নেতানিয়াহু জানিয়ে দিয়েছেন, আপাতত লড়াই বন্ধ করার কোনও প্রশ্নই নেই। জাতিসংঘ জানিয়েছে, পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ।
বিজ্ঞাপন
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, গাজা শহর ঘিরে ফেলেছে ইসরায়েলের সেনা। গাজার ভিতরেও তারা অভিযান শুরু করেছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ''প্রতি মুহূর্তে হামাসের যোদ্ধাদের চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বহু হামাস যোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।'' হামাসের কয়েক হাজার যোদ্ধাকে মারা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নেতানিয়াহু। যদিও হামাসের তরফে এর কোনো সত্যতা জানা যায়নি।
নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, যুদ্ধ বিরতির প্রশ্নই ওঠে না। যতক্ষণ না হামাস ইসরায়েল থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া পণবন্দিদের মুক্তি দেবে, ততক্ষণ যুদ্ধবিরতির হবে না। এমনকী, তেলও ঢুকতে দেওয়া হবে না না গাজা স্ট্রিপে। বস্তুত, সোমবারই জাতিসংঘ জানিয়েছিল, তেল না ঢুকলে ইনকিউবেটরে থাকা অসংখ্য শিশুর মৃত্যু হবে। বয়স্ক মানুষ যারা কৃত্রিম অক্সিজেন সাপোর্টে আছেন, তাদেরও মৃত্যু হবে। কিন্তু নেতানিয়াহু সে কথায় কর্ণপাত পরেননি।
গাজায় যে পরিমাণ মানবিক সহায়তা যাচ্ছে
গত সপ্তাহান্তে রাফা সীমান্ত দিয়ে গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানো শুরু হয়েছে৷ এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ সহায়তা পাঠানো হয়েছে সেখানকার বাসিন্দাদের?
ছবি: Ahmed Gomaa/Xinhua/IMAGO
কত ট্রাক সহায়তা?
সপ্তাহান্তে সীমান্ত খুলে দেওয়ার পর গাজায় শনিবার ২০ ট্রাক এবং রোববার ১৪ ট্রাক মিলিয়ে মোট ৩৪ ট্রাক সহায়তা পাঠানো হয়৷ সোমবার আরো ৪০টি ট্রাকে সহায়তা পাঠানোর খবর পাওয়া যায়৷ এরপর আর কোনো সহায়তার ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে কি না সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি৷
ছবি: Ahmed Gomaa/Xinhua/IMAGO
কী সহায়তা দেওয়া হচ্ছে?
জানা গেছে ট্রাকে করে খাবার পানি, ওষুধ, খাবার এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল৷ প্রবেশ পথে ট্রাকগুলোকে যাচাই-বাছাই করছে ইসরায়েলের নিরাপত্তারক্ষীরা৷ সহায়তার নামে যেন কোনো অস্ত্র প্রবেশ করতে না পারে সেজন্যই ট্রাকগুলোতে তল্লাশি চালায় ইসারায়েলি কর্তৃপক্ষ৷
ছবি: Ahmed Gomaa/Xinhua/IMAGO
কী দরকার গাজাবাসীর?
দাতা সংস্থাগুলো বলছে, গাজার সাধারণ মানুষের নিত্য চাহিদা মেটাতে দিনে অন্তত একশ ট্রাক সহায়তা প্রয়োজন৷ খাবার, ওষুধ ছাড়াও জ্বালানি সহযোগিতা দেওয়ার আহ্বান ত্রাণ সরবরাহকারী সংস্থাগুলোর৷ গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় পানির সংকট তৈরি হচ্ছে৷ তাছাড়া হাসপাতালগুলোকে চালু রাখতে প্রয়োজন জ্বালানি৷
ছবি: Hatem Ali/AP/picture alliance
জ্বালানি সরবরাহ করা হচ্ছে?
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, জ্বালানি নিয়ে ৬টি ট্যাংকার রাফাহ ক্রসিং অতিক্রম করেছে যদিও স্বতন্ত্র সূত্র থেকে এটি নিশ্চিত করা যায়নি৷ তবে ফিলিস্তিনের একজন মুখপাত্র বিষয়টি নিশ্চিত করলেও ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এমন তথ্যের কথা অস্বীকার করেছে৷ এদিকে, ফিলিস্তিনের বেসামরিক বিষয়ক ইসরায়েলের ডিফেন্স বডির পক্ষ থেকে বলা হয়, জাতিসংঘের একটি তেলের ডিপো থেকে হাসপাতালে জ্বালানি সরবরাহ করা হয়েছে৷
ছবি: Mohammed Abed/AFP/Getty Images
অপেক্ষমাণ সহায়তা
সীমান্ত খুলে দেওয়ার পর থেকে গাজায় প্রবেশের লক্ষ্যে কয়েক দিন ধরে সহায়তার ট্রাক অপেক্ষমাণ রয়েছে৷ জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা জানায়, গাজা সীমান্তে সংস্থাটির এক হাজার টন খাদ্য সরবরাহের অপেক্ষায় রয়েছে৷
ছবি: Ibraheem Abu Mustafa/REUTERS
সহায়তায় কোন কোন দেশ
ফিলিস্তিনীদের সহায়তায় এরইমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মিশরে সহায়তা পাঠিয়েছে৷ এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, রাশিয়া, তুরস্ক এবং রুয়ান্ডাসহ বেশ কয়েকটি আরব দেশ৷
ছবি: Mohammed Asad/AP Photo/picture alliance
জার্মানির অর্থ সহায়তা বৃদ্ধি
গাজার বসবাসরত সাধারণ মানুষের জন্য ৫০ মিলিয়ন ইউরোর বাড়তি সহায়তা ঘোষণা করেছে জার্মানি৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা দেন৷ জার্মানির এই সহয়তা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর কার্যক্রমে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য বেয়াবকের৷
ছবি: Annette Riedl/dpa/picture alliance
7 ছবি1 | 7
ইসরায়েলের সামরিক প্রধান জানিয়েছন, বেসামরিক মানুষদের আগেই বলা হয়েছে, তারা যেন দক্ষিণ গাজায় গিয়ে আশ্রয় নেন। যারা জাননি, তাদের প্রাণের দায়িত্ব ইসরায়েলের নয়।
জাতিসংঘের বক্তব্য
জাতিসংঘে ফিলিস্তিন বিষয়ক সংস্থার মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজা স্ট্রিপে ইতিমধ্যেই ৮৯ জন জাতিসংঘের কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। যে কোনো লড়াইয়ের নিরিখে এখনো পর্যন্ত যা সর্বাধিক।
এছাড়া ২৬ জন আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাইরে কাউকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
জাতিসংঘের তরফে জানানো হয়েছে, দেড় মিলিয়ন মানুষের বেশি গাজায় এখন গৃহহীন। তাদের অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় শেল্টার ক্যাম্প করে আছেন। ডিডাব্লিউ তাদের সুরক্ষার কারণেই পরিচয় জানাতে চায় না।
এদিকে জো বাইডেনের হোয়াইট হাউসের এক প্রতিনিধি মঙ্গলবার কার্যত কাউকে না জানিয়ে লেবানন গেছিলেন। কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী এবং অন্য প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। লেবানন থেকে যাতে লড়াই বাড়ানো হয়, তার আর্জি জানিয়ে এসেছেন তিনি।