গাজায় ইসরায়েলি হামলার অনুকরণে তৈরি একটি মোবাইল গেম ‘অ্যাপ স্টোর' থেকে সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক ইন্টারনেট ও সফটওয়্যার কোম্পানি গুগল৷ কয়েকদিন আগে গেমটি প্রকাশ করে ‘প্লেএফটিডাব্লিউ' নামক একটি প্রতিষ্ঠান৷
বিজ্ঞাপন
‘বোম্ব গাজা' গেমটিতে খেলা হিসেবে গাজায় বেসামরিক প্রাণহানি এড়িয়ে বোমা ফেলতে আহ্বান জানানো হয়েছিল৷ কালো-সবুজ মুখোশ পরিহিত ইসলামপন্থি হামাস যোদ্ধাদের রকেট হামলার জবাবে যুদ্ধবিমান থেকে বোমা ফেলার সুযোগ পেতেন গেমাররা৷
গুগলের এক মুখপাত্র গেমটি মুছে ফেলার খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের নীতির লঙ্ঘন করে এমন অ্যাপ গুগল প্লে থেকে সরিয়ে নেই আমরা৷'' তিনি অবশ্য গেমটি কোন নীতি লঙ্ঘন করেছে তা পরিষ্কারভাবে জানাননি৷ তবে ঘৃণা ছড়ায়, বিদ্বেষমূলক কিংবা সহিংসতাকে উসকে দেয় এমন কন্টেন্ট অ্যাপ স্টোরে প্রকাশ গুগলের নীতি বিরুদ্ধ৷
গাজার শিশুদের কী অপরাধ?
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য মানুষ৷ পরিসংখ্যান বলছে, নিহতদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশই শিশু ও নারী৷ বোমার আঘাতে প্রাণ হারানো শিশুরা হয়ত যুদ্ধ কি তাই জানে না৷ গাজার শিশুদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: Reuters
ধ্বংসের মাঝে বেঁচে থাকা
ইসরায়েলি বিমান হামলায় বিধ্বস্ত একটি গাড়ি পরীক্ষা করে দেখছে এক ফিলিস্তিনি শিশু৷ ছবিটি গত ১৪ জুলাই তোলা৷ বিমান হামলায় গাজায় নিহতদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশই নারী ও শিশু৷
ছবি: Mohammed Abed/AFP/Getty Images
পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা
ইসরায়েলের বিমান হামলা থেকে বাঁচতে পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটছেন ফিলিস্তিনিরা৷ তবে গাজায় তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নেই বললেই চলে৷ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা মনে করেন, ইসরায়েলের হামলা সহসা বন্ধের কোনো লক্ষণ নেই৷
ছবি: Reuters
অপেক্ষা
ইসরায়েলি হামলায় আহত ফিলিস্তিনি এই ছেলেটি গাজার দক্ষিণাঞ্চলে মিশর সীমান্তে অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে মিশরে ঢোকার জন্য অপেক্ষা করছে৷ আহতদের চিকিৎসার সুবিধার্থে মিশর রাফা সীমান্ত খুলে দেয় ১০ জুলাই৷
ছবি: Said Khatib/AFP/Getty Images
স্কুলে রাতযাপন
বাড়িতে যে-কোনো মুহূর্তে পড়তে পারে ইসরায়েলের বোমা৷ তাই ঘরবাড়ি ছেড়ে এই শিশুরা আশ্রয় নিয়েছে গাজায় অবস্থিত জাতিসংঘের স্কুলে৷ এখানে যে বোমা পড়বে না, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই৷ তবে আশঙ্কা কম৷
ছবি: Mahmud Hams/AFP/Getty Images
আতঙ্ক
বাড়ির উপরে উড়ছে ইসরায়েলি ড্রোন৷ আর সেটাই দেখছে এই শিশুটি৷
ছবি: Thomas Coex/AFP/Getty Images
ইয়াসমিনের জানাজা
গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলের বিমান হামলায় প্রাণ হারায় চার বছরের শিশু ইয়াসমিন৷ ছবিটি ১০ জুলাই তার জানাজার সময় তোলা৷
ছবি: Reuters
বিনা অপরাধে শাস্তি
গাজার শিশুরা জানে না তাদের অপরাধ কি? কেনই বা বোমা হামলার নির্মম শিকার তারা? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটারেও এমন প্রশ্ন করেছেন অনেকে৷ গত ১৪ জুলাই তোলা ছবিতে চাচার মৃত্যুতে কাঁদছে দুই শিশু৷
ছবি: Mahmud Hams/AFP/Getty Images
প্রতিবন্ধীদের আশ্রয়
ছবিটি ২০১২ সালের এপ্রিলে তোলা৷ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এক শিশুকে জাতিসংঘের স্কুলে নিয়ে যাচ্ছে তার এক সহপাঠী৷ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আহতও হচ্ছে অসংখ্য শিশু৷ পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে তাদের৷ তবে এই শিশুটি ইসরায়েলি হামলায় দৃষ্টি হারিয়েছে কিনা জানা যায়নি৷
ছবি: Reuters
নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান
ইসরায়েলের বিমান হামলা থেকে বাঁচতে অনেক ফিলিস্তিনি তাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান করছেন৷ তবে গাজার দু’দিকে ইসরায়েল, একদিনে মিশর এবং অপর পাশে সমুদ্র৷ এই অবস্থায় নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাওয়া দুষ্কর৷ তবুও প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
হামলা নতুন নয়
গাজায় ইসরায়েলের হামলা নতুন নয়৷ হামাসের রকেট ছোড়ার জবাব সেদেশ দেয় বিমান হামলার মাধ্যমে৷ আর তাতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রাণ হারায় নারী, শিশু এবং হামাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন মানুষ৷
ছবি: Reuters
10 ছবি1 | 10
২৯শে জুলাই ইন্টারনেটে প্রকাশের পর এক হাজারবারের মতো সেটি গুগল স্টোর থেকে ডাউনলোড করা হয়েছে৷ স্টোরের রিভিউ পাতায় গেমটির ব্যাপারে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন অনেকে৷ গেমটি সরিয়ে নেয়ার আগে সেখানে ওমা আলি নামক এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘‘দয়া করে প্লে স্টোর থেকে গেমটি সরিয়ে নিন৷ এটা অবমাননাকর এবং আমি হতাশ যে গুগল এই গেম প্রকাশের সুযোগ দিয়েছে৷ যদি গেমটি সরিয়ে নেয়া না হয় তাহলে আমি গুগল বয়কট শুরু করবো৷''
প্রসঙ্গত, গুগল সরিয়ে নিলেও ফেসবুকে এখনো গেমটি রয়েছে৷ আর এই বিষয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স চেষ্টা করেও ফেসবুকের কোনো মন্তব্য পায়নি৷ গেমটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান প্লেএফটিডাব্লিউও মন্তব্য করা থেকে বিরত রয়েছে৷
উল্লেখ্য, গত ৮ই জুলাই গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল৷ সেখানকার সেনাবাহিনীর দাবি, হামাসের ছোড়া রকেটের জবাবে এই হামলা তাদের৷ গাজার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের হামলায় মঙ্গলবার (০৫.০৮.১৪) পর্যন্ত ১,৮০০-র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন৷
জাতিসংঘের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, নিহত ফিলিস্তিনিদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক৷ অন্যদিকে, ইসরায়েলের ৬০ জনের বেশি সেনা এবং তিনজন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন৷