷
‘‘সতের লাখ ফিলিস্তিনি গাজায় ইসরায়েলের অবরোধের মধ্যে বসবাস করছে৷ ২০১২ সালে যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলে শান্তি ফিরলেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা থামেনি৷''
ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলিদের মধ্যে শান্তি ফেরাতে তাই প্রকৃত উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন নোবেলজয়ীরা৷ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে প্রকাশিত এই খোলা বিবৃতির নিচে অ্যামেরিকান ফ্রেন্ডস সার্ভিস কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যান ক্রেটিং, ‘ইন্টারন্যাশনাল পিস ব্যুরোর' কো-প্রেসিডেন্ট ইন্গেবোর্গ ব্রাইনেস ও রাইনার ব্রাউন এবং বেটি উইলিয়ামস, জডি উইলিয়ামস, মাইরেড করিগান মাগুইর, তাওয়কোল কারমান এবং মুহাম্মদ ইউনূসের নাম রয়েছে৷
প্রসঙ্গত, শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূস কেন গাজা নিয়ে কথা বলছে না? এই প্রশ্ন গত কয়েকদিন ধরে ঘুরপাক খাচ্ছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে৷ বিশেষ করে ফেসবুকে অনেকেই এই বিষয়ে সমালোচনা করেন৷
এদিকে, বাংলা ব্লগে গাজা নিয়ে নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন অসংখ্য ব্লগার৷ আমারব্লগে এই বিষয়ে একটি ব্লগ লিখেছেন আবু জাফর৷ শিরোনাম, ‘‘জ্বলছে ফিলিস্তিন৷ পুড়ছে গাজা৷ মরছে মুসলমান৷''
সামহয়্যারইন ব্লগে কাজী রায়হান লিখেছেন, ‘‘আহ! মানবতা তুমি চোখ বন্ধ করে থাকো৷ উলঙ্গ আমি লজ্জায় মরি৷'' এই ব্লগার লিখেছেন, ‘‘বরাবরের মতোই এবারো ইসরায়েল নিরাপত্তাই প্রধান কারণ হিসেবে দেখিয়েছে৷ এবং হামলায় একজন ৫ মাসের শিশু সহ কয়েকজন নিহত হয়েছে৷ বাহ! কি সুন্দর যুক্তি নিজেদের শান্তির জন্যে মানুষ হত্যা!!''