1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গাজীপুরে মসজিদ এখন খুলবে না: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৯ এপ্রিল ২০২০

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় শুক্রবার থেকে মসজিদগুলো স্বাভাবিকভাবে খুলে দেয়ার ঘোষণা কার্যকর হবে না বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এম আব্দুল্লাহ৷

ছবি: Rayhanul Isalm Akhanda

তিনি বলেছেন, ‘‘গাজীপুরের মেয়র সরকারের আদেশ অমান্য করেছেন৷ তিনি আমাদের ফোন ধরছেন না৷ আমরা প্রশাসনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিচ্ছি৷’’

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘ওনার ঘোষণায় কিছু আসে যায় না৷ এই ঘোষণা দেয়ার কোনো এখতিয়ার মেয়রের নেই৷’’

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম মঙ্গলবার এক ভিডিও বার্তায় সামাজিক দূরত্ব মেনে নগরের মসজিদগুলোতে শুক্রবার থেকে নামাজ পড়ার ঘোষণা দেন৷

বুধবার ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য জানিয়ে তার বর্তমান সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাইডলাইন ফলো করে আমরা মসজিদে নামাজ পড়ার সুযোগ দেবো৷’’ এরপর তিনি আর কোনো কথা না বলে ফোন লাইন কেটে দেন৷ তারপর বারবার চেষ্টা করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি৷

করোনা প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী সাধারণ নামাজে ৫ জন, জুমার নামাজে ১০ জন এবং তারাবির নামাজে ১২ জনের বেশি অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়৷ ধর্মমন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত দেশের সব মসজিদ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে৷

তাঁর ঘোষণায় সরকার ক্ষুব্ধ: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী

This browser does not support the audio element.

বুধবার টেলিফোনে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘গাজীপুরের মেয়র যে ঘোষণা দিয়েছেন তা সরকারের নির্দেশনার বিরুদ্ধে যায়৷ তার সঙ্গে ওই ঘোষণার পর আমরা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি৷ তিনি আমাদের ফোন ধরছেন না৷ আমরা গাজীপুরের প্রশাসন এবং পুলিশকে বলে দিয়েছি৷ এখন তারাই ব্যবস্থা নেবেন৷ কোনোভাবে গাজীপুরের মেয়রের মসজিদ খুলে দেয়ার ঘোষণা কার্যকর হবে না৷ তার ঘোষণায় সরকার ক্ষুব্ধ৷ সরকারের নির্দেশের বাইরে কিছু হওয়ার সুযোগ নেই৷ মেয়র নিজেই আরেকটি ঘোষণা দিয়ে মসজিদ খুলে দেয়ার ঘোষণা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হবেন৷’’

এদিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদও গাজীপুর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘সরকারের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে মসজিদ স্বাভাবিকভাবে নামাজ পড়ার জন্য খুলে দেয়ার সুযোগ নেই৷ মেয়র সরকারের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়েছেন৷ সরকারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকবে৷’’

এর আগে মঙ্গলবার রাতে ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে গাজীপুরের মেয়র বলেন, ‘‘পোশাক কারখানা যেহেতু খুলে দেয়া হয়েছে তাই আমি মসজিদও খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছি৷ আমার এলাকায় কোনো করোনা আক্রান্ত নেই৷ তাহলে মসসিদে নামাজ পড়া বন্ধ থাকবে কেন? রমজানের সময় সবার মসজিদে নামাজ পড়তে দেয়ার সুযোগ থাকা উচিত৷’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ পড়া হবে৷ মসজিদের বাইরে কেউ নামাজ পড়তে পারবেন না৷ এক এলাকার লোক অন্য এলাকার মসজিদে নামাজ পড়তে পারবেন না৷’’

রমজানের সময় সবাইকে মসজিদে নামাজ পড়তে দেয়ার সুযোগ থাকা উচিত: মেয়র

This browser does not support the audio element.

তবে বুধবার গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম সরবারের নির্দেশনা পাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘শুক্রবার যাতে স্বাভাবিক নামাজের জন্য মসজিদ খোলা না হয় সে ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নেবো৷ সরকারের যে নির্দেশনা তা বহাল রাখতে আমরা সবকিছু করবো৷’’

এ নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো বক্তব্য জানা যায়নি৷

তবে গাজীপুরের মেয়রের মসজিদ খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তকে হঠকারী এবং অবিবেচনাপ্রসূত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)-র মহাসচিব অধ্যাপপক ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী৷ তিনি একইসঙ্গে পোশাক কারখানা খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তেরও বিরোধিতা করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘গাজীপুরের মেয়র না বুঝে অথবা রাজনৈকিভাবে ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগোনোর জন্য মসজিদ খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন৷ এটা হলে ভয়াবহ বিপর্যয় হবে৷ তিনি জানেন না যে, তার এলাকায় করোনা আক্রান্ত কেউ আছেন কিনা৷ কারণ, উপসর্গ ছাড়াই অনেক করোনায় আক্রান্ত আছেন৷ তাদের একজনও যদি মসজিদে যান তাহলে সবার মধ্যে করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে৷ আর সাধারণ মাস্ক পরে বা কথিত সামাজিক দূরত্ব মেনে সব সময় করোনা প্রতিরোধ করা যায় না৷ যারা মসজিদে নামাজ পড়তে যাবেন, তারা এটা কিভাবে মানবেন! তখন তো প্রতিযোগিতা তৈরি হবে৷ আর এক এলাকার মসজিদ খুলে দিলে সারাদেশে এর প্রভাব পড়বে৷ সবাই ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লগিয়ে মসজিদ খুলে দিতে চাইবে৷’’

পোশাক কারখানা খুলে দেয়াকেও তিনি অবিবেচনাপ্রসূত মনে করেন৷ তার কথা. ‘‘যদি খুলতেই হতো, তাহলে পোশাক শ্রকিদের সবাইকে প্রথমে ১৪ দিনের কোয়ারান্টিনে রাখতে হতো৷ তারপর যারা আক্রান্ত নন তাদের কারখানার ভিতরে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢুকতে দিতে হতো৷ কিন্তু তা করা হয়নি৷’’

তিনি বলেন, ‘‘এরইমধ্যে আমরা কয়েকজন পোশাক শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত বলে খবর পেয়েছি৷ একজন তো টেস্ট দিয়ে কারখানায় চলে গেছেন৷ এখন জানা গেছে, তার করোনা পজিটিভ৷ এই পরিস্থিতিতে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে এখন করেনা ছড়ানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে৷’’

প্রসঙ্গত, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে মোট আটটি থানা এলাকায় সরকারি হিসেবে ৬৭৫টি মসজিদ আছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ