গাজায় হামলা অব্যাহত থাকলেও মানবিক সাহায্য পাঠাবে ইসরায়েল
৭ জানুয়ারি ২০০৯ইসরায়েলী কর্মকর্তারা অবশ্য প্রথম থেকেই যুদ্ধবিরতির আবেদন প্রত্যাখ্যান করে আসছেন৷ ওদিকে, হামাস গাজায় ইসরায়েলী হামলা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার এবং গাজা ক্রসিং পুরোপুরি খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে৷
খুব স্বাভাবিকভাবেই, এই হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ জনজীবন৷ ইতিমধ্যেই গাজার দক্ষিণে অবস্থিত খান ইউনিস অঞ্চলে ইসরায়েলী স্থলকামান প্রবেশ করেছে বলে জানা গেছে৷ ফলে ইসরায়েল গাজায় স্থল হামলা শুরুর পর এ পর্যন্ত প্রায় ৬০০ জন ফিলিস্তিনী নিহত হয়েছে বলে প্রকাশ৷ আর নিহত ঐ ৬০০ জনের মধ্যে ১৩০ জন হামাস যোদ্ধা বলে দাবী করেছে ইসরায়েল৷
গাজায় জাতিসংঘের প্রতিনিধি জন গিং সেখানকার মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন : এমতাবস্থায় কি করা হবে এবং কি হবে না – কাউকে তো তার দায়িত্ব নিতেই হবে৷ গাজাতে কি হচ্ছে তা আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের চোখের সামনে দেখতে পারছি৷ এটা অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার৷
এদিকে, ফিলিস্তিনী প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি বৈঠকে অংশ নিয়েছেন৷ আব্বাস ছাড়াও ঐ বৈঠকে যোগ দেন সৌদীআরব, মিশর, ফ্রান্স এবং ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা৷ গাজায় ইসরায়েলী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একটি গ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যে নিরাপত্তা পরিষদের ওপর চাপ দেওয়াই ঐ বৈঠকের প্রধান লক্ষ্য৷ উল্লেখ্য, নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠকের পর, অবশেষে গাজাতে মানবিক সাহায্য পাঠাতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল৷
তবে যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে সার্কোজির মধ্যপ্রাচ্য সফর সত্ত্বেও, একটি সহমত চুক্তিতে পৌঁছোতে পারেনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ অথচ, বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লু বুশের মধ্যপ্রাচ্যে নীতি ব্যর্থ হওয়ায়, ধারণা করা হচ্ছিল যে এই সংকট নিরসনে ইউরোপের দিক থেকে একটি গঠনমূলক ভূমিকা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে৷ আর দীর্ঘ নিরবতার পর গাজার মানুষদের প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ ভেনেজুয়েলাও তাদের তাদের ইসরায়েলী রাষ্ট্রদূতকে বরখাস্ত করেছে বলে জানা গেছে৷
অন্যদিকে, জঙ্গি সংগঠন আল-কায়দার দুই নম্বর নেতা আইমান আল-জাওয়াহরি, ইসরায়েলী হামলার প্রতিবাদে মুসলিমদের পশ্চিমা বিশ্ব এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে৷
তারপরও গাজায় এই ইসরায়েলী হামলাকে স্বল্পমেয়াদী হিসেবে দেখতে চান ইসরায়েলী শিক্ষামন্ত্রী উলি তামির৷ তাঁর কথায : যুদ্ধবিরতি সকলেরই কাম্য৷ কিন্তু, তার জন্য তিনটি শর্ত রয়েছে৷ প্রথমত, গাজাতে রকেট হামলা বন্ধ করতে হবে হামাসকে৷ দ্বিতীয়ত, তাদের মিশর থেকে অস্ত্র চোরাচালান বন্ধ করতে হবে এবং তৃতীয়ত, অন্যতম ইসরায়েলী সেনা কর্মকর্তা গিলাট শালিতকে ফিরিয়ে দিতে হবে হামাসকে৷
আর তা না করা পর্যন্ত ইসরায়েল গাজায় এই হামলা চালিয়ে যাবে৷ জানান ইসরায়েলী প্রধানমন্ত্রী এহুদ অলমার্টও৷