গাজা পুনর্গঠনে কায়রোয় অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে যোগ দেবেন হিলারি
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৯সব পক্ষের সহায়তা পাওয়ার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বারাক ওবামা প্রশাসনের বোঝা উচিত যে, মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে ফিলিস্তিনী ভূখন্ডে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি স্থাপন বন্ধ করতে হবে৷ বিস্তারিত জানাচ্ছেন হোসাইন আব্দুল হাই৷
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটনের সাথে বৈঠকের পর মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল ঘায়েত বলেন, ২২ দিনের হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত গাজা পুনর্গঠনে মিশরে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ক্লিনটন যোগ দেবেন৷ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা ক্লিনটনের কায়রো সম্মেলনে যোগ দেয়ার সম্ভাবনার কথা স্বীকার করেন৷ গত মাসে মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারক ইউরোপীয় ও আরব নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করার পর ঘোষণা করেন যে, যুদ্ধবিদ্ধস্ত গাজা পুনর্গঠন কাজের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহে মিশর একটি সম্মেলন আয়োজন করবে৷ মিশর হচ্ছে প্রথম কোন আরব রাষ্ট্র যারা ইসরায়েলের সাথে শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল৷ আবার এখন তারাই হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে অস্ত্র-বিরতিকে স্থায়ী রূপ দেয়ার জন্য অগ্রনী ভূমিকা পালন করছে৷
বৃহস্পতিবার বৈঠকের পর আবুল ঘায়েত সাংবাদিকদের বলেন, ২৭ ডিসেম্বর গাজায় ইসরায়েলের হামলার পর শান্তি প্রক্রিয়ার ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের মনোভাব আমাকে মুগ্ধ করেছে৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বেরিয়ে আবুল ঘায়েত বলেন, তাঁরা বেশ ভালোভাবে পরিস্থিতি বুঝেছেন৷ তাঁরা এখন জানেন যে, দীর্ঘস্থায়ী শান্তি আনতে হলে উভয় পক্ষকেই চাপ দিতে হবে৷ তিনি বলেন, সবার আগে নিশ্চিত করতে হবে যাতে এই অস্ত্র-বিরতি স্থায়ী হয়৷ এছাড়া ফিলিস্তিনীদের নিজেদের মধ্যে ঐক্যমতে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে হবে৷
বুশ প্রশাসন ২০০৭ সালের নভেম্বরে ফিলিস্তিনী ও ইসরায়েলীদের মধ্যে শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু করার উদ্যোগ নেয়৷ পশ্চিম তীরে প্রেসিডেন্ট আব্বাসের সঙ্গেই চলছিল সেই আলোচনা৷ কিন্তু গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রেক্ষিতে এ শান্তি আলোচনা থমকে দাঁড়ায়৷ অনেক আরব রাষ্ট্রই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরায়েলের পক্ষ নেয়ার ব্যাপারে অভিযোগ করে আসছে তবে আবুল ঘায়েত আশা প্রকাশ করেন যে, বর্তমান ওবামা প্রশাসন দু'পক্ষকেই সমান দৃষ্টিতে দেখবে এবং বিশেষ করে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি স্থাপন বন্ধে পদক্ষেপ নেবে৷
মিশর হামাস এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফাতাহ আন্দোলনের মধ্যে সমঝোতার ডাক দিয়েছে এবং ঐক্যমতের এমন একটি সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছে যা আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে৷ কিন্তু ২০০৭ সালে হামাস ফাতাহর কাছ থেকে গাজার কর্তৃত্ব কেড়ে নিলে এ দু‘টি গোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ আরো গভীর হয়েছে৷
সম্প্রতি ইসরায়েলি হামলায় গাজায় প্রায় ১৩০০ ফিলিস্তিনী নিহত এবং কোটি কোটি ডলার মূল্যের অবকাঠামো ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে৷ এ যুদ্ধের পরে সৌদি আরব গাজার পুনর্গঠনে এক বিলিয়ন ডলার অনুদানের ঘোষণা দেয়৷ তবে আমেরিকা এখনও গাজার জন্য কোন অনুদানের কথা বলেনি৷
২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের অব্যবহিত পরেই প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা মধ্যপ্রাচ্য সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে জর্জ মিচেলকে বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেন৷ এমনকি কাল বিলম্ব না করে তাঁকে হামাস-ইসরায়েল অস্ত্র-বিরতি দীর্ঘস্থায়ী করা এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে এক সপ্তাহের সফরে মধ্যপ্রাচ্য পাঠানো হয়৷ তবে ইসরায়েলে নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠনে বিলম্ব হওয়ায় মিচেলের শান্তি প্রচেষ্টা কিছুটা পিছিয়ে পড়ার আশংকা করা হচ্ছে৷