জার্মানি একমাত্র দেশ, যেখানে হাইওয়ের অনেক অংশে গতির ঊর্দ্ধসীমা নেই৷ কিন্তু অন্যান্য রাস্তায় সেই সীমা লঙ্ঘন করলে চালকদের জরিমানা হতে পারে৷ অত্যাধুনিক এক সিস্টেমের মাধ্যমে দুর্ঘটনা কমানোর কথা ভাবা হচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
চোখে পড়তে পড়তে বড় দেরি হয়ে যায়৷ প্রথমে আলোর ঝলক, তারপর জরিমানার ধাক্কা৷ অনেক গাড়ি চালকের জন্য রাডার ক্যামেরা সত্যি ক্রোধের কারণ বটে৷ তারা বলে, ফাঁকা রাস্তায় এর প্রয়োজনই নেই৷ ভুল জায়গায় বসানো আছে৷ শুধু টাকা আদায় করার ফন্দি৷ কিন্তু বেপরোয়া চালকদের ভয় দেখানোই এমন রাডারের কাজ৷
পরিবহণ বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায়ই তাতে কাজ হয় বটে৷ কিন্তু এতে নতুন সমস্যা দেখা দেয়৷ টোমাস বুখহাইট বলেন, ‘‘অনেক চালক রাডার ক্যামেরার সামনে আচমকা ব্রেক করেন, কখনো গাড়ি থামিয়ে দেন৷ ফলে শুধু নিজেরা নয়, অন্য চালকদেরও বিপদে ফেলেন৷’’
ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়৷ ব্যস্ততার সময়ে আচমকা ব্রেক করলে দ্রুত যানজট সৃষ্টি হয়৷ হানোফার শহরের কাছে একটি রাস্তায় একেবারে নতুন এক ধরনের স্পিড ক্যামেরা সিস্টেম পরীক্ষা করা হচ্ছে৷ তার আওতায় কোনো একটি স্থানে ক্যামেরার বদলে একটি বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে গাড়ির গতি মাপা হবে৷ সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গেছে৷ টোমাস বুখহাইট বলেন, ‘‘এই পথে শুধু ২০১১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ৩২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে তিনজন নিহত, চারজন গুরুতরভাবে আহত ও সাতজন সামান্য আহত হয়েছেন৷’’
জার্মানির গর্ব ‘অটোবান’
জার্মানি হলো দুনিয়ার একমাত্র দেশ, যেখানে মোটরওয়েতে কোনো স্পিড লিমিট নেই - যদি না আলাদা কোনো নির্দেশনা থাকে৷
ছবি: DW/Maksim Nelioubin
নাম ‘অটোবান’
অটোবানে শুধু গাড়ি চলতে পারে৷ অটোবানে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটারের নীচে গাড়ি চালানোর নিয়ম নেই (যদি না নির্দেশ দেওয়া থাকে)৷ অটোবানে সাইকেল, মোপেড বা ট্রাক্টর
চালানো নিষেধ৷ এবং স্বভাবতই অটোবানে কোনো ট্রাফিক লাইট থাকে না৷
ছবি: picture-alliance/dpa
প্রথম অটোবান
কোলন আর বন শহরের মধ্যে ‘এ ৫৫৫’ অটোবানটি তৈরির কাজ শুরু হয় ১৯২৯ সালে৷ কোলনের মেয়র কনরাড আডেনাউয়ার তা উদ্বোধন করেন ১৯৩২ সালে৷ ১৯৩৩ সালে হিটলার ক্ষমতায় এসে দাবি করেন, অটোবান তৈরির পরিকল্পনা তাঁর মাথাতেই প্রথম এসেছিল৷
ছবি: DW/M. Nelioubin
কোনো গতিসীমা নেই
জার্মানি বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানকার মোটরওয়ের একটা বড় অংশে কোনো গতিসীমা নেই৷ তবে সাধারণভাবে ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়৷ অটোবান মেরামতি, অটোবানে ঢোকা কিংবা বেরনোর রাস্তা, দুর্ঘটনা ঘটার বর্ধিত আশঙ্কা ইত্যাদি কারণে অবশ্য কিছুক্ষেত্রে গতিসীমা নির্ধারিতও থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Breloer
১৩,০০০ কিলোমিটার অটোবান
জার্মানির সব অটোবান জোড়া দিলে ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান ডিয়েগো থেকে জার্মানির হামবুর্গ অবধি রাস্তা তৈরি হয়ে যাবে৷ জার্মানিতে ‘এ ৭’ অর্থাৎ সাত নম্বর অটোবানই সবচেয়ে দীর্ঘ, মোট ৯৬৩ কিলোমিটার৷
ছবি: Imago/J. Huebner
নামের আগে ‘এ’
‘এ’ হলো অটোবান কথাটির আদ্যক্ষর৷ তার সঙ্গে যুক্ত হয় একটি সংখ্যা, এই দু’য়ে মিলে অটোবানের নাম, যেমন ‘এ ৮’৷ আন্তঃ-জার্মানি গুরুত্বপূর্ণ অটোবানগুলির নম্বর ১ থেকে ৯-এর মধ্যে হয়; আঞ্চলিক অটোবানগুলি দুই সংখ্যার, যেমন বার্লিন আর হামবুর্গের মধ্যে ‘এ ২৪’৷ আরো ছোট অটোবানগুলি তিন সংখ্যারও হতে পারে৷ উত্তর-দক্ষিণ অটোবানগুলি সাধারণত বেজোড় আর পশ্চিম-পুবেরগুলি জোড় সংখ্যার হয়ে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Strauß
মোটরওয়ে, না রানওয়ে?
পরিভাষায় বলে হাইওয়ে স্ট্রিপ, অর্থাৎ দূরপাল্লার রাস্তার এমন একটা অংশ, যেখানে ছোটখাট বিমান অবতরণ করতে পারে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অটোবানকে এভাবে কাজে লাগানো হয়েছিল; ঠাণ্ডা লড়াইয়ের আমলে উভয় জার্মানিতেই এ ধরনের অটোবান ল্যান্ডিং স্ট্রিপ প্রস্তুত করা হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Karmann
যানচলাচল বাড়া মানেই যানজট
জার্মান অটোমোবাইল ক্লাব এডিএসি’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫ সালে জার্মানির অটোবানগুলিতে ৫,৬৮,০০০ যানজট হয়, যার মোট দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ১১ লাখ কিলোমিটার৷ জ্যামে আটকা পড়ে মানুষজনের ৩,৪১,০০০ ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Friederichs
অটোবানে গাড়ি দুর্ঘটনা মানে...
...একাধিক গাড়ির পর পর এসে ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা৷ এ ধরনের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে ১৯৯০ সালের অক্টোবর মাসে, যখন ঘন কুয়াশার মধ্যে ১৭০টি গাড়ির ‘পাইল-আপ’ হয়: প্রাণ হারান দশজন, আহত হন ১২৩ জন৷ ২০০৯ সালেও ২৫৯টি গাড়ির এভাবে একসঙ্গে ধাক্কা লাগে, কিন্তু আশ্চর্য, সেবার কেউ প্রাণে মারা যাননি৷
ছবি: picture alliance/dpa/S. Iwersen
টোল ট্যাক্স
২০০৫ সাল থেকে জার্মানিতে ভারী লরি ও ট্রাকের জন্য ‘টোল’ আদায় করা শুরু হয়েছে৷ ইউরোপের নানান দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক ট্রাক জার্মানির অটোবান হয়ে ট্রানজিট করে, যার ফলে জার্মান অটোবানের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বাড়ে৷ সেটা উশুল করার জন্য ‘টোল’ বসানোর সিদ্ধান্ত নেন জার্মান সরকার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অটোবানের সুবিধা
মুখ্য চ্যানেলগুলোর পাশে বিপদে-আপদে গাড়ি দাঁড় করানোর জায়গা থাকে৷ কয়েক কিলোমিটার পর পর থাকে এমার্জেন্সি টেলিফোন৷ প্রত্যেক ২০ থেকে ৪৫ মিনিট ড্রাইভের পর পাওয়া যায় (অটোবানের লাগোয়া) একটি পেট্রোল পাম্প, যেখানে টয়লেট, মোটেল ও রেস্টুরেন্টেরও ব্যবস্থা থাকে৷
ছবি: DW/Maksim Nelioubin
10 ছবি1 | 10
‘সেকশন কনট্রোল' নামের এই রাডার ব্যবস্থা রাস্তার এই অংশে আরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ মোট ২ দশমিক ২ কিলোমিটার জুড়ে গাড়ির গতি মাপা হচ্ছে৷
গোটা সিস্টেম এক বিশেষ প্রক্রিয়া অনুযায়ী কাজ করে৷ শুরুর অংশে প্রত্যেক গাড়িকে নথিভুক্ত করা হয় এবং পেছন থেকে তার ছবি তোলা হয়৷ স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা গাড়ির নম্বরপ্লেট ও মডেলের মতো বৈশিষ্ট্য চিনে নেয়৷ সেই তথ্য এনক্রিপ্টেড অবস্থায় ধারণ করা হয়৷ দ্বিতীয় পয়েন্টে আবার নতুন করে গাড়ি নথিভুক্ত হয় এবং তার গড় গতি পরিমাপ করা হয়৷ গতি খুব বেশি হলে সামনে থেকে চালক ও গাড়ির ছবি তোলা হয়৷ সেই তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে যায়৷ তারপর জরিমানার চিঠি পাঠানো হয়৷
এই ‘সেকশন কনট্রোল’ রাডার ব্যবস্থার ফলে চালকরা অনেকটা পথ জুড়ে সাবধানে গাড়ি চালাবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷
সমালোচকরা অবশ্য বলছেন, যে এক্ষেত্রে সব গাড়ির তথ্য রেকর্ড করা হচ্ছে – অর্থাৎ বিনা কারণে সবাইকেই ঢালাওভাবে সন্দেহের পাত্র করা হচ্ছে৷ এর ফলে কি আমরা সার্বিক নজরদারির দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে চলছি? পরিবহণ নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ টোমাস বুখহাইট বলেন, ‘‘কোনো গাড়ি গতি সংক্রান্ত নিয়ম না ভাঙলে সিস্টেমে রাখা তথ্য অবিলম্বে মুছে ফেলা হয়৷’’
জার্মানরা আজও যে সব গাড়ি নিয়ে পাগল...
এই সব মডেলের গাড়ি দেখে গাড়ি প্রেমিকদের চোখে আজও জল আসে৷ ফল্কসভাগেন থেকে বিএমডাব্লিউ, ওপেল থেকে মার্সিডিজ বেঞ্জ অবধি জার্মান গাড়ি নির্মাতারা নানা ‘কাল্ট মডেল’ তৈরি করেছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Kneffel
ফল্কসভাগেন বিটল (১৯৩৮)
এক কথায় ‘ওল্ড ফেইথফুল’৷ সর্বসাকুল্যে দু’কোটি দশ লাখের বেশি বিটল তৈরি হয়েছে৷ ফল্কসভাগেন বিটল সম্ভবত বিশ্বের প্রখ্যাততম মোটরগাড়ি৷ ১৯৩৮ থেকে ২০০৩ সাল অবধি বিটল-এর ডিজাইন বিশেষ বদলায়নি৷ ‘হার্বি’ ফিল্মটার কথা মনে করুন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ফল্কসভাগেন টি-ওয়ান (১৯৫০)
...বলতে বোঝায় ফল্কসভাগেন ক্যাম্পার ভ্যান, যা হিপি আন্দোলনের সময় খুব জনপ্রিয় হয়েছিল৷ জার্মানরা এর নাম দিয়েছিলেন ‘বুলি’৷ সে-যাবৎ এক কোটির বেশি ফল্কসভাগেন বাস বিক্রি হয়েছে, যার মধ্যে টি-ওয়ান মডেলের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৮ লাখ৷
ছবি: DW/M. Reitz
মেসারস্মিট কেবিন স্কুটার (১৯৫৩)
মেসারস্মিট যে আদতে এয়ারোপ্লেন তৈরি করত, তিন চাকার এই এয়ায়োডাইনামিক গাড়িটির চেহারা দেখলেই তা বোঝা যায়৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিমান তৈরি বন্ধ হয়ে যায়, কাজেই মেসারস্মিট কিছুদিন ইঞ্জিনিয়ার ফ্রিটৎস ফেন্ড-এর সঙ্গে ‘ফ্লিটৎসার’ গাড়ির মডেলটি নিয়ে কাজ করে৷ তবে ১৯৫৬ সালের মধ্যেই মেসারস্মিট আবার বিমান উৎপাদনে ফেরে৷
ছবি: picture alliance/dpa/H. Galuschka
মার্সিডিজ ৩০০ এসএল (১৯৫৪)
গাড়িটার ডাকনাম হয়েছিল ‘গালউইং’ বা ‘গাঙচিলের পাখা’, কারণ দরজাগুলো ঠিক সেভাবেই ওপরের দিকে খুলত৷ ৩০০ এসএল সিলভার অ্যারো রেসিং কার-গুলো থেকেই মার্সিডিজ বেঞ্জ আবার মোটর রেসিং-এ ফেরে৷ লে মান্সের ২৪ ঘণ্টার মোটর দৌড় আর ক্যারেরা প্যানঅ্যামেরিকানা রেসিং ইভেন্টে জেতার পর ৩০০ এসএল গাড়ির একটি রাস্তায় চলা ও চালানোর মতো মডেল বার করা হয়৷
ছবি: Daimler AG
বিএমডাব্লিউ ইসেটা (১৯৫৫)
১৯৫৫ থেকে ১৯৬২ সাল অবধি ভালোই রোজগার করেছে বিএমডাব্লিউ এই ‘বাবল কার’ বা ‘বুদবুদ গাড়ি’-টি তৈরি করে৷ সস্তার কিন্তু কাজের এই মিনিগাড়িটিতে একটি মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন লাগানো ছিল৷ খুলতে হতো সামনে, ঠিক একটা ফ্রিজিডেয়ারের মতো৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Kneffel
পোর্শে নাইন-ইলেভেন (১৯৬৩)
ভাবলেই আশ্চর্য লাগে, পোর্শে ৯১১ স্পোর্টিং মডেলটি চলে আসছে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে! মোটরগাড়ির ইতিহাসে খুব কম মডেলই এতদিন ধরে চলে৷ তার উঁচু করা হেডলাইট আর পিছনদিকে নীচু বুট দেখলেই নাইন ইলেভেনকে চেনা যায়৷
ছবি: picture-alliance//HIP
মার্সিডিজ বেঞ্জ ৬০০ (১৯৬৪)
টেলিফোন, এয়ার কন্ডিশনিং আর ফ্রিজ লাগানো এই জার্মান লাক্সারি সেডানটি সত্তর আর আশির দশকে পোপ থেকে শুরু করে জন লেনন অবধি সেলিব্রিটিদের খুব প্রিয় ছিল৷ এমনকি ১৯৫৫ সালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ যখন রাষ্ট্রীয় সফরে জার্মানিতে আসেন, তখন জার্মান সরকার মাননীয় অতিথির জন্য একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ ৬০০ ভাড়া করেছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ট্রাবান্ট ৬০১ (১৯৬৪)
ফল্কসভাগেন বিটল পশ্চিম জার্মানিতে যা ছিল, পূর্ব জার্মানিতে ট্রাবান্ট ৬০১ ছিল ঠিক তাই৷ প্লাস্টিকের বডি আর টু-স্ট্রোক ইঞ্জিন সংযুক্ত এই ‘ট্রাবি’ ছিল এক হিসেবে পূর্ব জার্মানির প্রতীক৷ আজও প্রায় ৩৩,০০০ ‘ট্রাবি’ জার্মানির পথেঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছে৷
ছবি: Imago/Sven Simon
ভার্টবুর্গ ৩৫৩ (১৯৬৬)
আইসেনাখ শহরের কাছে ভার্টবুর্গ দুর্গ, তারই নামে নাম রাখা হয়েছিল পূর্ব জার্মানির এই দ্বিতীয় আইকনিক গাড়িটির৷ তৈরি হতো প্রধানত রপ্তানির জন্য, যেমন হাঙ্গেরি অথবা ব্রিটেনে৷ তবে পশ্চিম জার্মানিতে ভার্টবুর্গ গাড়ির বিশেষ চাহিদা ছিল না৷
ছবি: picture-alliance/ZB/J. Wolf
ওপেল মান্টা (১৯৭০)
সৃষ্টি হয়েছিল মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য একটি স্পোর্টস মডেল হিসেবে – পরে সেটাই জার্মানির ‘ইয়ং ম্যান’-দের কাছে অভীপ্স বস্তু হয়ে দাঁড়ায়৷ মান্টা চালকদের নিয়ে জার্মানিতে অসংখ্য রসিকতা আছে: বিশেষ করে মান্টা চালকদের বুদ্ধি – অথবা তার অভাব নিয়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ফল্কসভাগেন গল্ফ (১৯৭৪)
১৯৭৪ সালে ফল্কসভাগেন কোম্পানি তাদের প্রথম গল্ফ মডেল বার করে – সুবিখ্যাত বিটল গাড়ির উত্তরসূরি হিসেবে৷ কমপ্যাক্ট হলেও, গল্ফ ছিল বেশ ‘স্পোর্টি’ আর তেলও খেতো কম – যা সত্তরের দশকের ‘অয়েল ক্রাইসিসে’ খুবই কাজে লেগেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
11 ছবি1 | 11
জার্মান অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশনও এই ব্যবস্থা সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করেছে৷ সংগঠনের প্রতিনিধি ‘সেকশন কনট্রোল’ রাডার ব্যবস্থা চালু করার বিষয়ে সন্দিহান৷ সংগঠনের প্রতিনিধি ক্রিস্টিনে রেটিশ বলেন, ‘‘এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগের সময় তথ্য সংরক্ষণ বিধি সত্যি কতটা মেনে চলা হচ্ছে, তার প্রমাণ চাই৷ অর্থাৎ সব গাড়ি শুরুতেই নথিভূক্ত করা হলে নিয়ম অনুযায়ী পরে সেই তথ্য নির্ভরযোগ্যভাবে মুছে ফেলা হচ্ছে কিনা, তা দেখতে হবে৷’’
কারণ একবার তথ্য ধারণ করলে তা নজরদারির অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা সম্ভব৷ জার্মানির কয়েকটি প্রতিবেশী দেশে অবশ্য সফলভাবেই এই ব্যবস্থা কাজে লাগানো হচ্ছে৷
নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় এই সিস্টেম প্রয়োগ করে অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ড, ইটালি, নেদারল্যান্ডস ও ব্রিটেনে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমে গেছে৷ জার্মানি ও পোল্যান্ডও তাই এই ব্যবস্থা চালু করতে চায়৷ কিন্তু সংশয় থেকেই যাচ্ছে৷ ক্রিস্টিনে রেটিশ বলেন, ‘‘অন্যান্য দেশের সাফল্য তুলে ধরার সময় আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, কারণ তুলনামূলক বিশ্লেষণের অভাব রয়েছে৷ অর্থাৎ অনেক কম মূল্যের সাধারণ রাডার ব্যবস্থা প্রয়োগ করেও একই সাফল্য অর্জন করা যেত কিনা, তা জানার উপায় নেই৷’’
জার্মানির উত্তরে এই প্রকল্প সফল হলে সম্ভবত অন্যান্য অঞ্চলেও এই সিস্টেম গড়ে তোলা হবে৷
নাজিল নুক্রাশ/এসবি
পুরনো মার্কিন গাড়ি তো চেনেন, পুরনো রুশি গাড়ি চেনেন কি?
সোভিয়েত আমলের সব পুরনো রুশি গাড়ি দেখার ও চেনার একটা ভালো সুযোগ পাওয়া যায় জুলাই মাসে মস্কোর ওল্ডটাইমার ব়্যালিতে৷
ছবি: C. Braemer
চাইকা
দেখলে মনে হবে যেন পুরনো মার্কিন গাড়ি! সোভিয়েত ইউনিয়নে ষাটের দশকে এই চাইকা ছিল যাকে বলে কিনা চরম বিলাসিতা৷ কমিউনিস্ট পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি নিকিতা ক্রুশ্চেভের প্রিয় গাড়ি ছিল এই চাইকা; পার্টির হোমরা-চোমরারা সবাই এই গাড়ি চড়তেন৷
ছবি: C. Braemer
লাডা শিগুলি
প্রখ্যাত ভল্গা অটোমোবাইল কারখানার এই প্রথম মডেলটি তৈরি হয়েছিল ইটালির ফিয়াট ১২৪-এর অনুকরণে৷ গাড়ি বলতে সোভিয়েত ইউনিয়নের খেটে খাওয়া মানুষ এই লাডাই বুঝতেন৷
ছবি: C. Braemer
‘গাজিক’
আসল নাম পিটন গাজ-এ; লোকে ভালোবেসে গাজিক বলত৷ সোভিয়েত ইউনিয়নে এই গাড়িটিই প্রথম অ্যাসেম্বলি লাইনে ‘মাস প্রোডাকশান’ পদ্ধতিতে – অর্থাৎ কারখানায় একসঙ্গে অনেকগুলো করে তৈরি হয়৷ দেখেই বুঝতে পারছেন, গাজিক হলো যুক্তরাষ্ট্রের কিংবদন্তি স্বরূপ ফোর্ড টি-র সোভিয়েত যমজ৷
ছবি: C. Braemer
পোবেদা
পোবেদা নামটির মানে হলো বিজয় – এক্ষেত্রে বিজয় বলতে বোঝাচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের জয়৷ যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৪৬ সাল থেকে তৈরি হচ্ছে সে আমলের গোর্কি ও হালের নিজনি নভগরোদ শহরে৷
ছবি: C. Braemer
মস্কভিচ
মস্কভিচ গাড়িটি নাকি জার্মানির ওপেল কাডেট-এর অনুকরণে তৈরি হয়েছিল৷ সোভিয়েত ইউনিয়নে যতো মস্কভিচ গাড়ি তৈরি হতো, তার ৪০ শতাংশ রপ্তানি করা হতো৷ সেই ৪০ শতাংশের অর্ধেক আবার যেতো পশ্চিমে, অর্থাৎ লৌহ যবনিকার অপর পারে৷
ছবি: C. Braemer
ভল্গা
ভল্গা গাড়িটির উৎপাদন শুরু হয় ১৯৫৭ সালে – লোকমুখে এর নাম ছিল ‘পুবের মার্সিডিজ’৷ ইয়ুরি গাগারিনের মতো নভশ্চর আর সরকারি আমলারা এই গাড়ি চড়তেন৷ ১৯৬১ সালে প্রথম মানুষ হিসেবে গাগারিন যখন মহাকাশযাত্রা করেন, তখন সরকারের তরফ থেকে তাঁকে একটি ভল্গা গাড়ি উপহার দেওয়া হয়েছিল৷ গাড়ির ভেতরটা ছিল আকাশের মতো নীল...
ছবি: C. Braemer
জাপোরোশ বা জাপো
পুরো নাম জাপোরোশেজ ৯৬৫ – সস্তার গাড়ি বলে বাজারে নাম খারাপ ছিল৷ কারখানাটি আজ দক্ষিণ ইউক্রেনে৷ ১৯৬০ থেকে ১৯৯৪ সাল অবধি এই ‘জাপোরোশ’ বা ‘জাপো’ গাড়ি তৈরি হয়৷ ১৯৬৭ সাল থেকে প্রচুর জাপো গাড়ি রপ্তানি হয়েছে সাবেক পূর্ব জার্মানিতে৷