পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের হাতে ছাত্রীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়৷ এ নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে, শাস্তিও পাচ্ছেন শিক্ষকরা৷ এবার কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের ব্যাপারেও একটি নীতিমালার দাবি উঠেছে৷
বিজ্ঞাপন
কর্মক্ষেত্রে নারীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তেমন শোনা যায় না৷ অথচ প্রায়শই কর্মক্ষেত্রে নারীরা এমন পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন৷ চাকরি যাওয়ার ভয়ে এ নিয়ে অভিযোগ করতেও সাহস করেন না অনেক নারী৷ অন্যদিকে কেউ প্রতিবাদ করলে তাঁকে চাকরিচ্যূত করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে৷ তবে গার্মেন্টসে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন শ্রমিক নেত্রীরা৷ তাঁদের দাবি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো গার্মেন্টসেও যৌন নির্যাতন বিরোধী নীতিমালা করতে হবে৷ দোষীদের শাস্তি দিতে হবে৷
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক হিসেবে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে ২৯ জন নারী কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন৷ এই সংখ্যা ২০১২ সালে ২৫ জন, ২০১১ সালে ২৮৭ জন, ২০১০ সালে ৩৭ জন৷ এছাড়া ২০০২ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত, অর্থাৎ আট বছরে এক হাজার ১৩৭ জন৷ তবে মহিলা পরিষদের এই হিসাব শুধুমাত্র পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে৷ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কর্মক্ষেত্রে নারীরা এই ধরনের পরিস্থিতির শিকার হলে প্রকাশই করেন না৷ ফলে পত্রিকায় সেভাবে রিপোর্ট প্রকাশিত হয় না৷
তথ্য কমিশনের সাবেক সদস্য ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপিড়ন বিরোধী নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির সদস্য ড. সাদেকা হালিম ডয়চে ভেলেকে বলেন, শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সব ধরনের প্রতিষ্ঠানেই নারীরা যৌন নিপিড়নের শিকার হন৷ উচ্চ আদালতের আদেশের পরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এই নীতিমালা প্রণয়নে খুবই অনাগ্রহী৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তেমন কোনো উদ্যোই নিচ্ছে না৷
অ্যাসিড সন্ত্রাস!
একটা সময় বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রায়ই আসতো নারীর ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপের খবর৷ এমন বর্বরোচিত হামলা এখনও হয় কিছু দেশে৷ কয়েকটি দেশ ঘুরে জার্মান ফটোগ্রাফার অ্যান-ক্রিস্টিন ভোর্ল-এর তোলা ছবি নিয়ে আজকের ছবিঘর৷
ছবি: DW/M. Griebeler
বাংলাদেশের ফরিদা
ফরিদার স্বামী ছিলেন ড্রাগ এবং জুয়ায় আসক্ত৷ ঋণের দায়ে একসময় বাড়িটাও বিক্রি করে দেয় নেশাগ্রস্ত লোকটি৷ রেগেমেগে ফরিদা বলেছিলেন, এমন স্বামীর সঙ্গে আর ঘর করবেন না৷ সেই রাতেই হলো সর্বনাশ৷ ঘুমন্ত ফরিদার ওপর অ্যাসিড ঢেলে দরজা বন্ধ করে দিল পাষণ্ড স্বামী৷ যন্ত্রণায় চিৎকার করছিলেন ফরিদা৷ প্রতিবেশীরা এসে দরজা ভেঙে উদ্ধার করে তাঁকে৷
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
মায়ের স্নেহে, বোনের আদরে...
অ্যাসিডে ঝলসে যাওয়ার সময় ফরিদা ছিলেন ২৪ বছরের তরুণী৷ ১৭টি অস্ত্রোপচারের পর এখন কিছুটা সুস্থ৷ তবে সারা গায়ে রয়েছে দগদগে ঘায়ের চিহ্ন৷ পুড়ে যাওয়া জায়গাগুলোর ত্বক মসৃণ রাখতে প্রতিদিন মালিশ করে দেন মা৷ নিজের কোনো বাড়ি নেই বলে মায়ের সাথেই বোনের বাড়িতে থাকেন ফরিদা৷
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
উগান্ডার ফ্লাভিয়া
ফ্লাভিয়ার ওপর এক আগন্তুক অ্যাসিড ছুড়ে মেরেছিল ৫ বছর আগে৷ আজও ফ্লাভিয়া জানেন না, কে, কেন তাঁর ওপর হামলা চালালো৷ বিকৃত চেহারা নিয়ে অনেকদিন ঘরেই ছিলেন৷ বাইরে যেতেন না৷ এক সময় ফ্লাভিয়ার মনে হলো, ‘‘এভাবে ঘরের কোণে পড়ে থাকার মানে হয় না৷ জীবন এগিয়ে চলে৷ আমাকেও বেরোতে হবে৷’’
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
আনন্দময় নতুন জীবন
এখন প্রতি সপ্তাহে একবার সালসা নাচতে যায় ফ্লাভিয়া৷ আগের সেই রূপ নেই, তাতে কী, বন্ধুদের কাছে তো রূপের চেয়ে গুণের কদর বেশি! ফ্লাভিয়া খুব ভালো নাচ জানেন৷ তাই একবার শুরু করলে বিশ্রামের সুযোগই পান না৷ এভাবে পরিবার আর বন্ধুদের সহায়তায় আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ফ্লাভিয়া৷
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
ভারতের নীহারি
নীহারির বয়স তখন ১৯৷ একরাতে আত্মহত্যা করার জন্য আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন নিজের শরীরে৷ স্বামীর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন থেকে মুক্তি পাওয়া জরুরি মনে হয়েছিল তখন৷
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
নতুন রূপ
যে ঘরটিতে বসে নীহারি তাঁর চুল ঠিক করছেন এটা ছিল বাবা-মায়ের শোবার ঘর৷ এখানেই নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন৷ দেয়াশলাইয়ের বাক্সে একটা কাঠিই ছিল৷ তা দিয়েই আগুন জ্বালিয়েছিলেন শরীরে৷ তবে এখন আর দুর্বল মনের মেয়েটি নেই নীহারি৷ নিজেকে সামলে নিয়ে একটা সংস্থা গড়েছেন৷ সংস্থাটির নাম, ‘পোড়া মেয়েদের রূপ’৷
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
পাকিস্তানের নুসরাত
দু-দুবার অ্যাসিড ছোড়া হয়েছে নুসরাতের ওপর৷ প্রথমে স্বামী আর তারপর দেবর৷ ভাগ্যগুণে বেঁচে আছেন নুসরাত৷ ভালোই আছেন এখন৷
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
আশার আলো
দু-দুবার অ্যাসিড হামলার শিকার হওয়ায় মাথার অনেকটা চুলও হারিয়েছেন নুসরাত৷ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে মাথার ক্ষতস্থান পুরোপুরি সারিয়ে চুল এবং আগের হেয়ারস্টাইল ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি৷
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
বন্ধুদের মাঝে...
নিজের ভাবনা, যন্ত্রণার অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে কিংবা গল্প করতে প্রায়ই অ্যাসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন (এএসএফ)-এ যান নুসরাত৷ সেখানে এমন অনেকেই আসেন যাঁদের জীবনও অ্যাসিডে ঝলসে যেতে বসেছিল৷ এখন সকলেই জানেন, তাঁরা আর একা নন৷
ছবি: Ann-Christine Woehrl/Echo Photo Agency
9 ছবি1 | 9
সাদেকা হালিম বলেন, কর্মক্ষেত্রে নারীদের প্রতিবাদ করতে হবে৷ অনেক সংগঠন আছে যাদের কাছে গেলে তারা এসব নিয়ে আইনি লড়াই করে৷ তাদের কাছে যেতে হবে৷ তিনি নারীদের প্রতিবাদী হওয়ার আহ্বান জানান৷ প্রতিবাদ না করলে কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ হবে না৷ তিনি বলেন, শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, সব ধরনের প্রতিষ্ঠানেই দ্রুত যৌন নিপিড়ন বিরোধী নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে এবং অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলে, তবেই এ প্রবণতা কমবে৷
জানা যায়, সর্বশেষ গত ৭ই সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার গড়বাজাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগে আব্দুর রউফ দুলাল (৪৫) নামে ওই স্কুলের অফিস সহকারীকে আটক করেছে পুলিশ৷ ওই শিক্ষিকাকে দীর্ঘদিন ধরে যৌন নির্যাতন করছিল দুলাল৷ নানাভাবে দুলালের হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করেছেন শিক্ষিকা৷ না পেরে বাধ্য হয়ে তিনি অভিযোগ করেন৷ এর প্রক্ষিতে দুলালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ গার্মেন্টস কারখানায় নারী শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা চালিয়ে গত জুনে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে৷ সেখানে বলা হয়েছে, গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করতে গিয়ে ৩০ ভাগ নারী শ্রমিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন৷ যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকার কারণেই তাদের এই শঙ্কা৷
বাংলাদেশের যৌনকর্মীদের কথা
পৃথিবীর আদিম এক পেশা পতিতাবৃত্তি৷ বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই চালু রয়েছে এই পেশা৷ বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়৷ কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কেমন আছেন বাংলাদেশের যৌনকর্মীরা? এই ছবিঘরে তাঁদের অবস্থা কিছুটা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images
যেভাবে যৌনপল্লীতে আগমন
বাংলাদেশে অনেক ক্ষেত্রে প্রতারণার শিকার হয়ে যৌনপল্লীতে হাজির হন মেয়েরা৷ প্রত্যন্ত অঞ্চলের অতিদরিদ্র্য পরিবারের সদস্যরা কখনো কখনো অর্থের লোভে মেয়েদের বিক্রি করে দেন বলে জানিয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা৷ এছাড়া ভালোবাসার ফাঁদে ফেলে কিংবা বিদেশ যাওয়ার লোভ দেখিয়েও মেয়েদের যৌনপল্লীতে আনা হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/Munir uz ZAMAN
যৌনকর্মীদের জন্য ‘গরুর ট্যাবলেট’
ফরিদপুরের সরকার অনুমোদিত যৌনপল্লীর ছবি এটি৷ অভিযোগ রয়েছে, পল্লীর মালিক নতুন আসা যৌনকর্মীদের স্টেরয়েড ট্যাবলেট সেবনে বাধ্য করেন, যা সাধারণত গরুকে খাওয়ানো হয়৷ গরুর স্বাস্থ্য বাড়াতে ব্যবহার করা এই ট্যাবলেট মানুষের দেহের জন্য ক্ষতিকর৷
ছবি: M.-U.Zaman/AFP/GettyImages
অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ‘ইনজেকশন’
বাংলাদেশের এক যৌনপল্লীর মালিক রোকেয়া জানান, স্টেরয়েড ওষুধ প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ভালো কাজে দেয়৷ কিন্তু অপ্রাপ্তবয়স্ক, বিশেষ করে ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সি মেয়েদের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর নয়৷ অপ্রাপ্তবয়সিদের স্বাস্থ্য ভালো করতে বিশেষ ধরনের ইনজেকশন ব্যবহার করা হয় বলে জানান ৫০ বছর বয়সি রোকেয়া৷
ছবি: picture-alliance/ZUMA Press/M. Candela
অধিকাংশ যৌনকর্মী ‘স্টেরয়েড আসক্ত’
আন্তর্জাতিক উন্নয়নসংস্থা একশনএইড ইউকে এক সমীক্ষার ভিত্তিতে ২০১০ সালে জানায় যে, বাংলাদেশের প্রায় ৯০ শতাংশ যৌনকর্মী ওরাডেক্সন বা অন্যান্য স্টেরয়েড ট্যাবলেট নিয়মিত গ্রহণ করে৷ তাঁদের গড় বয়স ১৫-৩৫ বছর৷ বাংলাদেশে দু’লাখের মতো যৌনকর্মী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/ZUMA Press/M. Candela
সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ
স্টেরয়েড ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে প্রচারণা চালাচ্ছে একশনএইড৷ সংস্থাটির বাংলাদেশ অংশের কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার জানিয়েছেন, ‘‘ওরাডেক্সন গ্রহণ করার পর শুরুতে মেয়েদের শরীরে চর্বির পরিমাণ বাড়তে থাকে৷ কিন্তু এটি নিয়মিত সেবন করলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, চামড়ায় ক্ষতসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়৷’’
ছবি: GMB Akash
এইচআইভি সংক্রমণ
বাংলাদেশে যৌনকর্মীদের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণ বা এইডস রোগ হওয়ার খবর মাঝে মাঝে পত্রিকায় প্রকাশ হয়৷ তবে ঠিক কতজন যৌনকর্মী এইচআইভি আক্রান্ত তার হালনাগাদ কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি৷ অনেকক্ষেত্রে কনডম ব্যবহারে খদ্দেরের অনীহা যৌনকর্মীদের মাঝে যৌনরোগ ছড়াতে সহায়ক হচ্ছে৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: AP
‘অপ্রাপ্তবয়স্ক’ যৌনকর্মী
বাংলাদেশের যৌনপল্লীগুলোতে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের জোর করে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করানোর অভিযোগ রয়েছে৷ আর এই পেশায় যাঁরা একবার প্রবেশ করছেন, তাঁদের জীবনেও নানা ঝুঁকি থাকে৷ পতিতাপল্লীতে হামলার খবর কিন্তু মাঝেমাঝেই শোনা যায়৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: M.-U.Zaman/AFP/GettyImages
শত বছরের পুরনো পল্লী উচ্ছেদ
মাদারিপুরের পতিতাপল্লীটি ছিল শত বছরের পুরনো৷ গত বছর এই পল্লী উচ্ছেদ করেছেন স্থানীয়রা৷ এমনকি পল্লীটি জোরপূর্বক উচ্ছেদ না করার হাইকোর্টের আদেশও এক্ষেত্রে উপেক্ষা করা হয়েছে৷ সেখানে পাঁচশ’র মতো যৌনকর্মী বাস করতেন৷ কিছুদিন আগে টাঙ্গাইলের একটি পতিতাপল্লীও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ এ রকম উচ্ছেদের আতঙ্কে রয়েছেন আরো অনেক যৌনকর্মী৷
ছবি: M.-U.Zaman/AFP/GettyImages
মধ্যপ্রাচ্যে ‘যৌনদাসী’ বাংলাদেশের মেয়েরা!
বাংলাদেশের বেশ কয়েক নারীকে মধ্যপ্রাচ্যে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে৷ তাঁদের পাচার করে সিরিয়ায় নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক বার্তাসংস্থা৷ এ সব নারীকে ফিরিয়ে আনতে সরকারি উদ্যোগের কথা বলা হচ্ছে৷ তবে শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিভিন্ন পতিতালয়েও বাংলাদেশি নারীদের জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে নিয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে৷
ছবি: Getty Images/A. Joyce
9 ছবি1 | 9
ওদিকে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-র সহসভাপতি আনোয়ারুল আজিম ডয়চে ভেলেকে বলেন, কারখানায় যেখানে ৯৮ ভাগ নারী শ্রমিক কাজ করেন, সেখানে তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় কেন ভুগবেন? তাঁদের কোনো অভিযোগ থাকলে তা কর্মকর্তাদের কাছে বলার সুযোগও রয়েছে৷ তাই তাঁর মতে, অনেক গবেষণা হয়, কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন৷
গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু ডয়চে ভেলেকে বলেন, বাংলাদেশে গার্মেন্টসের পরিবেশ আগের থেকে ভালো হয়েছে৷ দীর্ঘ সংগ্রামের কারণে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে৷ তিনি বলেন, আগে তো গার্মেন্টসের কর্মকর্তারা কথায় কথায় নারী কর্মীদের গায়ে হাত তুলতেন৷ এখন অবশ্য তেমন নয়৷
তিনি বলেন, আইনে বলা হয়েছে সকাল ৭টার আগে ও রাত ৮টার পর গার্মেন্টসে নারী কর্মীদের রাখা যাবে না৷ কিন্তু মালিকরা ‘শিপমেন্ট'-এর কথা বলে গভীর রাত পর্যন্ত নারীদের গার্মেন্টসে থাকতে বাধ্য করেন৷ কারখানার ভেতরের পরিবেশ ভালো হলেও আসা-যাওয়ার পথে নারীদের বিভিন্ন ধরনের বখাটেদের উত্পাতে পড়তে হয়৷ পথের মধ্যে তাঁদের কোনো নিরাপত্তা নেই৷ তিনি বলেন, যৌন হয়রানির জন্য অনেক মামলাও তাঁরা লড়েছেন৷
মোশরেফা মিশু বলেন, এখন সময় এসেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো গার্মেন্টসেও যৌন নিপিড়ন বিরোধী নীতিমালা প্রণয়নের৷ খুব শিগগিরই এই ইস্যুতে তাঁরা মাঠে নামবেন বলেও জানান তিনি৷ তাঁর দাবি, গার্মেন্টসে তো এখনো পুরোপুরি নির্যাতন বন্ধ হয়নি৷ এটা না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের এই আন্দোলন চলবে বলেও জানান এই শ্রমিক নেত্রী৷