দুই ইজরাযেলি নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে হামাস। দুইজনেরই বয়স ৭৫ বছরের বেশি। দীর্ঘদিন তারা হামাসের হাতে হাতে বন্দি ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জানিয়েছেন, দুই ইসারায়েলি নাগরিকের মুক্তির খবর পেয়ে অ্যামেরিকা অত্যন্ত খুশি। বাকি পণবন্দিদের মু্ক্তির আবেদন নতুন করে জানিয়েছে তারা।
যে দুই বন্দিকে হামাস ছেড়েছে তাদের নাম ইওশেফেড লিফশিটজ এবং নুরিট কুপার। একজনের বয়স ৮৫, অন্যজনের ৭৯। গত ৭ অক্টোবর থেকে তারা পণবন্দি ছিলেন। এর আগে এক মার্কিন মা এবং তার মেয়েকে ছেড়েছিল হামাস। অ্যামেরিকা-সহ ইউরোপের অধিকাংশ দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে মনে করে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের একটি অনুষ্ঠানের মঞ্চে এসে তারা নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল। সেখান থেকেই শতাধিক মানুষকে পণবন্দি করে নিয়ে যায় তারা। এই দুই ব্যক্তিও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
আকস্মিক সংঘাতে অসহায় ফিলিস্তিন
হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের পাল্টা আঘাতে পরিস্থিতি এমন যে গাজা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে মরিয়া কয়েক লাখ মানুষ৷ কিন্তু যে কোনো মুহূর্তে মৃত্যুর ঝুঁকি সত্ত্বেও মিশর সীমান্ত বন্ধ থাকায় তারা এখন মহাবিপদে৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Ibraheem Abu Mustafa/REUTERS
তিন লাখ মানুষ ঘরছাড়া
২৩ লাখ মানুষের ভূখণ্ড গাজা এখন আতঙ্কের নগরী৷ জাতিসংঘের মানবিক বিষয়াদি সম্পর্কিত সংস্থা অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ বা ওচা) জানিয়েছে, গাজায় মৃত্যুভয়ে ঘরছাড়া মানুষের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে৷ সংঘাতের ষষ্ঠ দিন পর্যন্ত গাজা-র অন্তত তিন লাখ মানুষ প্রাণ বাঁচাতে ঘর ছেড়েছে বলে জানিয়েছে তারা৷
ছবি: Majdi Fathi/NurPhoto/picture alliance
স্কুলঘরে আশ্রয়
অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ বা ওচা) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ঘর ছাড়তে বাধ্য হওয়া তিন লাখ গাজাবাসীর দুই তৃতীয়াংশই এখন জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন৷ ওপরের ছবিতে এক স্কুলে আশ্রয় নেয়া একটি পরিবার৷
ছবি: Rola Farhat/DW
ধ্বংসস্তূপ ডিঙিয়ে শান্তির সন্ধানে
ইসরায়েল থেকে উড়ে আসা মিসাইলের আঘাতে ধসে পড়েছে ঘর-বাড়ি৷ চারপাশে শুধুই ধ্বংসের চিহ্ন৷ তার মাঝেই কয়েকজনের বাঁচার পথ খোঁজার চেষ্টা৷
ছবি: Abed Rahim Khatib/dpa/picture alliance
রাফা সীমান্তে বাধা
জাতিসংঘ জানাচ্ছে, সোমবার গাজা থেকে রাফা সীমান্ত হয়ে মিশরে প্রবেশ করে অন্তত ৮০০ মানুষ৷ কিন্তু সেদিন সীমান্তে কড়াকড়ি শুরু হওয়ায় অন্তত ৫০০ জন মিশরে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়৷
ছবি: Abed Rahim Khatib/dpa/picture alliance
সীমান্তে কড়াকড়ি
গাজার এক পাশে মিশর অন্য তিন পাশে সাগর অথবা ইসরায়েল৷ মিশর সরকার চায় না সেই দেশে গাজাবাসীর ঢল নামুক৷ তাই প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল-সিসি আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত শান্তি ফেরানোর আহ্বান জানিয়ে সীমান্তে নজরদারি জোরদার করেছেন৷
ছবি: Abed Rahim Khatib/dpa/picture alliance
তবুও মরিয়া আতঙ্কিত মানুষ...
রাফা সীমান্ত বন্ধ করেও গাজার অসহায় মানুষদের মিশরে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না৷ এমনকি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে অক্ষম মানুষরাও প্রাণ বাঁচাতে পৌঁছে যাচ্ছেন রাফা সীমান্তে৷ ওপরের ছবিতে হুইল চেয়ারে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়া এক গাজাবাসী৷
ছবি: Ibraheem Abu Mustafa/REUTERS
6 ছবি1 | 6
এদিন ইইউ-র প্রেসিডেন্টও হামাসের এই কাজকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে একইসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, হামাস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।
এদিকে গাজার একাংশের মানুষ যুদ্ধবিরতির আবেদন জানিয়েছেন। হামাসের একাংশ তা সমর্থন করেছে। তারা জানিয়েছে, ইসরায়েল সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণ বন্ধ করলে তারা আরো পণবন্দিকে মুক্ত করবেন। এর আগে অবশ্য তারা জানিয়েছিল, ইসরায়েলের আক্রমণে বেশ কিছু পণবন্দির মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলের এক মা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, তার দুই ছেলে এখনো নিখোঁজ। তারাও ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেছিল। ওই মা ধরেই নিয়েছেন, তার ছেলেরা আর নেই। ঘটনার পর অনুষ্ঠানস্থলে গেছিলেন তিনি। সেখানে ছেলেদের পাননি তিনি। তাদের দেহও মেলেনি। ফলে ওই মা ধরেই নিয়েছেন যে, তার দুই ছেলেকেও পণবন্দি করা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে একটি ফোন পাননি তিনি।