গাজায় যেভাবে ত্রাণ পাঠাচ্ছে জার্মানি
৫ এপ্রিল ২০২৪এর মধ্যে গাজায় আরেকটি ঘটনা ঘটেছে। ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের সাতজন কর্মী মারা গেছেন। এই ত্রাণকর্মীরা গাজার ২৪ লাখ মানুষের কষ্ট কিছুটা কম করার জন্য কাজ করছিলেন। এই ঘটনা আবার দেখিয়ে দিয়েছে, গাজায় আন্তর্জাতিক ত্রাণ পাঠানো কতটা কঠিন। ফলে জার্মানিও সেখানে ত্রাণ পাঠাতে গিয়ে কঠিন অবস্থার মধ্যে পড়ছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জার্মান ত্রাণ সংগঠনগুলি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতির তুলনায় সামান্য সাহায্য করতে পেরেছে। জার্মান রেড ক্রস সাধারণত বাড়িয়ে-চড়িয়ে কোনো মন্তব্য করে না। তারা জানিয়েছে, গাজার পরিস্থিতি বিপর্যয়কর।
জার্মানির সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী হ্যাসেলফিল্ডট-সহ রক্ষণশীল সিএসইউ রাজনীতিকরা সম্প্রতি বলেছেন, গাজায় ত্রাণ পাঠানোর জন্য খুবই সামান্য জায়গা খোলা রয়েছে। ফলে সেখানে যা ত্রাণ যাচ্ছে তা খুবই কম। সেখানে সবকিছুর অভাব রয়েছে। তার উপর সেখানে লড়াই তীব্র হচ্ছে, ঝুঁকিও বাড়ছে। আরো আক্রমণের ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। ফলে পরিস্থিতি আরো জটিল হচ্ছে।
গাজায় ত্রাণ পাওয়া কঠিন
২০১৭ থেকে জার্মান রেড ক্রসের নেতৃত্বে আছেন হ্যাসেলফিল্ডট। তিনি এখনো বলতে পারছেন না কবে নাগাদ তার সংস্থা গাজায় ত্রাণ পাঠাতে পারবে। তিনি জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি প্লেনভর্তি করে ত্রাণসামগ্রী তিনি মিশর হয়ে গাজা ভূখণ্ডে পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে খাবার ছাড়াও ওষুধ ও অন্য প্রয়োজনীয় জিনিস ছিল।
জার্মানি ও অন্য দেশগুলির সরকার ও সরকারি সংস্থার মধ্যে উন্নয়ন সংক্রান্ত সহযোগিতার ব্যবস্থা থাকে। আর্থিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কাটজা হুমেল ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''জার্মান করপোরেশন ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপরেশন(জিআইজেড) গাজার জন্য কোনো স্থায়ী কর্মকর্তা রাখেনি। আগে জার্মানি থেকে কর্মীরা গাজায় যেতেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হচ্ছে না।''
চার্চ গ্রুপগুলি যেভাবে কাজ করছে
জাার্মানির চার্চের ত্রাণ সংস্থাগুলিরও একই অবস্থা। ক্যারিটাস ইন্টারন্যাশনালের মুখপাত্র ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''আমরা সবসময় স্থানীয় মানুষ বা সংগঠন, যারা মানুষকে সাহায্য করছে, তাদের সঙ্গে কাজ করি। আমরা বিশ্বের অন্য ক্যাথলিক গোষ্ঠীর সঙ্গেও হাত মিলিয়ে কাজ করি।''
তিনি জানিয়েছেন, ''জার্মানির বিমানবাহিনী জর্ডান থেকে বিমানে করে ত্রাণসামগ্রী আকাশ থেকে ফেলেছে। এই সাহায্য যদি মানুষের কাছে পৌঁছায় তো সবচেয়ে বলশালী মানুষের কাছে পৌঁছেছে। সাধারণত সড়কপথে বা সমুদ্রপথে ত্রাণ পৌঁছে দেয়াটা সহজ। কিন্তু হামাসের আক্রমণের পর এই ধরনের পথ খুবই কম আছে।''
মার্চের মাঝামাঝি থেকে জার্মানি বিমান থেকে ত্রাণসামগ্রী ফেলছে। জর্ডান থেকে দুইটি বিমান এই ত্রাণসামগ্রী ফেলার কাজে লাগানো হয়েছে। এই কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন জার্মানি ও ফ্রান্সের কর্মীরা।
সম্প্রতি জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিশর সফর করেছেন। তিনি সেখানে সড়কপথে গাজায় ত্রাণ পাঠানোর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
বেয়ারবক বলেছেন, আকাশপথে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ফেলে দেয়াটা সমুদ্রে এক বিন্দু জল ফেলার মতো।
জেনস থুরাউ/জিএইচ/ডিডাব্লিউ