ইসরায়েলের সেনা জানিয়েছে, গাজা ভূখণ্ডের সর্বত্র তারা হামাসের বিরুদ্ধে অপারেশন শুরু করেছে।
বিজ্ঞাপন
এক সপ্তাহ যুদ্ধবিরতির পর শুক্রবার থেকে ইসরায়েলের সেনা আবার অপারেশন শুরু করে দেয়। .তার আগে ইসরায়েলের সেনা মূলত গাজার উত্তরভাগেই অপারেশন চালিয়েছিল। কিন্তু এখন দক্ষিণ গাজাতেও বিমান হামলা করছে ইসরায়েল।
গাজার বেসামরিক মানুষের একটা বড় অংশ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দক্ষিণ গাজায় চলে গেছিলেন।
কিন্তু রোববার রাতে ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র হাগারি জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সেনাও দক্ষিণ গাজায় গেছে। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের সেনা হামাসের বিরুদ্ধে গ্রাউন্ড অপারেশনের পরিধি বাড়িয়েছে। তারা এখন গাজা ভূখণ্ডের সর্বত্র ছড়িয়ে গেছে। তারা হামাসের মুখোমুখি হচ্ছে ও তাদের মারছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বার্তাসংস্থা ডিপিএ-কে জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সেনা দক্ষিণ গাজায় খান ইউনিস শহরের পূর্বদিকে গেছে।
হামাসের সুড়ঙ্গে ইসরায়েলের আক্রমণ
ইসরায়েলের দাবি, উত্তর গাজার ভিতরে ঢুকে হামাস সুড়ঙ্গে আক্রমণ চালাচ্ছে তারা। হাজার হাজার ফিলিস্তিনি দক্ষিণে পালাচ্ছেন।
ছবি: Ammar Awad/REUTERS
পালাচ্ছে মানুষ
ইসরায়েলের সেনা দাবি করেছে, উত্তর গাজা থেকে অন্তত ৫০হাজার বেসামরিক মানুষ দক্ষিণ গাজার দিকে পালিয়েছে। ইসরায়েলের সেনা তাদের পালাতে সাহায্য করেছে। ফোন করে, লিফলেট দিয়ে তাদের শহর ছাড়তে বলা হয়েছে।
ছবি: Belal Khaled/AA/picture alliance
সুড়ঙ্গের সন্ধানে সেনা
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, উত্তর গাজায় শহরের ভিতরে ঢুকে পড়েছে ইসরায়েলের সেনা। হামাসের সুড়ঙ্গ খুঁজে বার করে আক্রমণ চালাচ্ছে তারা। তারা এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে, হামাস যা কোনোদিন কল্পনাও করতে পারেনি।
ছবি: Israeli Defense Forces/Handout via REUTERS
রকেট প্রস্তুকারকের মৃত্যু
ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসের এক গুরুত্বপূর্ণ রকেট প্রস্তুতকারক ব্যক্তি ইসরায়েলের সেনার হাতে নিহত হয়েছেন।
ছবি: Abed Khaled/AP Photo/picture alliance
উত্তর গাজায় ক্ষমতা হারিয়েছে হামাস
ইসরায়েলের দাবি, উত্তর গাজায় হামাস তার ক্ষমতা হারিয়েছে। এখনো দক্ষিণ গাজায় তারা লড়াই চালাচ্ছে। এবং সে কারণেই হাজার হাজার মানুষ উত্তর থেকে দক্ষিণের দিকে চলে যাচ্ছে। উত্তরের দখল কার্যত এখন ইসরায়েলের সেনার হাতে।
ছবি: Israel Defense Forces/Handout via REUTERS
১৩০টি সুড়ঙ্গ ধ্বংস
ইসরায়েলের সেনার দাবি, তারা উত্তর গাজায় হামাসের ১৩০টি সুড়ঙ্গ ধ্বংস করেছে। সুড়ঙ্গ অর্থাৎ, মাটির নিচে বাংকার। ইসরায়েলের দাবি, বেসামরিক বাড়ি, হাসপাতালের নিচে বাংকার বানিয়ে হামাস নিজেদের 'সন্ত্রাসী' কাজকর্ম চালাতো। সে কারণেই হামাসকে আক্রমণের সময় বহু বেসামরিক ভবনে আক্রমণ চালাতে হচ্ছে।
ছবি: Bashar Taleb/APA Images via ZUMA Press/picture alliance
বাংকারের কাঠামো
ইসরায়েলের দাবি, বাংকার গুলি ২ মিটার উঁচু এবং এক মিটার চওড়া। তার ভিতর জলের লাইন, বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা সবই করা আছে। ফলে চাইলে মানুষ সেখানে টানা কিছুদিন থাকতে পারে।
ছবি: Bashar Taleb/APA Images via ZUMA Press/picture alliance
জি-৭ এর আবেদন
জি-৭ দেশগুলি ইসরায়েলের কাছে আবেদন জানিয়েছে সংঘাত-বিরতির জন্য। অ্যামেরিকার মতো তারাও বলেছে, যুদ্ধবিরতি না হোক, কৌশলগত বিরতি দিক ইসরায়েল। যাতে ওই সময়ে বেসামরিক মানুষ অন্তত ঘর থেকে পালাতে পারেন। ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা কৌশলগত বিরতি দিচ্ছে।
ছবি: Jack Guez/AFP
ইটালির হাসপাতাল জাহাজ
ইটালি গাজার কাছে সমুদ্রে একটি হাসপাতালের পরিকাঠামো যুক্ত জাহাজ পাঠিয়েছে। আহত বেসামিরক ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য ওই জাহাজ পাঠানো হয়েছে।
ছবি: AP
8 ছবি1 | 8
১০ হাজার বার বিমান হামলা
ইসরায়েলের সেনা জানিয়েছে, গত দুই মাসে গাজায় প্রায় ১০ হাজার বার বিমান হামলা করা হয়েছে।
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স(আইডিএফ) জানিয়েছে, হামাসের কম্যান্ড সেন্টার, টানেল ও অস্ত্রাগারে মূলত আঘাত করা হয়েছে। তবে এই দাবি এখনই স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
এই ঘোষণা এসেছে, আন্তর্জাতিক স্তরে ইসরায়েলের সমালোচনা হওয়ার পর। ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর হামলায় প্রচুর বেসামরিক মানুষ মারা গেছেন বলে অভিযোগ।
রোববার হামাসের স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, গাজায় লড়াই শুরুর পর থেকে ১৫ হাজার ৫২৩ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ৪১ হাজার ৩১৬ জন।
জাতিসংঘের হিসাব হলো, গাজার ২২ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
ইসরায়েলি আর ফিলিস্তিনিদের এক করছে সংগীত
জার্মানির রাজধানী বার্লিনের এক সংগীত অ্যাকাডেমিতে ২৩ অক্টোবর একটি কনসার্ট হয়েছে৷ সেখানে একসঙ্গে বাজিয়েছেন ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের শিক্ষার্থীরা৷
ছবি: Stefan Maria Rother
শুরুর কথা
আর্জেন্টিনায় জন্মগ্রহণ করা ও বর্তমানে বার্লিনে বসবাসকারী কন্ডাক্টর ও পিয়ানোবাদক ডানিয়েল বারেনবোইম (ডানে) তার বন্ধু প্রয়াত ফিলিস্তিনি-অ্যামেরিকান লিটারেরি থিওরিস্ট এডওয়ার্ড সাঈদের (বামে) সঙ্গে মিলে স্পেনের সেভিয়ায় ১৯৯৯ সালে ‘ওয়েস্ট-ইস্টার্ন ডিভান অর্কেস্ট্রা’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন৷ তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে বার্লিনে দ্য বারেনবোইম-সাঈদ অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়৷
ছবি: Fundación Barenboim-Said
ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর প্রতিক্রিয়া
অ্যাকাডেমির ডিন মিশায়েল বারেনবোইম (ডানিয়েল বারেনবোইমের ছেলে) জানান, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে তার অ্যাকাডেমির ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীরা ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা করছে৷ কিন্তু ইসরায়েলি শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, হামাসের সন্ত্রাসী হামলার পর সব পরিবর্তন হয়ে গেছে৷
ছবি: AHMAD GHARABLI/AFP
অ্যাকাডেমির উদ্যোগ
ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীরা যেন হামলা নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলে সেই বিষয়ে অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে৷ তাদের মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা দিতে হিব্রু ও আরবি ভাষায় পারদর্শী থেরাপিস্টেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে৷
ছবি: Stefan Maria Rother
নতুন সেমিস্টারের প্রথম কনসার্ট
হামাসের হামলার কয়েকদিন পর অ্যাকাডেমিতে নতুন সেমিস্টারের ক্লাস শুরু হয়৷ আর প্রথম কনসার্টটি হয় ২৩ অক্টোবর৷ তার আগে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে কনসার্টে বাজানো আমাদের জন্য খুব কঠিন৷ কিন্তু এই অন্ধকারতম সময়েও আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠাতা ডানিয়েল বারেনবোইম ও এডওয়ার্ড সাঈদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবো৷’’
ছবি: Stefan Maria Rother
শান্তির বার্তা
কনসার্টের আগে এক বিবৃতিতে ডানিয়েল বারেনবোইম লিখেছেন, ‘‘আমাদের শান্তির বার্তা অবশ্যই আগের চেয়ে আরও জোরে উচ্চারণ করতে হবে৷’’ তিনি বলেন, ‘‘উভয়পক্ষকেই তাদের শত্রুদের মানুষ হিসেবে চিনতে হবে এবং তাদের দৃষ্টিভঙ্গি, তাদের ব্যথা ও কষ্টের প্রতি সহানুভূতি জানানোর চেষ্টা করতে হবে৷ ইসরায়েলিদেরও এটা মেনে নিতে হবে যে, ফিলিস্তিনের দখলদারিত্ব এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়৷’’
ছবি: picture-alliance/dpa/N. Shohat
5 ছবি1 | 5
আইসিসি চায়
ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট(আইসিসি) হামাস ও ইসরায়েলের সেনা কোনো যুদ্ধাপরাধ করেছে কি না, তা তদন্ত করে দেখতে চায়।
সম্প্রতি আইসিসি-র প্রসিকিউটার করিম খান ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনে গেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, ''গত ৭ অক্টোবর যেভাবে নিরপরাধ বেসামরিক মানুষের উপর আক্রমণ হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী। আইসিসি এই ধরনের অপরাধের মোকাবিলা করার জন্যই তৈরি হয়েছিল। আমরা এটা তদন্ত করে দেখতে চাই।''
তিনি জানিয়েছেন, গাজার মতো জনবহুল জায়গায় যেভাবে লড়াই হচ্ছে, সেটাও তারা তদন্ত করে দেখতে চান।
ইউক্রেন যুদ্ধের পর আইসিসি-র বিচারপতিরা তো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন।