গুজরাটে বিধানসভা ভোট এক ও পাঁচ ডিসেম্বর, জিতবে বিজেপি?
৩ নভেম্বর ২০২২বিরোধীরা বারবার প্রশ্ন তুলছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যে ভোটের দিন ঘোষণার ক্ষেত্রে এতটা দেরি করছে কেন কমিশন? হিমাচল প্রদেশে ভোটের দিন ঘোষণা তো অনেক আগে হয়ে গেছে! গুজরাটের ক্ষেত্রে দেরি কেন?
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানিয়েছেন, ঘোষণার আগে অনেক কিছু দেখতে হয়। আবহাওয়া কেমন থাকবে, কবে বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, ফলাফল কবে ঘোষণা করা হবে ইত্যাদি। গুজরাটের বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৩-এর ১৮ ফেব্রুয়ারি। তার অনেকদিন আগেই ভোটের দিন ঘোষণা করা হলো।
ভোটের দিন ঘোষণার আগেই নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয় কংগ্রেস। এর জবাবে রাজীব কুমার বলেন, দল বা প্রার্থী মাঝেমধ্যে নানারকম প্রশ্ন তোলে, কিন্তু ফলাফল বেরোনোর পর দেখা যায়, তারা চুপ করে যায়। ইভিএম নিয়ে অনেক অভিযোগ করা হয়েছে। যারা অভিযোগ করে, তারা যখন জিতে যায়, তখন তারা চুপ করে যায়। এটা নতুন কথা নয়।
নতুন ব্যবস্থা
রাজীব কুমার জানিয়েছেন, এবার বেশ কিছু নতুন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সব জেলায় একটা করে বুথে শুধু যুব কর্মীরাই থাকবেন। কিছু বুথে শুধু নারী কর্মী থাকবেন, কিছু বুথে প্রতিবন্ধী কর্মীরা।
গুজরাটে তিন হাজার ৪৮১ সিদ্দি ভোটদাতা আছেন। তারা আদতে পূর্ব আফ্রিকার মানুষ। তারা চতুর্থ ও সপ্তম শতকে এসেছিলেন। তারাও ভোট দেবে বলে জানিয়েছেন রাজীব কুমার। তিনি বলেছেন, এবার তৃতীয় লিঙ্গের এক হাজার ৪১৭ জন ভোটদাতার নাম তালিকায় তোলা হয়েছে। তারা যাতে ভোট দিতে আসেন, তার জন্য কমিশন তাদের উৎসাহিত করছে।
একটি জায়গায় মাত্র একজন ভোটার আছেন। তিনি সেই জায়গা ছেড়ে অন্যত্র ভোট দিতে চান না। তার ভোট নেয়ার জন্য কমিশন ১৫ জনের টিম পাঠাবে। তাছাড়া সিনিয়র সিটিজেনরা আসতে না পারলে কমিশন তাদের বাড়ি যাবে। ভোটদাতার বয়স ৮০ বছরের বেশি হলে, তাদের পোস্টাল ব্যালট দেয়া হবে। অন্যদের কাছে গিয়ে তাদের ভোট নিয়ে আসবে কমিশন। পুরোটা ভিডিওতে তোলা থাকবে। রাজনৈতিক দলের কর্মীরা কমিশনের টিমের সঙ্গে যেতে পারবেন।
রাজীব কুমার জানিয়েছেন, রেড লাইট এরিয়াতে গিয়েও ভোট নেবে কমিশন।
গুজরাটের রাজনৈতিক পরিস্থিতি
এতদিন ধরে গুজরাটে লড়াইটা ছিল দুইটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে। বিজেপি ও কংগ্রেস। এবার আম আদমি পার্টি গুজরাটে লড়ছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রায় প্রতি সপ্তাহে সেখানে যাচ্ছেন। জনসভা করছেন। তাই লড়াই তাই ত্রিমুখী।
পাঁচ বছর আগে গুজরাটে বিজেপি-কে রীতিমতো বেগ দিয়েছিল কংগ্রেস। তারা ৭৭টি আসনে জিতেছিল। বিজেপি জিতেছিল ৯৯টি আসনে। তবে তখন কংগ্রেসের সঙ্গে হার্দিক প্যাটেল, অল্পেশ ঠাকোর, জিগনেশ মেওয়ানিরা ছিলেন। এবার তারা কেউ নেই। রাহুল গান্ধী ভারত জোড়ো যাত্রা করছেন। তিনি এখনো গুজরাটমুখী হননি।
তবে কংগ্রেস গত ১ নভেম্বর থেকে গুজরাটে পাঁচটি পদযাত্রা শুরু করেছে। রাজ্যের পাঁচ নেতা এই যাত্রার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই পাঁচ যাত্রা রাজ্যের সর্বত্র যাবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পুরোদমে গুজরাটে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। ভোটের দিন ঘোষণার আগে নানারকম ঘোষণা হয়েছে। টাটা ও এয়ারবাসের কারখানার ভিত্তিপ্রস্তরও তিনি স্থাপন করেছেন।
সবমিলিয়ে আবার আরেকটি উত্তেজনাময় ভোট দেখতে চলেছে গুজরাট।
জিএইচ/এসজি (নির্বাচন কমিশনের সাংবাদিক সম্মেলন, পিটিআই)