1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশ

২৪ আগস্ট ২০১২

গাছের কারণেই আমরা প্রকৃতিকে জানছি৷ প্রতিটা গাছের কাণ্ড কাটার পর গুঁড়ির ভেতর যে চক্র আছে তা দেখা যায়৷ আর এসব চক্রের ভেতরে লুকিয়ে আছে পরিবেশ ও জলবায়ুর নানা তথ্য৷ এমনকি দু’হাজার বছরের জলবায়ু সম্পর্কিত তথ্যও৷

Baumringe: Ein Schnitt durch einen Baumstamm Der Schnitt durch einen Baumstamm mit den sichtbaren Jahresringen. Aufgenommen im Labor für Dendrochronologie an der Johannes Gutenberg Universität Mainz (Foto: DW/ Fabian Schmidt) *** August 2012
ছবি: DW/F.Schmidt

প্রতিটা গাছ বেড়ে উঠে, গুঁড়ির চক্রই সেটার প্রমান৷ প্রতি বছর গাছগুলো বাড়ে আর নতুন করে একটি চক্রের সৃষ্টি হয়৷ কারণ প্রতি বছর গাছের ছাল বাড়ছে৷ আর সেই ছালগুলো এইসব চক্রের সৃষ্টি করে৷ চক্রগুলো দেখে বোঝা যায় তাপমাত্রা সেবছর কেমন ছিল৷ আরও জানা যায় বৃষ্টিপাত, দাবানল কিংবা অগ্নুৎপাত সম্পর্কে৷ যেমন তাপমাত্রা বেশি হলে গাছের গুঁড়ির চক্রের সেই অংশটি শক্ত হবে৷ আবার বৃষ্টিপাত হবে যে বছর, সেই বছর গুঁড়িটি বেশি করে বাড়বে৷ তার মানে সে'বার গাছের ছালটি মোটা হবে৷ জার্মানির মাইন্স ইউনিভার্সিটির বৃক্ষ গবেষণা বিভাগের পরিচালক ইয়ান এসপার৷ অনেক দিন ধরেই তিনি গাছের এই বৃদ্ধি এবং তার ওপর পরিবেশের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করছেন৷ তিনি জানান, গুঁড়ির ভেতরের এই চক্রগুলোকে আরও ভালো করে বোঝা যায় যখন সেগুলো পাহাড়ি অঞ্চলে বাড়ে৷

ইয়ান এসপার'এর কথায়, ‘‘উদাহরণ স্বরূপ উঁচু পাহাড়ি এলাকায় খুব ঠান্ডার মধ্যে গাছগুলো বেড়ে ওঠে৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই গাছের গুঁড়ির ভেতরের চক্রগুলো খুব চিকন হয়ে থাকে৷ এবং এটা একটি নয়, পাহাড়ের গায়ে বৃক্ষের সারিগুলোর অনেক গাছের গুঁড়িতেই এই ধরণের প্যাটার্ন দেখা যায়৷''

চলছে গাছ নিয়ে গবেষণাছবি: DW/F.Schmidt

গবেষকরা গাছের গুঁড়ির ভেতরের পার্থক্য নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন ফিনল্যান্ডের উত্তরে, যেটা মূলত পাহাড়ি অঞ্চল এবং যেখানে খুব ঠান্ডা৷ এমনকি শীতকালে একটা গোটা নদীও সেখানে জমে যায়৷ আর সেখানকার সুবিধা হলো, কেবল জীবিত গাছ নয় মৃত গাছ নিয়েও তারা গবেষণা করতে পারছেন, জানালেন ইয়ান এসপার৷ বললেন, ‘‘ফিনল্যান্ডে অনেক লেক আছে৷ কোনো গাছ যখন সেই লেকে পড়ে যায়, তখন সেটা হাজার বছর ধরে সেখানে অবিকৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে পারে৷''

এই কারণে এসপার আর তাঁর সহকারীরা এইখানকার গাছের ওপর গবেষণা করে গত দুই হাজার বছরের জলবায়ু সম্পর্কে তথ্য জানতে পেরেছেন৷ তাঁদের একজন মার্কুস কোখবেক, যিনি মাইন্স ইউনিভার্সিটির গবেষণাগারের প্রধান৷ তিনি একটি গাছের গুঁড়িকে করাত মেশিন দিয়ে কাটলেন৷ যন্ত্রচালিত এই করাতটি দেখতে পেন্সিলের মতো চোখা আর দেড় সেন্টিমিটার চওড়া৷ গুঁড়ির ভেতর থেকে কাটা টুকরোটা তিনি পরীক্ষা করছেন৷ তার আগে টুকরোটি মসৃণ করে নিলেন৷ গুঁড়ির টুকরোটির ভেতরের প্রতিটি চক্র মানে একেকটি করে বছর৷ চক্রগুলো বেশ স্পষ্ট৷ এবার টুকরোটিকে মাইক্রোস্কোপের নীচে রেখে পরীক্ষা করে দেখছেন৷ গুঁড়ির ভেতরের চক্রগুলোর যে বাঁক রয়েছে সেগুলো নানা তথ্য বহন করছে৷ যেমন যে বছরটি বেশি ঠান্ডা ছিল, সেই সময় গাছটি তুলনামূলকভাবে চিকন হয়ে বেড়েছে৷ এভাবে অনেকগুলো গাছের টুকরো তারা পরীক্ষা করে দেখলেন৷

Week 34/12 Environment: Baumringe zeigen globale Abkühlung - MP3-Mono

This browser does not support the audio element.

এ ব্যাপারে মার্কুস কোখবেক বললেন, ‘‘এই যে বাঁকগুলো দেখা যাচ্ছে গুঁড়ির ভেতরে, এর ওপর ভিত্তি করে নানা বিষয় বোঝার চেষ্টা করা হয়৷ চিকন চক্রের ওপর নির্ভর করে এই বাঁকগুলোকে সুপারইম্পোজ করা হয়৷ এই পরীক্ষণ খালি চোখেও যেমন করা যায়, তেমনি গাণিতিকভাবেও করা হয়৷

এইভাবে গবেষকরা গত সাত হাজার বছরের জলবায়ুর একটি ধারণা পেয়েছেন৷ তবে ইয়ান এসপার আপাতত দুই হাজার বছরের ধারাণা দিতে চাচ্ছেন৷ তিনি গুঁড়ির ভেতরে চক্রগুলোর পাশাপাশি কাঠের ঘনত্বও পরীক্ষা করে দেখেছেন৷ তিনি জানান, ‘‘গুঁড়ির চক্রের ঘনত্বের মাধ্যমে কাঠের ঘনত্ব মাপা যায়৷ আর কাঠের ঘনত্ব পরীক্ষা করে বোঝা যায় তাপমাত্রা কেমন ছিল৷ এভাবে দেখা যাচ্ছে যে, খ্রিষ্টের জন্মের পর ২০ শতক পর্যন্ত প্রতি হাজার বছরে তাপমাত্রা ০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে৷ আর তারপর থেকেই গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমণ শুরু হয়েছে৷

গবেষক এসপর জানান, গত কয়েক হাজার বছর ধরে জলবায়ুতে উষ্ণায়নের পর শীতলীকরণ হয়ে আসছে৷ গাছের ওপর গবেষণার মাধ্যমে তারা ভবিষ্যতের জলবায়ু সম্পর্কেও ধারণা দেয়ার চেষ্টা করছেন৷

প্রতিবেদন: ফাবিয়ান শ্মিড্ট / আরআই

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ