দক্ষিণ গাজায় নির্দিষ্ট একটি সময়ে ইসরায়েল হামলা চালাবে না বলে জানিয়েছে সে দেশের প্রশাসন।
বিজ্ঞাপন
ইসরায়েল অবশ্য এটিকে সংঘর্ষ-বিরতি বলছে না। তাদের ভাষায় এটি হলো 'ট্য়াকটিকাল পস' বা কৌশলগত বিরতি। তাদের বক্তব্য়, দক্ষিণ গাজায় যাতে ঠিকমতো ত্রাণ পৌঁছাতে পারে, সে জন্য়ই এই অবস্থান নেয়া হয়েছে। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় এই ছাড় দেওয়া হবে। সে সময় ইসরায়েলের সেনা দক্ষিণ গাজার কোথাও হামলা চালাবে না। ত্রাণকর্মীরা নিরাপদে প্রয়োজনীয় জিনিস বিলি করতে পারবেন।
তবে উত্তর বা মধ্য গাজায় এই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। এদিকে ঈদের দিন সংঘর্ষ-বিরতির আর্জি জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার বিবৃতিতে বাইডেন লিখেছেন, 'বহু মানুষের মৃত্য়ু হয়েছে। বহু শিশু নিহত হয়েছে। পরিবার ধ্বংস হয়েছে। মানুষ প্রতিবেশীকে হারিয়েছেন। এ এক চূড়ান্ত যন্ত্রণা।'
ইটালির জি৭ শীর্ষবৈঠকে গুরুত্ব পাবে ইউক্রেন, গাজা, অভিবাসন
ইটালির পুলিয়াতে শুরু হচ্ছে জি৭ দেশগুলির শীর্ষ বৈঠক। আলোচনায় প্রাধান্য পাবে ইউক্রেন, গাজা, অভিবাসন।
ছবি: Piero Cruciatti/AFP/Getty Images
শীর্যবৈঠক হবে এই রিসর্টে
দক্ষিণ ইটালির পুলিয়ার বোরগো এগনাজিয়া রিসর্টে হবে এই শীর্ষবৈঠক। জি৭ দেশ অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইটালি, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান ও ক্যানাডার রাষ্ট্রপ্রধানরা যোগ দেবেন। এছাড়াও বিশেষ আমন্ত্রিত হিসাবে থাকবেন পোপ এবং ভারত, ইউক্রেন, তুরস্ক, সাউথ আফ্রিকার প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট।
ছবি: Dreamstime Djpillow/Panthermedia/IMAGO
আলোচনার বিষয়
এবার জি৭ বৈঠকে আলোচনার প্রধান বিষয় হলো ইউক্রেন, গাজা ও অভিবাসন। কর্মসূচিতে ইউক্রেনের বিষয়টি একেবারে উপরের দিকে আছে। জেলেনস্কিও বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন। পশ্চিমা দেশগুলির কাছে তিনি আরো সাহায্য চাইতে পারেন। রাশিয়ার সেন্ট্রাল ব্যাংকের ফ্রিজ করে রাখা ৩২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সম্পদের সুদ থেকে কিয়েভকে সাহায্য করার বিষয়টি নিয়েও সিদ্ধান্ত হতে পারে।
ছবি: Italy Photo Press/IMAGO
ইটালির প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য
ইটালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি বলেছেন, ''আমরা জি৭ শীর্ষবৈঠকের আয়োজন করতে পেরে গর্বিত। আর ইউরোপের মধ্যে আমাদের সরকারই এখন সবচেয়ে শক্তিশালী।'' সদ্যসমাপ্ত ইইউ নির্বাচনে মেলোনির দল খুব ভালো ফল করেছে। মাক্রোঁ, শলৎসের দল করেনি। যুক্তরাজ্যে সমীক্ষা বলছে, প্রধানমন্ত্রী সুনাকও আসন্ন নির্বাচনে হারতে পারেন। এই শীর্ষবৈঠককে সামনে রেখে তার সাফল্যের বিষয়টিও তুলে ধরতে চান মেলোনি।
ছবি: Elisa Gestri/Sipa USA/picture alliance
বাইডেন পৌঁছে গেছেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইটালিতে পৌঁছে গেছেন। বাইডেনকেও এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে হবে। বাইডেন বিশেষভাবে আগ্রহী গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে। এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব জাতিসংঘ অনুমোদন করেছে। জি৭ সদস্য দেশগুলিও চাইবে, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিক ইসরায়েল ও হামাস।
ছবি: Mandel Ngan/AFP/Getty Images
জেলেনস্কি বিশেষ আমন্ত্রিত
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বিশেষ আমন্ত্রিত হিসাবে বৈঠকে থাকবেন। জেলেনস্কি ইউক্রেনের জন্য আরো দূরপাল্লার অস্ত্র, গোলাবারুদ ও এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম চান। ইউক্রেনকে পাঁচ হাজার কোটি ডলার ঋণ দেয়া ও রাশিয়ার ব্যাংকের বাজেয়াপ্ত অর্থের সুদ থেকে তা পরিশোধ করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
ছবি: Ebrahim Noroozi/AP/picture alliance
শলৎস যা চান
ইউক্রেনে সামরিক প্রশিক্ষক ও পরিকল্পনাকারদের পাঠানোর বিষয়ে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু জার্মানির চ্যান্সেলর শলৎস এর তীব্র বিরোধী। যুক্তরাষ্ট্র ও ইটালিও এই প্রস্তাবের বিরোধী। শলৎস চান, যুদ্ধের পর কীভাবে ইউক্রেনকে গড়ে তোলা হবে, সেই বিষয়ে নিজেদের রায় দিক জি৭ দেশগুলি।
ছবি: Annegret Hilse/Reuters/AP/picture alliance
মোদী যোগ দিচ্ছেন
তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই ইটালিতে জি৭ শীর্ষবৈঠকে যোগ দেবেন নরেন্দ্র মোদী। ভারতকে বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রিত হিসাবে ডাকা হয়েছে। মোদী ২৪ ঘণ্টার সফরে ইটালি যাচ্ছেন। জি৭ সম্মেলনের পর শীর্ষনেতারা সুইজারল্যান্ডে ইউক্রেন শান্তি সম্মেলনে যোগ দেবেন। সেখানে মোদী থাকছেন না। তবে আগামী মাসে এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে তার কাজাখস্তান যাওয়ার কথা আছে।
ছবি: Sipa USA/picture alliance
নিরাপত্তা ব্যবস্থা
দক্ষিণ ইটালির উপকূলবর্তী পুলিয়া পর্যটকদের পছন্দের জায়গা। সেখানে এই জি৭ বৈঠক নিয়ে সাজ সাজ রব। বিশেষ করে এতজন ভিভিআইপি-র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দিনরাত কাজ করছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। নিরাপত্তা বাহিনী বারবার করে ঘুরে দেখছে, সবকিছু ঠিক আছে কিনা।
ছবি: Alessandro Garofalo/REUTERS
8 ছবি1 | 8
এরপরেই বাইডেন জানিয়েছেন, তিন ধাপের যে সংঘর্ষ-বিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তা দ্রুত কার্যকর হোক। তাহলেই একমাত্র এই লড়াই বন্ধ হবে। ইসরায়েল প্রাথমিকভাবে এই চুক্তি মেনে নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। কারণ, চুক্তির অনেক পয়েন্টই ইসরায়েল প্রস্তাব করেছিল। যদিও ইসরায়েলের অতি দক্ষিণপন্থি রাজনীতিকেরা এই চুক্তির বিরোধিতা করছেন। নেতানিয়াহুর সমালোচনাও করছেন তারা। এদিকে অ্যামেরিকা এখন হামাসের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালাচ্ছে। হামাস এই প্রস্তাব মেনে নিলে দীর্ঘকালীন সংঘর্ষ-বিরতির রাস্তায় যাওয়া সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।
হেজবোল্লার সঙ্গে সংঘাত
এদিকে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। অভিযোগ, হেজবোল্লা ওই সীমান্ত থেকে ইসরায়েলের উপর লাগাতার আক্রমণ চালাচ্ছে। ইসরায়েলও পাল্টা জবাব দিয়েছে। সম্প্রতি ইসরায়েলের সেনা জানিয়েছে, হেজবোল্লা সংযত না হলে সংঘাত আরো বাড়বে। তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে গোটা লেবাননেই আক্রমণ চালানো হবে বলে হুমকি দিয়েছে ইসরায়েলের সেনা। উল্লেখ্য, ইসরায়েল মনে করে, হেজবোল্লা গোষ্ঠীকে ইরান সমর্থন করে এবং তারাই হেজবোল্লার কাছকে অস্ত্রও দেয় তারা।