গাজা-র মিশর সীমান্ত পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করতে চায় ইসরায়েল
১ জানুয়ারি ২০২৪
বছরের শেষ দিনে একথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।
গাজায় ধ্বসস্তূপে দাঁড়িয়ে ইসরায়েলের সেনাছবি: Israel Defense Forces/REUTERS
বিজ্ঞাপন
এলিট সেনার সাজে লড়াইয়ের ফ্রন্ট লাইনে পৌঁছে গেলেন ইসরায়েলের এক বেসামরিক মানুষ। শুধু তা-ই নয়, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়িয়ে তিনি ছবিও তুলেছেন। প্রধানমন্ত্রী তো বটেই, সেনা বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও বিষয়টি প্রাথমিকভাবে ধরতেই পারেননি।
ঘটনার সূত্র ধরে ইসরায়েলের আদালত রীতিমতো মামলা সাজিয়ে ফেলেছে। আদালত জানিয়েছে, বছর ৩৫-এর ওই ব্যক্তি এলিট ফোর্সের পোশাক পরে সমস্ত অস্ত্র জোগার করে লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়েছিল। নিজের পরিচয় দিয়েছিল ইসরায়েলের গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্য। বস্তুত, ইসরায়েলের সেনাও প্রাথমিকভাবে তার পরিচয় বুঝতে পারেনি।
এখানেই শেষ নয়, লড়াইয়ের ময়দানে পরিদর্শনে গেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। ওই ব্যক্তি সেখানেও ওই ব্যক্তি ঢুকে পড়েন। হেলিপ্যাডে প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলে সে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে দ্রুত ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নেয়া হয় এবং তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়।
হামাসের সুড়ঙ্গে ইসরায়েলের আক্রমণ
ইসরায়েলের দাবি, উত্তর গাজার ভিতরে ঢুকে হামাস সুড়ঙ্গে আক্রমণ চালাচ্ছে তারা। হাজার হাজার ফিলিস্তিনি দক্ষিণে পালাচ্ছেন।
ছবি: Ammar Awad/REUTERS
পালাচ্ছে মানুষ
ইসরায়েলের সেনা দাবি করেছে, উত্তর গাজা থেকে অন্তত ৫০হাজার বেসামরিক মানুষ দক্ষিণ গাজার দিকে পালিয়েছে। ইসরায়েলের সেনা তাদের পালাতে সাহায্য করেছে। ফোন করে, লিফলেট দিয়ে তাদের শহর ছাড়তে বলা হয়েছে।
ছবি: Belal Khaled/AA/picture alliance
সুড়ঙ্গের সন্ধানে সেনা
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, উত্তর গাজায় শহরের ভিতরে ঢুকে পড়েছে ইসরায়েলের সেনা। হামাসের সুড়ঙ্গ খুঁজে বার করে আক্রমণ চালাচ্ছে তারা। তারা এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে, হামাস যা কোনোদিন কল্পনাও করতে পারেনি।
ছবি: Israeli Defense Forces/Handout via REUTERS
রকেট প্রস্তুকারকের মৃত্যু
ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসের এক গুরুত্বপূর্ণ রকেট প্রস্তুতকারক ব্যক্তি ইসরায়েলের সেনার হাতে নিহত হয়েছেন।
ছবি: Abed Khaled/AP Photo/picture alliance
উত্তর গাজায় ক্ষমতা হারিয়েছে হামাস
ইসরায়েলের দাবি, উত্তর গাজায় হামাস তার ক্ষমতা হারিয়েছে। এখনো দক্ষিণ গাজায় তারা লড়াই চালাচ্ছে। এবং সে কারণেই হাজার হাজার মানুষ উত্তর থেকে দক্ষিণের দিকে চলে যাচ্ছে। উত্তরের দখল কার্যত এখন ইসরায়েলের সেনার হাতে।
ছবি: Israel Defense Forces/Handout via REUTERS
১৩০টি সুড়ঙ্গ ধ্বংস
ইসরায়েলের সেনার দাবি, তারা উত্তর গাজায় হামাসের ১৩০টি সুড়ঙ্গ ধ্বংস করেছে। সুড়ঙ্গ অর্থাৎ, মাটির নিচে বাংকার। ইসরায়েলের দাবি, বেসামরিক বাড়ি, হাসপাতালের নিচে বাংকার বানিয়ে হামাস নিজেদের 'সন্ত্রাসী' কাজকর্ম চালাতো। সে কারণেই হামাসকে আক্রমণের সময় বহু বেসামরিক ভবনে আক্রমণ চালাতে হচ্ছে।
ছবি: Bashar Taleb/APA Images via ZUMA Press/picture alliance
বাংকারের কাঠামো
ইসরায়েলের দাবি, বাংকার গুলি ২ মিটার উঁচু এবং এক মিটার চওড়া। তার ভিতর জলের লাইন, বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা সবই করা আছে। ফলে চাইলে মানুষ সেখানে টানা কিছুদিন থাকতে পারে।
ছবি: Bashar Taleb/APA Images via ZUMA Press/picture alliance
জি-৭ এর আবেদন
জি-৭ দেশগুলি ইসরায়েলের কাছে আবেদন জানিয়েছে সংঘাত-বিরতির জন্য। অ্যামেরিকার মতো তারাও বলেছে, যুদ্ধবিরতি না হোক, কৌশলগত বিরতি দিক ইসরায়েল। যাতে ওই সময়ে বেসামরিক মানুষ অন্তত ঘর থেকে পালাতে পারেন। ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা কৌশলগত বিরতি দিচ্ছে।
ছবি: Jack Guez/AFP
ইটালির হাসপাতাল জাহাজ
ইটালি গাজার কাছে সমুদ্রে একটি হাসপাতালের পরিকাঠামো যুক্ত জাহাজ পাঠিয়েছে। আহত বেসামিরক ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য ওই জাহাজ পাঠানো হয়েছে।
ছবি: AP
8 ছবি1 | 8
ইসরায়েলের দক্ষিণপন্থি দলের বক্তব্য
ইসরায়েলের দক্ষিণপন্থি অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, লড়াই শেষ হলে গাজা স্ট্রিপে গিয়ে বসবাস শুরু করবেন ইসরায়েল নাগরিকেরা। অর্থাৎ, গাজা স্ট্রিপ ইসরায়েল দখল করে নেবে বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, তিনি একইসঙ্গে বলেছেন, গাজা স্ট্রিপের ফিলিস্তিনিদের বলা হবে গাজার বাইরে গিয়ে বসবাস করতে। তার বক্তব্য, যদি একটি কৌশল স্থির করা যায়, তাহলে গাজা স্ট্রিপের সমস্ত অধিবাসীকে অন্য দেশে পাঠানো সম্ভব এবং সেখানে যাতে তারা ঠিকমতো থাকতে পারেন, তার ব্যবস্থা করে দেয়া করে দেওয়া সম্ভব। কিন্তু এর জন্য একটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
১৯৬৭ সাল থেকে গাজায় ইসরায়েলের প্রবেশ ঘটে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত সেখানে তাদের অবস্থান ছিল। ২০০৬ সালে হামাস গাজায় নির্বাচনে জয়যুক্ত হয়। তারপর সেখান থেকে ইসরায়েলকে সরে যেতে হয়।
এদিকে লড়াইয়ের মধ্যেই ইসরায়েল নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ করেছে। নতুন মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। তিনি কোহেনের চেয়ারে বসেছেন। কোহেন পেয়েছেন এনার্জি মন্ত্রীর দায়িত্ব। তবে সুরক্ষা বিষয়ক কমিটিতে এখনো কোহেন আছেন। বস্তুত, আগেই নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছিলেন, ক্যাবিনেটে সকলকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হবে। সেই মতোই নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছে।