অ্যালাবামায় রোববার একটি বক্তৃতা দিতে গেছিলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্য়ারিস। সেখানেই তিনি গাজায় দ্রুত সংঘর্ষবিরতির আবেদন জানিয়েছেন। হ্যারিস বলেছেন, ''গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ। এই অবস্থায় অন্তত ছয় মাসের সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করা দরকার। এই বিষয়টি নিয়েই আপাতত আলোচনা চলছে।''
হ্যারিস বলেছেন, গাজায় যাতে আরো মানবিক সাহায্য ঢোকে তার ব্যবস্থা করা। কোনো অজুহাত দেয়া চলবে না। বস্তুত, মিশরে কাতার ও মিশরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে হামাসের প্রতিনিধিরাও সেই আলোচনায় যোগ দিয়েছেন। রমজান শুরু হওয়ার আগে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে এই আলোচনায় ইসরায়েলের প্রতিনিধিরা যোগ দেননি। হামাসের সঙ্গে আলোচনার পর সেই খসড়া ইসরায়েলের প্রতিনিধিদের পাঠানো হবে।
ইসরায়েল দুইটি বিষয় জানতে চেয়েছে। এখনো যে ১০০ জন পণবন্দি হামাসের হাতে বন্দি, তাদের মধ্যে কতজন বেঁচে আছেন। দ্বিতীয়ত, ইসরায়েল জানতে চায়, ওই পণবন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে কতজন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে?
এদিকে কমলা হ্যারিস বলেছেন, হামাস সংঘর্ষবিরতি চাইছে। তাদের জন্য খসড়া প্রস্তাব টেবিলে রাখা আছে। তারা তা মেনে নিলেই সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করা সম্ভব হবে।
দক্ষিণ গাজায় উদ্বাস্তু শিবিরে ইসরায়েলের আক্রমণ
খান ইউনিসের ইউএনআরডাব্লিউএ-এর একটি শিবিরে ইসরায়েল আক্রমণ চালিয়েছে। অন্তত ১২ জন নিহত। মৃতের সংখ্যা বাড়ছে।
ছবি: Ohad Zwigenberg/AP/picture alliance
খান ইউনিসের আশ্রয়শিবির
দক্ষিণ গাজার সবচেয়ে বড় শহর খান ইউনিস। ইসরায়েল গাজা স্ট্রিপে অভিযান চালানোর পর থেকে বহু মানুষ ঘর-বাড়ি ছেড়ে দক্ষিণ গাজার এই শহরে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। এখানেই ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্ক এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইনের (ইউএনআরডাব্লিউএ) সবচেয়ে বড় আশ্রয়শিবিরটি আছে।
ছবি: Ramez Habboub/AP Photo/picture alliance
ইসরায়েলের হামলা
এই আশ্রয় শিবিরে প্রায় ৪৩ হাজার উদ্বাস্তু বসবাস করছেন। শুধু তা-ই নয়, আশ্রয়শিবিরের বাইরে আরো অন্তত ৩০ হাজার মানুষ খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার এই আশ্রয় শিবির লক্ষ্য করে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে।
ছবি: Adel Hana/AP Photo/picture alliance
মৃতের সংখ্যা বাড়ছে
ইউএনআরডাব্লিউএ জানিয়েছে, এখনো পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। বহু মানুষকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।
ছবি: Ohad Zwigenberg/AP/picture alliance
ইসরায়েলের মাইকিং
ওই আশ্রয় শিবিরটি কার্যত ঘিরে রেখেছে ইসরায়েলের সেনা। মাইকিং করে তারা বলছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সকলকে ওই আশ্রয় শিবির ছেড়ে চলে যেতে হবে।
ছবি: Ohad Zwigenberg/AP/picture alliance
জাতিসংঘের প্রশ্ন
জাতিসংঘের বক্তব্য, হাজার হাজার মানুষের পক্ষে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আশ্রয়শিবির ছেড়ে চলে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। আশ্রয়শিবিরের বাইরে লড়াই চলছে। ফলে এই সময় শিবির ছেড়ে বাইরে যাওয়া মোটেই নিরাপদ নয়। তাছাড়া ৭০ হাজার মানুষের পক্ষে নতুন জায়গা খুঁজে বার করাও প্রায় অসম্ভব।
ছবি: Ohad Zwigenberg/AP/picture alliance
ইসরায়েল ও হামাসকে জানানো হয়েছিল
জাতিসংঘের সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা আশ্রয় শিবিরের সমস্ত তথ্য ইসরায়েল এবং হামাসকে দিয়ে রেখেছিল, যাতে সেখানে কোনোভাবেই লড়াই না হয়। তারপরেও ওই শিবিরে আক্রমণ চালানো হলো।
ছবি: Ohad Zwigenberg/AP/picture alliance
আন্তর্জাতিক আদালতে গাজা মামলা
আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ করেছিল সাউথ আফ্রিকা। আন্তর্জাতিক আদালত সেই মামলার প্রাথমিক রায় শুক্রবার দিতে পারে। জাতিসংঘ অবশ্য আন্তর্জাতিক আদালতকে মামলাটি গ্রহণ না করার আর্জি জানিয়েছিল। কিন্তু আদালত মামলাটি শুনেছে।
ছবি: Nicolas Economou/NurPhoto/picture alliance
অভিযান বন্ধের আবেদন
সাউথ আফ্রিকা নয়টি পয়েন্ট আদালতের সামনে রেখেছে। গাজায় বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা, তাদের জন্য আরো ত্রাণের ব্যবস্থা এবং যত দ্রুত সম্ভব ইসরায়েলের অভিযান বন্ধের আবেদন ওই পয়েন্টগুলির মধ্যে আছে। শুক্রবার আদালত ওই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ছবি: THILO SCHMUELGEN/REUTERS
চার হুতি নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য চার হুতি নেতার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ওই নেতাদের নির্দেশেই লোহিত সাগরে হুতি বিদ্রোহীরা একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।
ছবি: Mohammed Hamoud/Anadolu/picture alliance
9 ছবি1 | 9
ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার সদস্য অ্যামেরিকায়
ইসরায়েলের বাম মনোভাবাপন্ন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গান্টজ অ্যামেরিকায় পৌঁছেছেন। রোববার তিনি বৈঠক করেছেন অ্যামেরিকান-ইসরায়েলি পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে। সোমবার তার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা। বস্তুত, তিনি আলোচনায় বসতে পারেন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গেও।
গাজায় সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর নেতানিয়াহু যে যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা তৈরি করেছেন, গান্টজ তারও সদস্য। কিন্তু সম্প্রতি মন্ত্রিসভার ভিতরেই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করেছেন বিভিন্ন সদস্য। গান্টজ তাদের মধ্যে অন্যতম। কেন এখনো সমস্ত পণবন্দিকে মুক্ত করা গেল না, এ নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। বস্তুত, নেতানিয়াহুকে না জানিয়েই মার্কিন সফরে এসেছেন গান্টজ। এবিষয়ে নেতানিয়াহুর বক্তব্য, মনে রাখতে হবে, ইসরায়েলে একজনই প্রধানমন্ত্রী।
নেতানিয়াহুর দলের এক ব্যক্তি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গান্টজের সঙ্গে রীতিমতো কথা কাটাকাটি হয়েছে নেতানিয়াহুর।