1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কংগ্রেসের সভাপতি হচ্ছেন রাহুল

রাজীব চক্রবর্তী নতুন দিল্লি
২১ নভেম্বর ২০১৭

১৭ বছর পর কংগ্রেসের শীর্ষ পদে রদবদল!‌ মায়ের হাত থেকে দলের ব্যাটন তুলে নেবেন ছেলে৷ নির্বাচনি নির্ঘণ্ট ঘোষিত হলেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হবেন রাহুল গান্ধী৷ পরবর্তী লড়াইয়ের জন্য মোদী বনাম গান্ধীর যুদ্ধক্ষেত্র প্রস্তুত৷

ছবি: DW/S. Wahhed

ভারতের রাজনীতিতে বড়সড় কোনো অঘটন না ঘটলে আগামী ডিসেম্বরের শুরুতেই ভারতের জাতীয় কংগ্রেস পেতে চলেছে তাদের নতুন সভাপতি রাহুল গান্ধীকে৷ দলের সভাপতি পদে রাহুলের অভিষেকের পথে আর কোনো কাঁটাও চোখে পড়ছে না৷ সোমবার দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকেছিলেন সোনিয়া গান্ধী৷ গত ১৭ বছর ধরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সোনিয়াই দলের সভানেত্রী৷ কিন্তু গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাহুলের রাজনৈতিক গুরুত্ব আরও বাড়াতে চাইছেন সোনিয়া৷ সেই লক্ষ্যেই তাঁকে সভাপতির পদে দ্রুত আনা হচ্ছে৷

রাহুলই যে দলের পরবর্তী সভাপতি, তা এক প্রকার নিশ্চিত৷ ১৯ বছর ধরে কংগ্রেস সভানেত্রী রয়েছেন সোনিয়া৷ এবার দেশের সবচেয়ে পুরোনো রাজনৈতিক দলটি পরিচালনার ভার পাবেন তাঁরই ছেলে৷ উল্লেখ্য, ২০১৩ থেকে দলের সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন রাহুল৷ জাতীয কংগ্রেসের ইতিহাসে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং ইন্দিরা গান্ধীদের পর, ১৯৮৫ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত কংগ্রেসের শীর্ষপদের দায়িত্ব সামলেছেন রাহুলের পিতা প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী৷ এবার সেই আসনে বসবেন রাহুল৷

সোনিয়া গান্ধী জানিয়েছেন, ‘‌‘‌২০১৬ সালের মে মাস থেকে চলতি মাসেও নির্বাচন প্রক্রিয়া চলেছে৷ কর্মসমিতির বৈঠকে প্রস্তাব পাশ হওয়ার পরেই সভাপতি পদে রাহুল গান্ধীকে সভাপতি পদে নির্বাচিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস৷'‌'‌ বেশ কয়েক বছর ধরেই রাহুলের কংগ্রেস সভাপতি হওয়া নিয়ে জল্পনা চলছিল৷ সোনিয়ার বাসভবনে এদিনের বৈঠকে ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, দলের রাজ্যসভার দলনেতা গুলামনবি আজাদ, লোকসভার নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে, আহমেদ প্যাটেল-সহ কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতারা৷ কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুর‌জেওয়ালা বলেন, ‘‘কংগ্রেসের পরবর্তী সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ রাহুল গান্ধীর নাম প্রস্তাব করেছে কর্মসমিতি৷ সেটি পাশও হয়ে গেছে৷ এখন আর কেউ যদি মনোনয়ন দাখিল না করেন, তবে তিনিই দলের পরবর্তী সভাপতি হবেন৷''

‘রাহুল ভারতকে আবার বিশ্বসেরা করতে তোলার ডাক দিচ্ছেন’

This browser does not support the audio element.

কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ তথা ‌পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যর কাছে রাহুল গান্ধী নিয়ে জানতে চাওয়ায় তিনি বললেন, ‘‌‘২০১৯ ‌মোদি বনাম রাহুলের লড়াইয়ের পটভূমি অনেক আগেই তৈরি হয়েছিল৷ রাহুলকে প্রথমে অনেকেই তাচ্ছিল্য করতেন৷ পরবর্তীকালে রাহুল নিজের গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন৷''‌ তিনি আরও বললেন, ‘‘‌কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ ম্যানেজমেন্ট অন্য দলের সঙ্গে মেলে না৷ রাজীব গান্ধী যেদিন প্রথম প্রধানমন্ত্রী হয়ে এলেন সেদিন তিনি তাঁর বক্তৃতায় ‘‌নতুন ভারত'‌ গড়ার কথা বলেছিলেন৷ করেও দেখিয়েছিলেন৷ ভারতের বর্তমান টেলি-‌কমিউনিকেশনের স্বপ্ন অনেক আগেই দেখেছিলেন রাজীব গান্ধী৷ এখন রাহুল ভারতকে আবার বিশ্বসেরা করতে তোলার ডাক দিচ্ছেন৷ বিজ্ঞানে, শিক্ষায় এবং সংস্কৃতিতে ভারতে তুলে ধরতে হলে রাহুলের হাত শক্ত করতে হবে৷''

ভারতে নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি স্বীকৃত রাজনৈতিক দলকে অভ্যন্তরীণ নির্বাচন করাতে হয়৷ কংগ্রেসের ক্ষেত্রে জাতীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের সাংগঠনিক নির্বাচন-প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে৷ সেইমতো বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচন-প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে দল৷ দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি জানিয়েছে, সভাপতি পদের নির্বাচনের জন্য আগামী ১ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে৷ মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৪ ডিসেম্বর৷ ঐ দিন বিকাল ৩টে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে৷ পরের দিন অর্থাৎ ৫ তারিখ সেই মনোনয়নপত্র খতিয়ে দেখা হবে৷ প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের শেষ দিন ১১ ডিসেম্বর৷ প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে ঐ দিনই বিকেল ৪টায়৷ নির্বাচন হবে আগামী ১৬ ডিসেম্বর আর গণনা ও ফলপ্রকাশ হবে ১৯ তারিখ৷

‘নরেন্দ্র মোদীর একমাত্র বিকল্প হতে পারেন রাহুল গান্ধী’

This browser does not support the audio element.

কংগ্রেস সূত্রে বলা হয়েছে, রাহুল ছাড়া এখনও পর্যন্ত অন্য কোনো প্রার্থীর কথা তাদের জানা নেই৷ সম্ভাবনাও নেই বলে তাদের আশা৷ সেক্ষেত্রে ৪ তারিখেই কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে রাহুলের নাম ঘোষণা হতে পারে৷ এতদিন সিদ্ধান্ত পাকা হয়েই ছিল৷ তবু নানা কারণে পিছিয়ে যাচ্ছিল সভাপতি পদে তাঁর অভিষেক৷

পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক পালাবদলের আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত নন্দীগ্রামের কংগ্রেস নেতা মিলন প্রধান রাহুলের সভাপতি হওয়ার আগাম খবরে উচ্ছ্বসিত৷ তাঁর কথায়, ‘‌‘‌গত সাড়ে তিন বছর ধরে দেশের প্রধীনমন্ত্রীর ভুয়ো প্রতিশ্রুতি শুনে শুনে বেকার যুবক-‌যুবতীদের কান নষ্ট হওয়ার জোগাড়৷ নোট বাতিল, জিএসটি ইত্যাদির খপ্পরে পড়ে অত্যন্ত কষ্টে দিন কাটাচ্ছে সাধারণ মানুষ৷ এই পরিস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদীর একমাত্র বিকল্প হতে পারেন রাহুল গান্ধী৷ শুধু বাংলা নয়, সারা ভারতবর্ষের মানুষ অধীর আগ্রহে রাহুলের দিকে তাকিয়ে আছে৷''

প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালে কংগ্রেসের সদস্য হন সোনিয়া গা‌ন্ধী৷ তার পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৯৮ সালের এপ্রিলে সীতারাম কেশরীকে সরিয়ে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি সোনিয়াকে দলের সভানেত্রী মনোনীত করে৷ তারপর থেকে তিনিই দলের সভানেত্রী৷ মাঝে ২০০০ সালে সভাপতি পদের জন্য কংগ্রেসে একবারই নির্বাচন হয়৷ সেই বার সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছিলেন জীতেন্দ্র প্রসাদ৷ কিন্তু জীতেন্দ্র প্রসাদকে হারিয়ে ফের সভাপতি পদে নির্বাচিত হন সোনিয়া৷ তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভানেত্রী পদ সামলাচ্ছেন তিনি৷ বলা বাহুল্য, গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের আগেই কংগ্রেসের সভাপতি পদে রাহুলকে আনা হচ্ছে পরবর্তী লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হওয়ার জন্য৷

রাহুল গান্ধী কি নরেন্দ্র মোদীর বিকল্প হতে পারবেন? জানান আপনার মতামত, নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ