1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গাজা সংকট

নিলস নাউমান / এআই২৪ নভেম্বর ২০১২

ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যকার যুদ্ধ শেষ হয়েছে৷ দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন মিশরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মেদ মুরসি৷ তবে এক বিতর্কিত ডিক্রি জারি করে এখন ঘরেই সমালোচিত তিনি৷

ছবি: dapd

বিদেশ নীতি বিষয়ক প্রথম পরীক্ষায় উতরে গেছেন মিশরের প্রেসিডেন্ট৷ গাজা সংকটের সময় ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে একাগ্রতা এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন তিনি৷ এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিও একটি বার্তা দিয়েছে মিশর৷ তা হচ্ছে, মুবারক পরবর্তী জমানায় কায়রো কোন চরমপন্থা অবলম্বন করছে না৷

গাজা সংকটের আপাত নিরসনের পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন মিশরের প্রেসিডেন্টের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন, মুসলিম ব্রাদারহুড দলে যার সমগোত্রীয়রা ঐতিহ্যগতভাবেই ইসলামি গোষ্ঠী হামাসের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত৷ এমনকি ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আভিগডোর লিবারমান, যিনি একজন কট্টরপন্থী ব্যক্তি এবং ঠিক কায়রোর বন্ধু হিসেবে বিবেচিত নন, তিনিও যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখায় মুরসিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন৷

মূলত ঘরে-বাইরে – দু'দিকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই মুরসি গাজা সংকট নিরসনে কাজ করেছেন৷ মিশরের সবচেয়ে বড় দাতা দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছিল, মুরসি হামাসের নেতৃস্থানীয়দের উপর নিজের প্রভাব খাটাবেন৷ অন্যদিকে, প্রেসিডেন্টের অনুসারীরা তাঁকে গাজায় ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে চাপ প্রয়োগ করেছে৷

সংকট নিরসনে ভূমিকার জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিশরের প্রেসিডেন্টের ভূয়সী প্রশংসা করেছেনছবি: Reuters

এখানে বলা প্রয়োজন, ইসরায়েল-বান্ধব বিদেশ নীতির কারণে একসময় ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের তীব্র সমালোচনা করেছে মুসলিম ব্রাদারহুড৷ ২০০৮ সালে গাজা যুদ্ধের সময় ইসরায়েলের পদাতিক বাহিনী গাজায় অভিযান পরিচালনা করে৷ সে সময় অনেকের নজর ছিল মুবারকের দিকে৷

সর্বশেষ গাজা যুদ্ধের শুরুতেই মুরসি ইসরায়েল থেকে মিশরের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করেন৷ গাজায় বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েল বিমান হামলা শুরুর পরপরই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তিনি৷ একইসঙ্গে মুরসি মিশরের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে বলেন, ‘ইসরায়েলের বুঝতে হবে, এ ধরনের আগ্রাসন মেনে নেওয়া হবে না৷'

এরপর প্রধানমন্ত্রী হিশাম কান্দিলকে গাজা সফরে পাঠান মুরসি৷ উদ্দেশ্যে সেখানকার মানুষের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করা৷ একই সঙ্গে ইসরায়েলের সঙ্গে সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য হামাসের উপর মিশরের আধিপত্য ব্যবহার করেছেন তিনি৷

মুরসি যখন গত জুনে ক্ষমতা গ্রহণ করেন, তখন উদ্বিগ্ন ছিল ওয়াশিংটন এবং তেল আভিভ৷ তাদের আশঙ্কা ছিল, ইসলামি এই নেতা ইসরায়েল ইস্যুতে মুবারকের তুলনায় চরমপন্থী হবেন৷ কেননা, নীতিগতভাবেই মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড এবং হাসামের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে৷

কিন্তু মিশরের নতুন সরকার ওয়াশিংটন এবং তেল আভিভের এই শঙ্কাকে বাস্তবে রূপ দিতে দেয়নি৷ গিগা-ইন্সটিটিউটের মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ হেনার ফুর্টিশ এই বিষয়ে বলেন, ‘‘ (মিশর) সরকার দেখাতে চেয়েছে, তারা স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং নিজেদেরকে সরাসরি হামাসের ঘনিষ্ঠ সশস্ত্র সহচর হিসেবে মনে করে না৷''

মিশরের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হোদা সালেহের মতে, মুরসি হচ্ছেন একজন বাস্তববাদী মানুষ যিনি সবকিছু ছাপিয়ে নিজের ক্ষমতা ধরে রাখতে আগ্রহী৷ সালেহ মনে করেন, মুবারকের শাসনামলের অবসান হলেও ইসরায়েল ইস্যুতে মিশরের নীতিতে কোন সত্যিকারের পরিবর্তন আসেনি৷ তিনি বলেন, ‘‘বিরোধী দলে থাকাকালে ইসরায়েল এবং মিশরের বিদেশ নীতির সমালোচনা করা মুরসির পক্ষে সহজ ছিল৷ কিন্তু এখন তিনি প্রেসিডেন্ট এবং জানেন যে ইসরায়েলকে শত্রু হিসেবে উপস্থাপন করাটা তাঁর সামর্থ্যে কুলাবে না৷''

প্রসঙ্গত, স্বদেশে মুরসি এখন নিজের ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে মনোযোগী হয়েছেন৷ বৃহস্পতিবার জারিকৃত এক ডিক্রিতে সেদেশের বিচারব্যবস্থার ক্ষমতা ব্যাপক হারে খর্ব করা হয়েছে৷ এই ডিক্রি অনুসারে, নতুন পার্লামেন্ট নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত মুরসির নেওয়া সিদ্ধান্তে কোনো আইনগত আপত্তি তোলা যাবে না বা আপত্তিমুক্ত থাকবে৷ ‘বিপ্লব রক্ষার জন্য' এই ডিক্রি জারি করা হয়েছে বলা হলেও সেদেশের বিরোধী দল এবং বিচারকরা এটির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ