১৩টি নৌকা আটকানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তাদের ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। এখনো ৩০টি নৌকা গাজার দিকে যাচ্ছে।
গাজা উপকূলে আটক ত্রাণের নৌকাছবি: Global Sumud Flotilla/REUTERS
বিজ্ঞাপন
গোটা বিশ্বের মানবাধিকার কর্মীরা কয়েক ডজন নৌকায় ত্রাণ নিয়ে গাজার দিকে রওনা হয়েছিলেন। বুধবার গাজা উপকূল থেকে কিছু দূরে ১৩টি নৌকা বা ফ্লোটিলা আটক করে ইসরায়েলের উপকূল বাহিনী। তবে এখনো ৩০টি নৌকা গাজার দিকে যাচ্ছে বলে মানবাধিকার কর্মীরা জানিয়েছেন।
অভিযোগ, গাজা উপকূল থেকে ৪৬ নটিকাল মাইল দূরে ওই নৌকাগুলিকে আটক করা হয়। ওই নৌকাগুলির লাইভ স্ট্রিমিং বন্ধ হয়ে গেছে। যে মানবাধিকার কর্মীরা ওই নৌকাগুলিতে আছেন, তাদের সঙ্গে এখনো যোগাযোগ করা যায়নি বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। ইসরায়েলের তরফে এখনো এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
মানবাধিকার কর্মীরা জানিয়েছেন, গাজায় ত্রাণ সরবরাহের জন্য তারা যাচ্ছিলেন। বাকি ৩০টি নৌকা এখনো গাজার দিকে যাত্রা করছে বলেও তারা জানিয়েছেন।
যুদ্ধকে লজ্জা দিতে যেখানে বেজে ওঠে সংগীতের সুর
বিধ্বস্ত গাজার বাতাসে ভেসে বেড়ায় মানুষের কান্না, যন্ত্রণার খতিয়ান৷ তার মধ্যেও বেঁচে থাকার রসদ খোঁজেন তরুণ সংগীতশিল্পীরা৷ শান্তি খোঁজেন সুর ও গানের মধ্যে দিয়ে৷ খোঁজেন আশার আলোও৷ বিস্তারিত ছবিঘরে...
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
ভয়ের বিরুদ্ধে আশার লড়াই
গাজা সিটি দখল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল৷ যুদ্ধে ভেঙেছে গাজা কলেজের ঘর৷ গুলিবিদ্ধ দেওয়াল, ভাঙা জানলা৷ মোহাম্মদ আবু মেহেদির কাছে এ আর নতুন কিছু নয়৷ তাই এমন পরিস্থিতিতেও তিন ছাত্রী ও এক ছাত্রকে তিনি শেখাতে পারেন গিটার৷ মেহেদি মনে করেন, এই দুর্বিষহ সময়ে সংগীত মানুষকে একটু হলেও মানসিক শান্তি দিতে পারে৷
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
হার না মানা এক শিক্ষক
২০২৪ সালের শুরুতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দক্ষিণ গাজায় সংগীতের ক্লাস নিতে শুরু করেন আহমদ আবু আমশা৷ এডওয়ার্ড সাইদ ন্যাশনাল কনজার্ভেটরি অব মিউসিক-এর অন্যতম শিক্ষক তিনি৷ দক্ষিণ গাজার যুদ্ধের আতঙ্কগ্রস্ত ভীত কিশোর-কিশোরীদের গান ও বাজনা শেখাতে শুরু করেন আহমদ৷
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
‘সংগীত আমাকে আশা জোগায়’
‘‘গান-বাজনা আমাকে আশা জোগায় ও সব উৎকণ্ঠা দূর করে৷’’ জানিয়েছে ১৫ বছরের রিফান আল কাসাস৷ ন‘বছর বয়স থেকে সে আরবি বাদ্যযন্ত্র ‘উদ’ বাজাতে শিখেছে৷ তার আশা, একদিন সে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাজাবে৷
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
পরিস্থিতি ভয়াবহ
সংগীত শিক্ষকের তাঁবু থেকে বেরোলেই চোখের সামনে বিধ্বস্ত গাজা শহরের চিত্র৷ আপৎকালীন আশ্রয়শিবিরে শত শত মানুষ৷ একটু খাবার, ওষুধ, একফোঁটা জলের জন্য হাহাকার৷ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়েই ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত৷ কেউ কেউ ক্লাসে আসতেও পারেন না৷ দৃশ্যটি ১২ আগস্টের৷
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
মৃত্যু ও যন্ত্রণাকে হারাতে
ধ্বংস হয়ে যাওয়া স্কুলবাড়ির সামনে নিজের বাদ্যযন্ত্র উদ নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ১৮ বছরের ইউসেফ সাদ৷ স্কুলের বাকি সব বাদ্যযন্ত্রই ধ্বংস হয়ে গেছে৷ ১৮ বছরের এই তরুণের স্বপ্ন, ‘‘একদিন আমি নিশ্চয়ই শিশুদের সংগীতের পাঠ দিতে পারবো, যাতে তারা ধ্বংসলীলা সত্ত্বেও সৌন্দর্যকে বেছে নেয়৷’’
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
মঞ্চ, শ্রোতা ও দর্শক
পরিস্থিতি ভয়াবহ, কিন্তু সংগীত তো সবসময়েই শ্রোতাকে খুঁজে নেয়৷ যুদ্ধবিধ্বস্ত শহরে একটি তাঁবুর মধ্যেই অনুষ্ঠানের আয়োজন৷ সে অনুষ্ঠানের শেষে প্রশংসা ও হাততালিতে ফেটে পড়ে সেই তাঁবু৷ ২০ বছরের এক তরুণ শিক্ষার্থী জানান, ‘‘সংগীতের নতুন ধরন নিয়ে জানতে আমার ভালো লাগে৷ তার চেয়েও ভালো লাগে রক (সংগীতের এক বিশেষ ঘরানা)৷’’ দৃশ্যটি ৪ আগস্টের৷
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
এক মুহূর্তের আনন্দ
কোনোরকমে খাড়া করা মঞ্চে শিশুদের কচি গলার গান যেন হারিয়ে দেয় প্রতিদিনের বিস্ফোরণের শব্দকে৷ দৃশ্যটি ৪ আগস্টের৷
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
যন্ত্রণা বনাম সংগীত
ওসামা জাহৌজ ‘নেই’ নামক একটি বাঁশি বাজান৷ মূলত আরবি, ফারসি ও তুর্কী সংগীতে এই বাঁশি বাজানো হয়৷ তার কথায়, ‘‘ বোমা বিস্ফোরণ তীব্র হলে আমি শ্বাসের ব্যায়াম করি, বা খুব নিচু লয়ে বাঁশি বাজাই৷ বাজানোর সময় মনে হয় আমি আবার স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারছি৷ নেই যেন আমার যন্ত্রণাকে ধীরে ধীরে মুছে দিচ্ছে৷’’
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
8 ছবি1 | 8
এদিকে এদিনের এই ঘটনার পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ইসরায়েলের কঠোর সমালোচনা করেছেন। যেভাবে মানবাধিকার কর্মীদের নৌকা আটকানো হয়েছে, তাকে সন্ত্রাসী কাজ বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে রেডক্রস জানিয়েছে, গাজা শহরে আপাতত তারা কাজ বন্ধ রেখেছেন। কারণ, ইসরায়েল যেভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে, তাতে সেখানে কাজ করা সম্ভব নয় বলে তারা মনে করছেন। যদিও সেখানে তাদের উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরি বলেও তারা দাবি করেছেন। বহু মানুষ আহত অবস্থায় বিনা চিকিৎসায় সেখানে আটকে আছেন বলে দাবি করেছে রেডক্রস।
ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে বিতাড়ণ
কলম্বিয়া ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে দেশ থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো জানিয়েছেন, শুধু রাষ্ট্রদূত নয়, কলম্বিয়া থেকে ইসরায়েলের সমস্ত কূটনীতিককে বিতাড়ন করা হবে। ইসরায়েল যেভাবে ত্রাণকর্মীদের জাহাজ আটকেছে তার প্রতিবাদে একাজ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
২০২০ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে হওয়া বাণিজ্যচুক্তিও বাতিল করেছে কলম্বিয়া। প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, যে নৌকাগুলি আটকানো হয়েছে, সেখানে দুইজন কলম্বিয়ার মানবাধিকার কর্মী ছিলেন। ইসরায়েলের সেনা তাদের আটক করেছে।
ইটালিতে প্রতিবাদ
বুধবার বিকেল থেকে ইটালির একাধিক শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ফ্লোটিলা আটকের তীব্র নিন্দা করে ইটালির মানবাধিকার কর্মীরা এবং সাধারণ মানুষ বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন। ফিলিস্তিনের পক্ষে স্লোগান দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি গাওয়া হয়েছে বিখ্যাত বেলা চাও গান।